ফাইল চিত্র।
পশ্চিম বর্ধমানে পা রেখেই রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্পের বিলগ্নিকরণের প্রশ্নে ফের কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সুর চড়ালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজনৈতিক মহলের একাংশের বক্তব্য, এর মাধ্যমে আসলে রাজ্য তথা জেলার রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্প ক্ষেত্রের সঙ্গে যুক্ত শ্রমিক-কর্মীদের পাশে থাকার বার্তাও দিয়েছেন তিনি।
রবিবার সন্ধ্যায় কলকাতা থেকে সড়কপথে দুর্গাপুরে পৌঁছন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা ফেরো স্ক্র্যাপ নিগমের (এফএসএনএল) বিলগ্লিকরণ সংক্রান্ত বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে মমতা বলেন, “কেন্দ্র সব সংস্থাই বিক্রি করে দিচ্ছে। এর বিরুদ্ধে লড়াই করছে আইএনটিটিইউসি। আমি আগেও চিঠি দিয়েছি কেন্দ্রকে। আবার চিঠি দেব।” ঘটনাচক্রে, এফএসএনএল বিলগ্লির জন্য আন্তর্জাতিক দরপত্র (গ্লোবাল টেন্ডার) চেয়েছে কেন্দ্র। তার প্রতিবাদে এপ্রিল থেকে আন্দোলনে নেমেছে বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠন। দেশের বিভিন্ন রাষ্ট্রায়ত্ত ইস্পাত কারখানায় এফএসএনএল-এর ইউনিট রয়েছে। সংস্থায় কর্মী প্রায় ১৩০০ জন। তাঁদের মধ্যে স্থায়ী কর্মী প্রায় ৬০০ জন। দুর্গাপুরের ইউনিটে ৬৪ জন স্থায়ী এবং ৭২ জন ঠিকাকর্মী রয়েছেন।
মমতার শিল্প-সংক্রান্ত এই মন্তব্য সম্পর্কে সেভ এফএসএনএল কমিটির যুগ্ন আহ্বায়ক প্রভাত চট্টোপাধ্যায় বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী সব সময়েই রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্পের বিলগ্নিকরণের বিরুদ্ধে। উনি আসলে জানেন, বিলগ্নির ফলে রোজগার নিয়ে সমস্যা তৈরি হয়।”
পাশাপাশি, রাজনৈতিক মহলের একাংশের দাবি, কোল ইন্ডিয়া, রেল-সহ বহু রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্প ক্ষেত্রে বিলগ্নিকরণের তোড়জোড় করছে কেন্দ্র। তা নিয়ে শ্রমিক-মহলে অসন্তোষও তৈরি হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে মমতার মন্তব্য আদতে তাঁদের পাশে থাকার জন্যই। আইএনটিটিইউসি-র জেলা সভাপতি অভিজিৎ ঘটকও বলেন, “রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্পের সঙ্গে আমাদের জেলা এবং রাজ্যের বহু মানুষের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে রুজি-রুটি জড়িত। তাতেই হাত দিতে চাইছে কেন্দ্র। মুখ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে তারই বিরোধিতা করছি।” যদিও, বিজেপির অন্যতম রাজ্য সম্পাদক লক্ষ্মণ ঘোড়ুই বলেন, “কেন্দ্রের নির্দিষ্ট শিল্প নীতি রয়েছে। রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্পের ভালর জন্য কেন্দ্র সর্বদা তৎপর, সেটা শ্রমিক-কর্মীরা জানেন।”
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।