কেন্দ্রীয় আবাসন সচিব দুর্গাশঙ্কর মিশ্র। ফাইল চিত্র।
পশ্চিমবঙ্গের আবাসন আইন ‘হিরা’-কে সম্প্রতি ‘অসাংবিধানিক’ বলে খারিজ করার নির্দেশ দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। যে কারণে আপাতত কেন্দ্রীয় আবাসন শিল্প নিয়ন্ত্রণ আইন রেরা-র (রিয়াল এস্টেট রেগুলেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অ্যাক্ট) আওতায় নতুন বিধি তৈরি করেছে রাজ্য। সংশ্লিষ্ট সূত্র যাকে কেন্দ্রীয় আইনটি চালু করারই প্রথম পদক্ষেপ বলে ব্যাখ্যা করছে। বৃহস্পতিবার সেই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়ে কেন্দ্রীয় আবাসন সচিব দুর্গাশঙ্কর মিশ্রের পরামর্শ, এ বার মডেল ভাড়াটিয়া আইন মেনেও নতুন বিধি চালু করতে উদ্যোগী হোক পশ্চিমবঙ্গ সরকার।
এ দিন বণিকসভা ভারত চেম্বারের এক সভায় কেন্দ্রীয় সচিবের বক্তব্য, নানা রকম জটিলতার কারণেই অনেকে বাড়ি ভাড়া দিতে আগ্রহী হন না। যে কারণে সেই সম্পত্তি এমনি পড়ে থাকার ফলে তার থেকে আয় কার্যত থমকে থাকে। তাঁর দাবি, নতুন মডেল আইনে সেই সব জটিলতা কাটিয়ে বাড়ি-ফ্ল্যাট ভাড়ার পথ সহজ করা হচ্ছে। যার হাত ধরে বাড়িওয়ালা এবং ভাড়াটিয়া, দু’পক্ষই উপকৃত হবে। শহরাঞ্চলে বাসস্থানের সমস্যার আরও কমবে। অন্য দিকে ভাড়া দেওয়ার ব্যবসাও সম্প্রসারিত হবে। দুর্গাশঙ্কর জানান, চার বছর ধরে রাজ্য এবং সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের সঙ্গে আলোচনার প্রেক্ষিতেই তা স্থির করেছে কেন্দ্র। গত মাসে সব রাজ্যকে সেই মডেল আইনের খসড়া পাঠানো হয়েছে। আগামী দিনে পশ্চিমবঙ্গ সরকারও দ্রুত সেটির ভিত্তিতে নয়া আইন চালু করবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালে আবাসন সংক্রান্ত কেন্দ্রীয় আইন চালু হলেও, একমাত্র পশ্চিমবঙ্গ তা মানেনি। কেন্দ্র রাজ্যকে এই আইন অনুযায়ী আবাসন নিয়ন্ত্রক সংস্থা তৈরির জন্য চাপ দিলেও, উল্টে কেন্দ্রীয় আইন পাশের এক বছর পরে রাজ্য বিধানসভায় নিজস্ব আইন ‘হিরা’ পাশ করায়। কিন্তু গত মে মাসে সুপ্রিম কোর্ট সেটি খারিজ করায় রাজ্য এ বার কেন্দ্রীয় আইনেই নয়া বিধি এনেছে। কেন্দ্রীয় সচিব আশা প্রকাশ করে বলেন, সেই আইন এবং বিধি অনুযায়ীই নিশ্চয়ই দ্রুত সংশ্লিষ্ট বিষয়টি দেখাশোনার জন্য নির্দিষ্ট কর্তৃপক্ষ গড়বে রাজ্য।
দুর্গাশঙ্করের দাবি, কেন্দ্রের সংস্কারগুলির মধ্যে সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ রেরা আইন। যার মাধ্যমে প্রায় ৭০ হাজারেরও বেশি মামলার নিষ্পত্তি হয়েছে। ফলে ক্রেতার আস্থা বেড়েছে। ওই আইনে এখনও পর্যন্ত দেশে ৬৭ হাজার প্রকল্প এবং প্রায় ৬০ হাজার সম্পত্তি-এজেন্ট নথিভুক্ত হয়েছে।