টিভি-ফ্রিজের দাম কি কমল? গাড়ির বুকিং আগে করলেই ভাল হত! আবার সিগারেটের দাম বাড়ছে?
বাজেট নিয়ে সেই টানটান উত্তেজনার দিন কার্যত শেষ। কারণ প্রতি বছরের এই ‘মহাযজ্ঞে’ জিনিসের দাম বাড়ানো বা কমানোর তেমন ক্ষমতাই কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীর হাতে নেই।
তিনি আয়করের বোঝা বাড়াতে বা কমাতে পারেন। খুব বেশি হলে কিছু পণ্যে আমদানি শুল্ক কমিয়ে/বাড়িয়ে, দাম কমানো/বাড়ানোর রাস্তা তৈরি করতে পারেন। কিন্তু ১ জুলাই জিএসটি চালুর পরে ঢালাও পণ্যের উপরে করের বোঝা বাড়ানো বা কমানোর উপায় আর বাজেটে নেই। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নন, কেন্দ্র ও সব রাজ্যের অর্থমন্ত্রীদের নিয়ে তৈরি জিএসটি পরিষদই এখন সেই সিদ্ধান্ত নেয়। সে দিক থেকে আগামী ১ ফেব্রুয়ারির বাজেটেই এই প্রথম বার সে ভাবে জিনিসের দাম আর বাড়বে না বা কমবেও না।
অর্থ মন্ত্রকের এক কর্তা অবশ্য বলছেন, আমজনতা নিশ্চিন্ত থাকলেও সরকারের চিন্তা বেড়েছে। নতুন অভিন্ন পরোক্ষ কর ব্যবস্থা, জিএসটি চালুর ফলে কর নিয়ে সিদ্ধান্তের সিংহভাগই হাতছাড়া হয়েছে। অথচ জিএসটি বাবদ আয়ের উপরে সরকারকে খরচের জন্য অনেকটাই নির্ভর করতে হচ্ছে।
একই কারণে ছোট হচ্ছে অর্থমন্ত্রীর বাজেট বক্তৃতাও। রীতি অনুযায়ী, বাজেটে প্রথমে কোথায় কত বরাদ্দ করছেন, তার হিসেব দেন অর্থমন্ত্রী। তারপর পেশ করেন আয়ের হিসেব। প্রথম ভাগে আসে আয়কর ও কোম্পানি করের হিসেব। দ্বিতীয় অধ্যায়ে এত দিন উৎপাদন শুল্কের মতো নানা রকম কর বাড়ানো-কমানো হত। এখন থাকবে শুধু আমদানি ও রফতানি শুল্ক। ফলে দ্বিতীয় অধ্যায়টি এ বার হয়ে যাচ্ছে অত্যন্ত সংক্ষিপ্ত।
জিএসটি জমানায় অর্থমন্ত্রীর আয় বাড়ানোর নতুন রাস্তা তৈরির সুযোগও বেশ কিছুটা কমেছে। আগে তিনি চাইলেই তামাক-সিগারেটের উপর বাড়তি কর বসিয়ে দিতে পারতেন। পরিকাঠামো বা বিশেষ কোনও ক্ষেত্রে অর্থ বরাদ্দ দরকার হলে বসানো হত সেস। সেই রীতি মেনেই শিক্ষা সেস, কৃষি কল্যাণ সেস, স্বচ্ছ ভারত সেস, ক্লিন এনার্জি সেস বসেছে এর আগে। কিন্তু জিএসটি আসার ফলে এ বছর সেই চিন্তাও আর থাকছে না।