সরকারি হিসেবের সঙ্গে মিলছে না সরকারি হিসেব। আর সেই অমিল সামনে আসতেই কেন্দ্রকে অস্বস্তিতে ফেলে বাজেটের তথ্যে বড় রকমের গরমিল থাকার অভিযোগ তুলল সংশ্লিষ্ট মহল। বিষয়টিতে অর্থ মন্ত্রক অবশ্য নীরবই।
হিসেব-নিকেশে ধরা পড়েছে, গত অর্থবর্ষে কেন্দ্রের রাজস্ব আয়ের অঙ্ক বাজেট ও আর্থিক সমীক্ষায় আলাদা। এক-দু’টাকা নয়, দুইয়ের ফারাক প্রায় ১.৭ লক্ষ কোটি। আলাদা হিসেব সরকারি খরচেও। তফাত প্রায় ১.৪৫ লক্ষ কোটি। এমনকি ২০২৪-২৫ সালের মধ্যে ৫ লক্ষ কোটি ডলারের অর্থনীতিতে পা রাখার যে স্বপ্ন ফেরি করছেন নরেন্দ্র মোদী, তাতেও ধোঁয়াশা খুঁজে পাচ্ছেন একাংশ। তাঁদের দাবি, অর্থ মন্ত্রক ও নীতি আয়োগ যখন বলছে ওই লক্ষ্য ছুঁতে বছরে ৮% বৃদ্ধি জরুরি, তখন আর্থিক সমীক্ষার বার্তা চলতি অর্থবর্ষে তা ৭% ছোঁবে। অর্থ মন্ত্রকের পূর্বাভাস, ২০২০-২১ ও ২০২১-২২ সালে ওই হার দাঁড়াতে পারে যথাক্রমে ৭.৩% ও ৭.৫%।
মঙ্গলবার মোদী সরকারের বিরুদ্ধে বাজেটের হিসেবে কারচুপির অভিযোগ তুলেছেন কংগ্রেস-বাম নেতারা। একাংশের প্রশ্ন, এ ভাবে গরমিল দেখিয়ে কি ৫ লক্ষ কোটি ডলারের অর্থনীতিতে পৌঁছনো সম্ভব?
হিসেবের গরমিল নিয়ে প্রথম প্রশ্ন তুলেছিলেন খোদ প্রধানমন্ত্রীর আর্থিক উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য, অর্থনীতিবিদ রথীন রায়। এ বার প্রশ্ন তুললেন জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির অধ্যাপিকা জয়তী ঘোষ। তাঁদের সংশয়ের জায়গা হল, আর্থিক সমীক্ষা যেখানে গত অর্থবর্ষে সরকারের রাজস্ব আয় ১৫.৬ লক্ষ কোটি টাকা দেখিয়েছে, সেখানে বাজেটে তার সংশোধিত হিসেব ১৭.৩ লক্ষ কোটি। বাজেটে সরকারি খরচের সংশোধিত হিসেবের থেকে আর্থিক সমীক্ষায় প্রকাশিত হিসেবও প্রায় ১.৪৫ লক্ষ কোটি কম।
জয়তীর বক্তব্য, তার মানে বাজেটে খরচ কমানো হয়েছে। কারণ, আর্থিক সমীক্ষা অনুযায়ী রাজকোষ ঘাটতি প্রায় ১১ হাজার কোটি বাড়ে। চলতি বছরে রাজস্ব আয় বাড়ানোর লক্ষ্যও ছাপিয়ে যায় ২৫%। ৯% প্রকৃত জিডিপি-র বৃদ্ধি নিয়ে যা কার্যত অসম্ভব।
কংগ্রেস নেতা জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়ার তোপ, ‘‘আতঙ্ক তৈরি, কণ্ঠরোধ, মেরুকরণের বিশেষজ্ঞরা এ বার পরিসংখ্যানের কারচুপিতেও বিশেষজ্ঞ হয়ে উঠেছে।’’ আর সিপিএম নেতা সীতারাম ইয়েচুরির বক্তব্য, ‘‘এই কারচুপি শুধু দেশের মানুষের ক্ষতি করবে না। পরিসংখ্যানের গুণগত মানের সুনামেও ধাক্কা দেবে।’’
এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও।সাবস্ক্রাইব করুনআমাদেরYouTube Channel - এ।