প্রতীকী ছবি।
করোনা আবহে দেশে রেকর্ড জ্বালানির দর থেকে মানুষকে সুরাহা দিতে কেন্দ্রের কাছে শুল্ক কমানোর দাবি উঠছে বারবারই। কিন্তু বহু রাজ্যে পেট্রল লিটারে ১০০ টাকা ছাড়ালেও এবং ডিজেল সেঞ্চুরির মুখে দাঁড়িয়ে থাকলেও, সে কথা শুনতেই নারাজ মোদী সরকার। তারা বরং প্রথম থেকেই চড়া দরের দায় চাপাচ্ছে বিশ্ব বাজারে অশোধিত তেলের দামের উপরে। সেই ধারা বজায় রইল সোমবারও। যখন তেলমন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান গুজরাতে এক অনুষ্ঠানে জানালেন, ভারতকে প্রায় ৮০% জ্বালানিই আমদানি করতে হয়। এ দিকে আন্তর্জাতিক বাজারে ব্যারেলে অশোধিত তেলের দাম ছাড়িয়েছে ৭০ ডলার। এই কারণে দেশেও জ্বালানির দাম বাড়ছে। এর আগে গত বছরে পেট্রল ৮০ টাকার কাছাকাছি পৌঁছনোর পরে একই কথা বলেছিলেন তিনি। যদিও অনেকের প্রশ্ন, কেন্দ্রের যুক্তিই মেনে নিলে গত বছরে অশোধিত তেল ব্যারেলে শূন্যের নীচে নামার সময়ে দেশে দর কমেনি কেন? কেনই বা তখন রেকর্ড হারে শুল্ক বাড়িয়ে তেলের দামকে একই জায়গায় ধরে রাখা হয়েছিল? তার পরেই বিশ্ব বাজারে দর মাথা তুলতেই এখানেও তা বাড়তে দেখা গিয়েছে।
আজ তেলের দাম নিয়ে কেন্দ্রকে বিঁধেছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গাঁধীও। টুইটে বলেছেন, ‘কর সংগ্রহের মহামারীর ঢেউ আছড়ে পড়েছে’। আর বিরোধী দলের মুখপাত্র রণদীপ সিংহ সূরজেওয়ালার মন্তব্য, মানুষকে অবিচারে লুঠে চলেছে মোদী সরকার। তেলের দাম বৃদ্ধির জন্য কেন্দ্রের শুল্কই দায়ী, অশোধিত তেল নয়। গত ১৩ মাসে লিটারে পেট্রল ও ডিজেল বেড়েছে যথাক্রমে ২৫.৭২ টাকা এবং ২৩.৯৩ টাকা। অনেকেই মনে করাচ্ছেন, ইউপিএ জমানায় অশোধিত তেল ব্যারেলে ১০৮ ডলার হলেও, দেশে দাম ছিল এখনকার থেকে অনেক কম। গত সাত বছরে দেশে পেট্রলে প্রায় ২৫০% এবং ডিজেলে প্রায় ৮০০% কেন্দ্রীয় শুল্ক বৃদ্ধির কথাও তুলে ধরছে সংশ্লিষ্ট মহল।
এর মধ্যে বিশ্ব অর্থনীতি ছন্দে ফেরার হাত ধরে আন্তর্জাতিক বাজারে অশোধিত তেলও দু’বছরের সর্বোচ্চ সীমায় পৌঁছেছে। ২০১৯ সালের মে মাসের পরে সোমবারই ছুঁয়েছিল ব্যারেলে ৭২.২৭ ডলার। যা চিন্তা বাড়াচ্ছে বিভিন্ন মহলে। কারণ, তেলের দাম বাড়লে প্রভাব পড়বে জিনিসপত্রের দামে। ফলে আমজনতার পক্ষে আগামী দিনে অবস্থা আরও কঠিন হতে পারে। যে কারণে শুল্ক কমানো ছাড়াও উঠছে তেলে জিএসটি চালুর দাবি। আজ জিএসটি-র পক্ষে সওয়াল করলেও, তার দায় অবশ্য জিএসটি পরিষদের দিকেই ঠেলেছেন প্রধান। বলেছেন, সেখানেই সকলে একমত হয়ে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। যদিও অনেকে বলছেন, এটা আদতে রাজ্যগুলির কোর্টে বল ঠেলা। কারণ, তেলের ভ্যাট থেকে তাদেরই আয় হয়। ফলে এতে রাজ্যগুলি কতটা রাজি হবে, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।