—প্রতীকী চিত্র।
গত শুক্রবার ১০ গ্রাম (২৪ ক্যারাট) খুচরো পাকা সোনা ৭৫,০০০ টাকা পার করে নজির তৈরি করেছিল। সোমবার সেই দাম আরও ৬০০ টাকা বেড়ে হল ৭৫,৭০০ টাকা। পা রাখল নতুন শিখরে। আর রুপো দৌড়চ্ছে আরও দ্রুত গতিতে। এক দিনের মধ্যে খুচরো রুপোর কেজি বাড়ল ২৪৫০ টাকা। পৌঁছে গেল ৯৩,২০০ টাকায়। জিএসটি যোগ করে দু’টি আরও চড়া।
এই অবস্থায় সমস্যায় ক্রেতা-বিক্রেতা। কারণ, যত দিন যাচ্ছে ততই সেগুলি চলে যাচ্ছে সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে। বিক্রেতাদের বক্তব্য, গয়না কেনার খরচ বাড়ায় সিদ্ধান্ত- হীনতার খাদে পড়েছেন ক্রেতা। মাঝে ক’দিনের জন্য দাম কমেছিল। বিয়ে, অন্নপ্রাশনের জন্য অনেকে আগাম গয়না কিনেছিলেন। সেই সময়েও যাঁরা ঝুঁকি নিয়ে বাজারে পা রাখতে পারেননি, তাঁরা পড়েছেন সমস্যায়। আশঙ্কা বাড়ছে গয়নার ব্যবসায়ীদেরও।
সংশ্লিষ্ট মহলের বক্তব্য, বিশ্ব বাজার এবং ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতি এখনও অনিশ্চিত। মূল্যবৃদ্ধি-সুদ সবই চড়ে। এই অবস্থায় ঐতিহাসিক ভাবেই লগ্নিকারীরা সোনার উপরে বাজি রাখেন। ফলে লগ্নিপণ্য হিসেবে তার দাম বাড়ে। এ দিন বিশ্ব বাজারে আউন্সে সোনা ২৪৫০.৪৯ ডলারে পৌঁছে রেকর্ড গড়েছে। আমেরিকায় মূল্যবৃদ্ধি কিছুটা কমে সুদ মাথা নামানোর সম্ভাবনা তৈরি হলেও সোনার দৌড় থামেনি। ২০২৪ এখনও পর্যন্ত বিশ্ব বাজারে তার দর ১৮.৬৫% বেড়েছে। রুপোর দামের গতি আরও বেশি। ছুটছে ১ লক্ষ টাকার দিকে।
জেম অ্যান্ড জুয়েলারি এক্সপোর্ট প্রোমোশন কাউন্সিলের পূর্বাঞ্চলের চেয়ারম্যান পঙ্কজ পারেখ বলছেন, ‘‘এতে সোনার গয়নার রফতানিও মার খাচ্ছে। তার পরিমাণ ইতিমধ্যেই কমেছে। এ বার মূল্যের নিরিখেও বাণিজ্যের অঙ্ক কমতে শুরু করেছে।’’ তাঁর দাবি, সোনার গয়না ধনী ছাড়া কারও পক্ষে কেনা ক্রমশ কঠিন হচ্ছে।
অঙ্কুরহাটি জেম অ্যান্ড জুয়েলারি পার্কের চেয়ারম্যান অশোক বেঙ্গানির মতে, ‘‘বিভিন্ন দেশের শীর্ষ ব্যাঙ্কের সোনার মজুত বাড়ানোও দাম বৃদ্ধির বড় কারণ। ভূ-রাজনৈতিক সঙ্কটের প্রেক্ষিতে দেশের আর্থিক সুরক্ষা বাড়াচ্ছে তারা। এর মধ্যে রয়েছে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কও।’’ ওয়ার্ল্ড গোল্ড কাউন্সিল বলছে, গত তিন বছরে সব থেকে বেশি সোনা কিনেছে চিন, ভারত, তুরস্ক। গত বছর চিন একাই ২৬০ টন কিনেছে। তাঁর দাবি, ‘‘অনেকে রুপোতেও লগ্নি করেন। সোনার দাম বাড়লে রুপো নির্দিষ্ট অনুপাতে চড়ে। তবে বর্তমানে রুপোর চাহিদা বৃদ্ধির আরও কারণ রয়েছে। সেটি হল, বিশ্ব জুড়ে বৈদ্যুতিন পণ্য, ক্ষেপণাস্ত্র এবং মহাকাশ সংক্রান্ত যন্ত্রাংশের বৃদ্ধি। এই সব কিছুতেই রুপো লাগে। এর ফলেও তার চাহিদা বেড়ে দামকে ঠেলে তুলছে।’’