প্রতীকী ছবি।
বীরভূমের মহম্মদবাজার ব্লকের ডেউচা-পাঁচামি কয়লা ব্লকটিতে কোথায়, কত কয়লা কী অবস্থায় আছে, তার খুঁটিনাটি তথ্যভিত্তিক সমীক্ষা চালাবে সেন্ট্রাল মাইন প্ল্যানিং অ্যান্ড ডিজাইন ইনস্টিটিউট (সিএমপিডিআই)। সূত্রের খবর, খুব শীঘ্রই পশ্চিমবঙ্গ বিদ্যুৎ উন্নয়ন নিগম এই কাজের বরাত দিতে চলেছে তাদের। ওই সমীক্ষা অনুযায়ী সিএমপিডিআই-এর তৈরি করা চূড়ান্ত নকশার ভিত্তিতেই সেখানে কয়লা তোলার কাজ শুরু হবে।
কোনও ব্লকে কয়লা উত্তোলনের কাজ শুরুর আগে চূড়ান্ত সমীক্ষার পাশাপাশি কী উপায়ে কয়লা তোলা উচিত তার পরিকল্পনা ও নকশা তৈরির কাজ করে কোল ইন্ডিয়ার শাখা সংস্থা সিএমপিডিআই। সরকারি সূত্রের খবর, এ বিষয়ে সংস্থাটির দক্ষতার কথা মাথায় রেখেই নিগম তাদের দিয়ে ডেউচা-পাঁচামি ব্লক থেকে কয়লা তোলার চূড়ান্ত রূপরেখা তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। নিগমের এক কর্তা জানান, সিএমপিডিআই সমীক্ষার করে জানাবে মাটির নীচে কোথায় কত কয়লা রয়েছে, সেটি খোলা মুখ খনি হবে না কি অন্য পদ্ধতিতে তা তুলতে হবে ইত্যাদি। তার পরে তৈরি হবে নকশা। যা কেন্দ্রের খনি সংক্রান্ত স্থায়ী কমিটিতে অনুমোদনের জন্য পাঠানো হবে। স্থায়ী কমিটি সমীক্ষা ভিত্তিক রিপোর্ট এবং নকশা খতিয়ে দেখার পরে প্রকল্পে সায় দিলে, তবেই ডেউচায় কয়লা উত্তোলনের কাজে হাত দেওয়া হবে। তবে ডেউচার মানুষের আস্থা অর্জন করেই যে ওই কাজে হাত দেওয়া হবে, সে কথা আগেই স্পষ্ট জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
ডেউচা-কথা
• ডেউচা পাঁচামি থেকে পশ্চিমবঙ্গের কয়লা তোলার আবেদনে সায় দিয়েছে কেন্দ্র। গত সেপ্টেম্বরে খনি বরাদ্দের চূড়ান্ত চিঠি দিয়েছে কয়লা মন্ত্রক।
• ৩৫০০ একর জমি জুড়ে থাকা এই কয়লা ব্লক ভারতে বৃহত্তম।
• ৬৫০-৮৫০ মিটার গভীরে বিপুল কয়লার স্তর।
রাজ্যের দাবি
• ডেউচার কয়লা যাবে বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রগুলিতে।
• আগামী ৫০-৭০ বছর রাজ্যে কয়লার অভাব হবে না।
• কোল ইন্ডিয়ার উপর নির্ভরতাও অনেক কমবে।
• খনি প্রকল্পে লগ্নির অঙ্ক ১০-১২ হাজার কোটি টাকা।
• প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ কর্মসংস্থানের সম্ভাবনা ১ লক্ষ জনের।
ডেউচা-পাঁচামির পাথর শিল্পে নির্ভরশীল লক্ষাধিক মানুষ। ফলে কয়লা খনি হলে সেই শিল্পের কী হবে, তা নিয়ে এলাকার মানুষের মনে সংশয় রয়েছে। ক্ষতিপূরণ, পুর্নবাসন, তাঁদের জীবন-জীবিকারই বা কী হবে, এমন নানা প্রশ্ন দানা বেঁধেছে স্থানীয়দের মধ্যে। তবে সরকারি মহলের বক্তব্য, রাজ্যের বিদ্যুৎ শিল্পের স্বার্থে এই কয়লা খনি প্রকল্পটি যেমন রাজ্যের কাছে জরুরি, তেমনই জরুরি পুর্নবাসন ও ক্ষতিপূরণ নিয়ে মানুষের আস্থা অর্জন। তাই তা নিশ্চিত করে এই প্রকল্পে হাত দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নবান্ন।
নিগম সূত্রে খবর, খনির নকশা অনুমোদিত হলে কয়লা উত্তোলনের সংস্থা বাছাই হবে দরপত্র মারফত।