প্রতীকী ছবি।
অর্থনীতিতে প্রাণ ফেরাতে এ বার সরকারি ও রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার ব্যয় বাড়ানোয় জোর দিচ্ছে কেন্দ্র। সেই লক্ষ্যে শনিবার ৩২টি সংস্থার কর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে তাদের আগামী ছ’মাসে খরচের গতি বাড়াতে বললেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। পাশাপাশি, সংস্থাগুলিকে ১৫ অক্টোবরের মধ্যে চারটি ত্রৈমাসিকের লগ্নির পরিকল্পনাও জমা দিতে বলেছেন তিনি। একই সঙ্গে ওই সব সংস্থার পাওনাদারদের বকেয়া মেটানোর নির্দেশ দিয়ে বাজারে অন্তত কিছুটা নগদের জোগান বাড়ানোর পথও বাতলেছেন নির্মলা। শিল্পের একাংশের অবশ্য বক্তব্য, কেন্দ্র চাহিদা বাড়াতে চাইলেও, তাদের পদক্ষেপ খুব একটা পরিকল্পিত নয়। আরও আগে এই সব সিদ্ধান্ত নিলে ভাল হত।
আর্থিক বৃদ্ধি ছ’বছরের তলানিতে। বাজারে চাহিদা নেই। বেসরকারি লগ্নি আসছে না। এই অবস্থায় বৃদ্ধি ত্বরান্বিত করতে কেন্দ্রকে যে ব্যয় বাড়াতে হবে, সে কথা বহু দিন ধরেই বলছে বিভিন্ন মহল। খোদ রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর শক্তিকান্ত দাসও বলেছেন, বাজেট লক্ষ্যমাত্রার ব্যয়ের বেশিটা এখনই করতে হবে কেন্দ্রকে। অনেকের মতে, এর আগে শিল্পের জন্য কর্পোরেট কর কমানো-সহ নানা পদক্ষেপ করার পরে এ বার সেই লক্ষ্যেই ঝাঁপাতে চাইছে সরকার। সে জন্যই পরিকাঠামোয় সরকারি খরচ বাড়ানোয় জোর দেওয়ার পরে এ বার তাদের নজর কেন্দ্রীয় সরকারি ও রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলির উপরে। কারণ, প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ করের পরে কেন্দ্রের রাজস্বের সব চেয়ে বড় অংশ আসে এদের থেকেই। অধিকাংশ সরকারি বরাতের সূত্র ওই সব সংস্থা।
শুক্রবার অর্থমন্ত্রী বলেছিলেন, আইনি জটিলতায় আটকে না-থাকলে, বেসরকারি সংস্থার পাওনা ফেলে রাখা চলবে না। শনিবারও নির্মলা বলেন, মামলা মেটাতে কত দিন সময় লাগছে, তা দেখা হবে। কোনও সালিশি মামলায় রায়ের পরেও অন্তত ৭৫% টাকা মেটানোর ক্ষেত্রে ব্যাঙ্ক গ্যারান্টি কেন সমস্যা তৈরি করছে, তা দেখা জরুরি। এ জন্য রিজার্ভ ব্যাঙ্ক, অর্থসচিব ও বিভিন্ন রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার কর্তার মধ্যে কথা হবে। দরকারে শীর্ষ ব্যাঙ্কের সাহায্য নেওয়া হবে।
বাজারের নেতিবাচক মনোভাব কাটাতে অর্থমন্ত্রীর উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন বেঙ্গল চেম্বারের প্রেসিডেন্ট বি বি চট্টোপাধ্যায়। তাঁর মতে, দীর্ঘ মেয়াদে এর সুফল মিলতে পারে। কিন্তু দেশ ও বিশ্বে এখনকার আর্থিক অনিশ্চয়তায় মানুষ খরচের আগে দু’বার ভাবছেন। তাই বাজেটেই এ সব পদক্ষেপ করলে, উৎসবের মরসুমের শুরুতে হয়তো দ্রুত চাহিদা বাড়ত। ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি শিল্পের সংগঠন ফসমির প্রেসিডেন্ট বিশ্বনাথ ভট্টাচার্য ও ফ্যাকসির প্রেসিডেন্ট হিতাংশু গুহের দাবি, বহু রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা পাওনা বকেয়া রাখায় ছোট সংস্থার কার্যকরী মূলধনে টান পড়ে। তাই এ দিনের সিদ্ধান্তে তাঁরা খুশি।