Indian Economy

বাজারে আশা-আশঙ্কা, দাঁড়িপাল্লা কোন দিকে

হাওয়া যদিও পুরোপুরি ইতিবাচক নয়। সপ্তাহের শেষ দিনে লেনদেন বন্ধের পরে কিছু উদ্বেগের খবর এসেছে।

Advertisement

অমিতাভ গুহ সরকার

কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৮:২৯
Share:

—প্রতীকী চিত্র।

সেনসেক্স ও নিফ্‌টি, দুই সূচকই এখন সর্বকালীন উচ্চতায়। টানা ন’দিনে মোট ১৯৪১ পয়েন্ট বেড়ে সেনসেক্সের ৮২,৩৬৬ অঙ্কে। ১২ দিন ধরে নাগাড়ে উঠে ১০৯৭ পয়েন্ট উঠে নিফ্‌টিও ২৫,২৩৬ অঙ্কে পৌঁছেছে। এই তেজি ভাবের মূল কারণ আমেরিকার শীর্ষ ব্যাঙ্ক ফেডারাল রিজ়ার্ভের তরফে সুদ কমানোর স্পষ্ট ইঙ্গিত। তা ছাড়া গত সপ্তাহে ভারতের বাজারে বিদেশি লগ্নিকারী সংস্থাগুলির মোটা পুঁজি ঢালাও সাহায্য করেছে। বৃহস্পতিবার এবং শুক্রবার তারা এ দেশের বাজারে লগ্নি করেছে যথাক্রমে ১৪,৫২৭ কোটি এবং ৫৩১৮ কোটি টাকা।

Advertisement

হাওয়া যদিও পুরোপুরি ইতিবাচক নয়। সপ্তাহের শেষ দিনে লেনদেন বন্ধের পরে কিছু উদ্বেগের খবর এসেছে। সে দিন বিকেলে চলতি অর্থবর্ষের প্রথম ত্রৈমাসিকের (এপ্রিল-জুন) জিডিপি বৃদ্ধির পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছে কেন্দ্র। আগের বছরের ৮.২% থেকে এ বার তা ৬.৭ শতাংশে নেমেছে। অনেকে বলছেন, সেই সময়ে লোকসভা ভোটের কারণে পরিকাঠামো ক্ষেত্রে সরকারের যথেষ্ট খরচ করতে না পারাই এর অন্যতম কারণ। জুলাইয়ে দেশের আটটি গুরুত্বপূর্ণ শিল্প ক্ষেত্রে উৎপাদন বৃদ্ধির হার ৮.৫% থেকে কমে হয়েছে ৬.১%। এই দুই খবরের প্রভাব সূচকের উপরে কতটা পড়ে, তা আজ বোঝা যাবে। এই সপ্তাহে আরও কিছু আর্থিক পরিসংখ্যান জানা যাবে। তার মধ্যে রয়েছে উৎপাদন ও পরিষেবা ক্ষেত্রের পিএমআই সূচক, ব্যাঙ্ক ঋণ ও জমা বৃদ্ধির হার। এই সব খবরকে কেন্দ্র করে এ সপ্তাহ বাজার চঞ্চল থাকবে বলেই মনে করা হচ্ছে।

ইতিবাচক খবরও যে নেই তা নয়। যেমন, দেশজুড়ে স্বাভাবিকের তুলনায় ভাল বর্ষা ও অশোধিত তেল ব্রেন্ট ক্রুডের দাম ৮০ ডলারের নীচে থাকা। তা ছাড়া, রেকর্ড বাজারে শেয়ার ভিত্তিক ফান্ডগুলির ন্যাভও বাড়ছে। মোটা রিটার্নের আশায় লগ্নিকারীদের ভিড় বাড়ছে ফান্ডের জগতে। বাজারে নগদের জোগানও থাকছে ধারাবাহিক ভাবে। ফলে প্রতিকূল খবরও সূচককে বিশেষ টেনে নামাতে পারছে না। গত বৃহস্পতিবার ৪৭তম বার্ষিক সাধারণ সভায় রিলায়্যান্স ইন্ডাস্ট্রিজ় জানিয়েছে, তারা ১:১ অনুপাতে বোনাস দেবে। ২০১৭ সালের পরে এই প্রথম।

Advertisement

বিমার প্রিমিয়ামে চড়া হারে জিএসটি (১৮%) রদের দাবিতে সরব হয়েছে বিরোধী দলগুলি। সঙ্গে সাধারণ মানুষও। এমনকি, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নিতিন গডকড়ীও অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনকে চিঠি লিখেছেন। ৯ সেপ্টেম্বর জিএসটি পরিষদের বৈঠকে এ ব্যাপারে সদর্থক সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে বলে আশা। অগস্টে জিএসটি খাতে ১.৭৫ লক্ষ কোটি টাকা আদায় হয়েছে। পরোক্ষ কর সংগ্রহ ধারাবাহিক ভাবে উপরের দিকে থাকায় কিছু নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের জিএসটি পুনর্বিন্যাস করা হতে পারে বলেও আশা। স্বাস্থ্য বিমার প্রিমিয়াম থেকে জিএসটি তুলে নেওয়া হলে সাধারণ মানুষ, বিশেষত প্রবীণদের বড় সুরাহা হয়। ৫০,০০০ টাকা প্রিমিয়ামে জিএসটি প্রায় ৭৬০০ টাকা। এ দিকে, নতুন কর কাঠামোয় এই প্রিমিয়ামে কোনও কর ছাড় নেই। অথচ প্রিমিয়াম বেড়েই চলেছে। এত চড়া হারে জিএসটি বসায় বহু মানুষ বিমা বন্ধ করে দিতে বাধ্য হচ্ছেন বা বিমাই বিমা করাচ্ছেন না। বিমায় জিএসটি প্রত্যাহার করলে কিংবা ন্যূনতম হারে নামিয়ে আনলে সাধারণ মানুষের সুরাহা তো হবেই, সঙ্গে আরও বহু মানুষকে বিমার আওতায় আনা যাবে।

(মতামত ব্যক্তিগত)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement