— প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
গত জুলাইয়ের পরে অগস্টেও দেশের পাইকারি বাজারে মূল্যবৃদ্ধি মাথা নামাল। মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় পরিসংখ্যানে প্রকাশ, গত মাসে ওই হার ছিল ১.৩১%। যা চার মাসে সব থেকে কম। জ্বালানি এবং বেশ কিছু আনাজের কমে আসা দামই এর কারণ। তবে খুচরো বাজারের মতো পাইকারিও শেষ পর্যন্ত স্বস্তি ফেরায়নি। কারণ, বেশির ভাগ মানুষের রোজকারের খাবারে যেগুলি প্রায় অপরিহার্য, সেই আলু, পেঁয়াজের মূল্যবৃদ্ধি ৬৬%-৭৮% চড়েছে। আর তা-ই খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধিকে ৩.২৬ শতাংশে ঠেলে তুলেছে। চড়েছে চাল, ডাল, ফল ইত্যাদির দামও।
বিশেষজ্ঞের ব্যাখ্যা, এমনিতে পাইকারি দামের প্রভাব সরাসরি খুচরো বাজারের ক্রেতাদের উপরে পড়ে না। কিন্তু দীর্ঘ মেয়াদে প্রভাব এড়ানো অসম্ভব। ফলে আলু-পেঁয়াজের মতো জরুরি এবং পচনশীল খাবারের দাম আয়ত্তে না এলে মানুষ ভুগবেন। টানা দু’মাস খুচরো মূল্যবৃদ্ধি ৪ শতাংশের নীচে থাকায় সুদ কমার আশা তৈরি হয়েছে। তবে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের বার্তা, সেই সিদ্ধান্ত হবে দীর্ঘমেয়াদে দর নামলে। অর্থাৎ, ফের ওই হার মাথাচাড়া দিলে মুশকিল। আলু-পেঁয়াজের দাম বাস্তবে সেই সতর্কবার্তাকেই আরও স্পষ্ট করছে। মূল্যায়ন সংস্থা ইক্রার অর্থনীতিবিদ রাহুল আগরওয়ালেরও সাবধানবাণী, এ মাসে বাড়তি বৃষ্টিতে খরিফ চাষে দেরি হতে পারে। যা দামের পক্ষে স্বস্তিদায়ক নয়।
পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত মাসে আনাজের (-১০.০১%) দাম কমলেও চড়েছে আলু (৭৭.৯৬%), পেঁয়াজ (৬৫.৭৫%), ডাল (১৮.৫৭%), ফল (১৬.৬৯%), ধান (৯.১২%), গম (৭.২৮%) ইত্যাদির মূল্যবৃদ্ধি। আইআইটি পটনার অর্থনীতির অধ্যাপক রাজেন্দ্র পরামানিক বলেন, ‘‘আলু ও পেঁয়াজের ঊর্ধ্বমুখী দাম উদ্বেগে রাখছে। কিছু অঞ্চলে অতিবৃষ্টি শস্যের ফলনে ধাক্কা দিয়ে দামকে আরও বাড়াতে পারে। রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কও সুদ নিয়ে সিদ্ধান্তের সময় এই সব বিষয়ে সতর্ক থাকবে।’’ অর্থনীতিবিদ অজিতাভ রায়চৌধুরীর মতে, ‘‘ভাল বর্ষায় খাদ্যপণ্যের দাম কমেছে। আবার বেশি বৃষ্টিই দাম বাড়াচ্ছে পেঁয়াজের। আলুর দর কিছুটা নির্ভর করে হিমঘর থেকে সময়ে যথেষ্ট পরিমাণে ছাড়ার উপরে। তাতে নজর দিতে হবে।’’