প্রচারে: শুধুই প্রতিশ্রুতি? ভোট ময়দানে প্রধানমন্ত্রী। ছবি: পিটিআই।
অচ্ছে দিন তো দূর অস্ত্, আগামী দিনে চাকরি মিলবে, আয় বাড়বে, আরও বেশি খরচ করা সম্ভব হবে— অর্থনীতির হাল দেখে এই আস্থাও ফিকে হচ্ছে মানুষের মনে। বিরোধীদের অভিযোগ নয়, মোদী সরকারকে অস্বস্তিতে ফেলে এ কথা জানিয়েছে খোদ রিজার্ভ ব্যাঙ্কই।
পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা ভোটকে লোকসভা নির্বাচনের সেমিফাইনাল হিসেবে দেখছেন অনেকে। ঠিক তখনই শীর্ষ ব্যাঙ্কের সমীক্ষায় ফুটে উঠেছে অর্থনীতিতে আমজনতার আস্থা কমার কথা। অর্থ মন্ত্রক যেমন এর জবাব খুঁজতে মাঠে নেমেছে, তেমনই একে হাতিয়ার করে কেন্দ্রকে নিশানা করছে কংগ্রেস ও অন্য বিরোধীরা।
তাৎপর্যপূর্ণ হল, দু’বছর আগে নোটবন্দি ঘোষণার সময়েও অর্থনীতি সম্পর্কে ধারণা অনেক ভাল ছিল। প্রায় অর্ধেক মানুষেরই মত ছিল, গত এক বছরে অর্থনীতির অবস্থা ভাল হয়েছে। বিরোধীদের যুক্তি, এখন সেই আস্থা কমার অর্থ, নোট বাতিলে বাজারে কেনাকাটা কমেছে। তারপরে জিএসটিতেও ব্যবসা মার খেয়েছে।
কংগ্রেস নেতা বীরাপ্পা মইলির দাবি, ‘‘সমীক্ষা থেকেই স্পষ্ট আস্থা ২০১৪ সাল থেকেই কমছে। যা বিজেপির প্রতি সমর্থন কমার ইঙ্গিত। ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে এর প্রতিফলন ঘটবেই।’’ সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরির প্রশ্ন, ‘‘এটাই মোদীর অচ্ছে দিন? আরও বেকারত্ব, আরও দুর্দশা? শুধু বিজ্ঞাপনে আর চিঁড়ে ভিজবে না।’’
অর্থ মন্ত্রক সূত্রের বক্তব্য, রিজার্ভ ব্যাঙ্কের সমীক্ষার সমালোচনা করা শক্ত। কিন্তু কেন্দ্রের তরফেও পাল্টা যুক্তি সাজানো হবে। বলা হবে, আগামী বছরেই ভারত বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম অর্থনীতি হতে চলেছে। সহজে ব্যবসার সুযোগের মাপকাঠিতেও মোদী জমানায় ভারত উঠে এসেছে ৭৭ নম্বরে। চার বছরে ৬৫ ধাপ। ব্যবসার পরিবেশের উন্নতি হলে, লগ্নি বাড়বে। চাকরির সুযোগও বাড়বে।
১৩টি শহরে শীর্ষ ব্যাঙ্কের সমীক্ষা বলছে, প্রায় ৪৫% মানুষ মনে করেন, অর্থনীতির অবস্থা এক বছরে খারাপ হয়েছে। তার থেকেও গুরুত্বপূর্ণ, প্রায় ৩১% মানুষ মনে করেন, আগামী এক বছরে অর্থনীতির অবস্থা খারাপ হবে। নোট বাতিলের সময়েও এমন মনে করা মানুষ ছিলেন ১৮%।
নরেন্দ্র মোদী ক্ষমতায় আসার ঠিক পরেই সমীক্ষায় ৩৬% মানুষের রায় ছিল, কাজের সুযোগ বেড়েছে। এখন তা ৩৪ শতাংশের নীচে। ৪৭% মানুষ মনে করেন, চাকরির বাজার খারাপ হয়েছে। আগে তা ছিল ২৮%।