—প্রতীকী চিত্র।
অর্থনীতি যখন ক্রমশ চাঙ্গা হচ্ছে বলে দাবি করছে মোদী সরকার, তখন দেশে ফের বেকারত্বের হার পেরিয়ে গেল ৮ শতাংশের গণ্ডি। উপদেষ্টা সংস্থা সিএমআইই-র তথ্য জানাচ্ছে, জুনে তা হয়েছে ৮.৪৫%। মে মাসে ছিল ৭.৬৮%। তারা বলেছে, মূলত গ্রামাঞ্চলই এর জন্য দায়ী। সেখানে কর্মহীনতার হার পৌঁছে গিয়েছে ৮.৭৩ শতাংশে। যা দু’বছরে সব থেকে বেশি।
তবে শহরাঞ্চলও স্বস্তিতে নেই। সিএমআইই-র হিসাবে শহরে বেকারত্বের হার ৭.৮৭%। তার আগের মাসের সামান্য কম। হালে দেশে বেকারত্ব কিছুটা কমার কারণ হিসেবে বলা হয়েছিল, দীর্ঘ দিন ধরে চাকরি না পেতে পেতে একাংশের কাজ খোঁজার ইচ্ছেটাই কমে যাওয়া।
সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি, আগামী বছর দেশে লোকসভা নির্বাচন। তার আগে বেশ কিছু রাজ্যে বিধানসভা ভোট। ফলে বেকারত্বের কাঁটায় শাসক দলের অস্বস্তি বহাল। বিরোধীরাও এ নিয়ে লাগাতার বিঁধছে তাদের।
তবে কেন্দ্রীয় নেতা-মন্ত্রীরা সরকারের ন’বছর পূর্তি উপলক্ষে বিভিন্ন মঞ্চ থেকে তুলে ধরছেন সাফল্যের তালিকা। যেখানে কোভিডের ধাক্কা কাটিয়ে দেশে আর্থিক কর্মকাণ্ড এবং কাজের বাজারের ঘুরে দাঁড়ানোও রয়েছে। যদিও বেসরকারি পরামর্শদাতা সংস্থাগুলির তথ্য জানাচ্ছে, বেকারত্ব দীর্ঘ দিন ধরেই ৭-৭.৫ শতাংশের আশেপাশে। কারণ, বহু সংস্থা বাড়তি খরচের ঝুঁকি নিতে নারাজ। তাই প্রয়োজন পড়লেও নিয়োগ স্থগিত রেখেছে।
সিএমআইই-র মতে, জুনে গ্রামে কর্মহীনতার ছবি আসলে মরসুমি প্রভাব। এই সময় কাজ কমে। মার্চ-এপ্রিলে রবি শস্য চাষের জন্য কৃষিতে কাজের চাহিদা বাড়ে। ফলে গ্রামাঞ্চলে নিয়োগ হয় বেশি। মে মাসে ফসল তোলা হয়। এর পরে আবার জুলাই থেকে যত দিন না খরিফ চাষ শুরু হয়, তত দিন সেখানে কর্মসংস্থানে ভাটা পড়ে। সেই ছবিই উঠে এসেছে বেকারত্বের এই পরিসংখ্যানে।
সম্প্রতি বিশ্ব ব্যাঙ্কের প্রাক্তন মুখ্য অর্থনীতিবিদ কৌশিক বসু বলেছিলেন, ভারতে বেসরকারি লগ্নি ক্রমাগত কমার লক্ষণ স্পষ্ট। যা আস্থা কমার প্রতিফলন এবং মধ্যে চড়া বেকারত্বের জন্য দায়ী। ফলে সিএমআইই-র এই পরিসংখ্যান ঘিরে ভোটের বাজারে তরজা আরও চড়বে বলেই ধারণা বিশেষজ্ঞ মহলের।