প্রতীকী ছবি।
আরটিজিএস, এনইএফটি-সহ বিভিন্ন ডিজিটাল লেনদেন পরিষেবা এ বার রাজ্যের সমবায় ব্যাঙ্কগুলিতেও।
পরিকল্পনামাফিক সব কিছু চললে আগামী বছরের শুরু থেকেই সমবায় ব্যাঙ্কগুলি রাজ্যের সর্বত্র ডিজিটাল পরিষেবা দিতে শুরু করবে গ্রাহকদের। এর জন্য প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো তৈরি করতে ন্যাশনাল কোঅপরেটিভ ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশনের (এনসিডিসি) থেকে কয়েকশো কোটি টাকা ঋণ নেওয়া হয়েছে। প্রশাসনের একাংশের দাবি, পরিকল্পনা কার্যকর হলে ভবিষ্যতে রাজ্যের বিভিন্ন প্রকল্পের সুবিধাও সমবায় ব্যাঙ্কগুলির মাধ্যমে গ্রাহকদের দেওয়া সম্ভব হবে।
রাজ্যের বহু গ্রামে ব্যাঙ্কের শাখা নেই। এ নিয়ে স্টেট লেভেল ব্যাঙ্কার্স কমিটির (এসএলবিসি) বিভিন্ন বৈঠকে একাধিক বার সরব হয়েছে রাজ্য সরকার। তাদের বক্তব্য, সব জায়গায় রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের শাখা না থাকায় রাজ্যের বিভিন্ন প্রকল্পের সুবিধা উপভোক্তাদের দিতে কোনও কোনও ক্ষেত্রে সমস্যা হচ্ছে। সে কারণেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছিলেন, রাজ্যের সমবায় ব্যাঙ্কগুলির পরিকাঠামো বাড়িয়ে সেগুলিকে আরও সক্রিয় করতে হবে। এই লক্ষ্যে তৎকালীন মুখ্যসচিব মলয় দে-র নেতৃত্বে একটি কমিটি তৈরি হয়েছিল। তার পরেই সমবায় ব্যাঙ্কের পরিকাঠামো বাড়ানোর কাজ শুরু হয়।
প্রশাসনিক সূত্রের খবর, প্রাইমারি এগ্রিকালচারাল ক্রেডিট সোসাইটিগুলিকে (প্যাক্স) এই ব্যাঙ্কিং পরিষেবা দেওয়ার কাজে লাগানো হবে। প্রাথমিক ভাবে এমন প্রায় দু’হাজার প্যাক্স সমবায় ব্যাঙ্কগুলির শাখা ব্যাঙ্ক হিসাবে কাজ করবে। ভ্রাম্যমান এটিএম পরিষেবা থাকবে এই ব্যবস্থায়। পাশাপাশি কোর-ব্যাঙ্কিং পরিষেবার মাধ্যমে এনইএফটি, আরটিজিএসের সুবিধাও পাবেন গ্রাহকেরা। অর্থাৎ, আর্থিক লেনদেন করা যাবে অনলাইনে। একই ভাবে সরকার চাইলে কোনও উপভোক্তার অ্যাকাউন্টে প্রকল্পের অর্থও পাঠাতে পারবে। প্রশাসনের এক কর্তার কথায়, ‘‘রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের সঙ্গেও সমবায় ব্যাঙ্কের গ্রাহকেরা সমন্বয় রাখতে পারবেন। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্ট থেকে সমবায় ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠানো বা গ্রহণ করা যাবে অনলাইনে। পুরো ব্যবস্থাটি তৈরি করতে এনসিডিসি থেকে ২০০ কোটি টাকা ঋণ নেওয়া হয়েছে।’’ বিধি অনুযায়ী, এই পরিকাঠামো চালুর জন্য কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাঙ্কে পুঁজির ৬০% অর্থ জমা রাখতে হবে।
প্রশাসনের অনেকে জানাচ্ছেন, প্রাথমিক এই ব্যবস্থা সফল হলে আগামী দিনে সারা রাজ্যে সমবায় ব্যাঙ্কের মাধ্যমে ডিজিটাল পরিষেবা ছড়িয়ে দেওয়া হবে। রাজ্যের যে সমস্ত প্রকল্পে সাধারণ মানুষ আর্থিক সুবিধা পেয়ে থাকেন, সেগুলিও রাজ্যের সমবায় ব্যাঙ্কগুলির মাধ্যমে পরিচালনা করা হতে পারে। প্রশাসনিক কর্তাদের একাংশের বক্তব্য, কৃষকদের ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রেও এই পরিকাঠামো অনেক বেশি কার্যকর হবে। সে ক্ষেত্রে যে সব এলাকায় রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের শাখা নেই, সেখানে সাধারণ মানুষের অসুবিধা অনেকটাই দূর করা যাবে।