—প্রতীকী চিত্র।
লোকসভা নির্বাচনের এক বছরও বাকি নেই। রয়েছে পাঁচটি রাজ্যে গুরুত্বপূর্ণ বিধানসভা ভোট। তার আগে আনাজপাতি-সহ প্রায় সমস্ত খাদ্যপণ্যের আগুন দাম অস্বস্তিতে ফেলেছে মোদী সরকারকে। এই অবস্থায় আমজনতাকে চাল-গমে সুরাহা দিতে ফের পদক্ষেপ করল তারা। সম্প্রতি ক্রেতাসুরক্ষা মন্ত্রকের তরফে বিভিন্ন মন্ত্রককে পাঠানো এক নোটে জানানো হয়েছে, সমস্ত কেন্দ্রীয় গুদামে যাতে আরও বেশি পরিমাণে চাল মজুত রাখা যায়, তা নিশ্চিত করার জন্য ইথানল কারখানাগুলিকে চাল সরবরাহ আপাতত বন্ধ রাখা হচ্ছে। তার পরিবর্তে ভুট্টা ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে তাদের। আর গুদামগুলি থেকে খোলা বাজারে নিলাম করা চালের দাম কমানো হচ্ছে কুইন্টালে ২০০ টাকা করে।
অনিয়মিত বর্ষার জেরে গত দু’মাসে বাজারে আনাজের দর কাঁপুনি ধরিয়েছে। নাজেহাল সাধারণ মানুষ। ভোটের প্রায় দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে সন্ত্রস্ত কেন্দ্রও। জুলাইয়ে খুচরো বাজারের মূল্যবৃদ্ধি এক লাফে ছুঁয়েছে ৭.৪৪%। শুধু আনাজের মূল্যবৃদ্ধিই ৩৭%। খাদ্যপণ্যের ক্ষেত্রে ওই হার (১৪.২৫%) ২০২০-র জানুয়ারির পরে সবচেয়ে বেশি। সংশ্লিষ্ট মহলের বক্তব্য, এর বিরূপ প্রভাব যাতে ব্যালট বাক্সে না পড়ে তা নিশ্চিত করতে মরিয়া পদক্ষেপ করে চলেছে কেন্দ্র। বাজারে জোগান বাড়িয়ে দাম নিয়ন্ত্রণে আনতে বাসমতী বাদে অন্যান্য সমস্ত সাদা চালের রফতানি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। একই উদ্দেশ্যে ফুড কর্পোরেশনের (এফসিআই) গুদাম থেকে খোলা বাজারে নিলাম করা হচ্ছে চাল এবং গম। আজ একই নোটে ক্রেতাসুরক্ষা মন্ত্রক জানিয়েছে, আরও ২৫ লক্ষ টন চাল এবং ৫০ লক্ষ টন গম বাজারে বিক্রি করা হবে। এর মধ্যে চলতি সপ্তাহেই নিলাম হবে ২ লক্ষ টন গম। উল্লেখ্য, সম্প্রতি খোলা বাজারে পেঁয়াজ বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। নেপাল থেকে টোম্যাটো আনা হচ্ছে। ১৫ অগস্ট থেকে ৫০ টাকা কেজি দরে টোম্যাটো বিক্রির নির্দেশও হয়েছে এনসিসিএফ এবং নাফেড-এর মতো সমবায়কে।
সংশ্লিষ্ট মহলের বক্তব্য, বাজারে বেশি চাল ছাড়ার জন্য কর্নাটকের খাদ্যসুরক্ষা প্রকল্পে চাল সরবরাহ বন্ধ করেছিল কেন্দ্র। তাই নিয়ে মোদী সরকারের সঙ্গে কংগ্রেস শাসিত কর্নাটক সরকারের চাপানউতোরও কম হয়নি। কিন্তু বাস্তবে পাঁচ দফা নিলামে চালের ক্ষেত্রে প্রত্যাশিত সাড়া মেলেনি। যে কারণে এ বার দাম কমিয়ে বাজারে ছাড়া হচ্ছে। মোদী সরকার খাবারের দাম নিয়ে কতটা উদ্বিগ্ন এবং তা কমাতে কতটা মরিয়া, এই ঘটনাই তার প্রমাণ বলে দাবি তাদের।