—প্রতীকী চিত্র।
গত মাসে দেশের খুচরো বাজারে মূল্যবৃদ্ধির হার নামল ৪.৭৫ শতাংশে। যা এক বছরের মধ্যে সব থেকে কম। কিন্তু তার পরেও উদ্বেগ কমল না। কারণ, খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি রয়ে গেল ৮ শতাংশের উপরেই। সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি, বাজার করতে গিয়ে এখনও নিম্ন এবং মধ্যবিত্তদের মুখের হাসি মিলিয়ে যাচ্ছে। তাঁদের কিছুটা স্বস্তি দেওয়ার কথা ভাবা উচিত নতুন সরকারের।
চড়া গরমে ধাক্কা খাওয়া উৎপাদন এবং সরবরাহ মে মাসে খাদ্যপণ্যের দামকে বাড়িয়ে খুচরো মূল্যবৃদ্ধিকে ঠেলে তুলতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছিল বেশ কয়েকটি সমীক্ষা। সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, সেই দিক থেকে কিছুটা নিশ্চিন্ত তৃতীয় বার ক্ষমতায় আসা মোদী সরকার। কারণ, মূল্যবৃদ্ধি টানা চার মাস ধরে অল্প অল্প করে কমে ৪ শতাংশের অনেক কাছে নেমেছে। খাদ্যপণ্যের ক্ষেত্রেও তা এপ্রিলের ৮.৭০% থেকে সামান্য কমে হয়েছে ৮.৬৯%। তবে সঙ্কট যে যায়নি, সেটা বিলক্ষণ বুঝতে পারছে তারা। কেন্দ্রীয় পরিসংখ্যানই জানিয়েছে, গত মাসে আনাজের দাম বেড়েছে ২৭.৩৩% হারে। ডালের মূল্যবৃদ্ধি ছিল ১৭.১৪%, মাছ-মাংস-ডিমের ক্ষেত্রে ৭ শতাংশের উপরে, ফলের প্রায় ৭%। কমেছে শুধু ভোজ্যতেলের দাম।
আইসিএআইয়ের পূর্বাঞ্চলের প্রাক্তন চেয়ারম্যান অনির্বাণ দত্ত বলেন, ‘‘মধ্যবিত্ত মানুষের স্বস্তি নেই...গৃহস্থের হেঁশেলে এই খরচ সরাসরি ধাক্কা দিচ্ছে।’’ তাঁর বার্তা, জ্বালানির (পেট্রল-ডিজ়েল) দাম না কমানো পর্যন্ত খাদ্যপণ্য নিয়ে চিন্তা বহাল থাকবে। একাংশের বক্তব্য, সম্প্রতি বিশ্ব বাজারে অশোধিত তেলের দর ৮০ ডলারের বেশ খানিকটা নীচে নামায় ফের দেশে তেলের দাম কমানোর দাবি ওঠে সেই কারণেই। যদিও বুধবার তা আবার ৮০ ডলার পেরিয়েছে।
সম্প্রতি ঋণনীতি ঘোষণায় খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কও। ইঙ্গিত দেয়, খুচরো মূল্যবৃদ্ধিকে ৪ শতাংশে না নামিয়ে সুদ কমাবে না। পটনা আইআইটির অর্থনীতির অধ্যাপক রাজেন্দ্র পরামানিকের বক্তব্য, ‘‘ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা যে কোনও মুহূর্তে তেলের দামকে বিপুল বাড়াতে পারে। মূল্যবৃদ্ধি ঘিরে অনিশ্চয়তা রয়েছে বলেই আরবিআই কোনও ঝুঁকি না নিয়ে সুদ অপরিবর্তিত রাখছে। লগ্নি টানার জন্য তা জরুরি জেনেও।’’