আয়কর কোম্পানি আইনের মতো জিএসটি-র ক্ষেত্রেও বেশ কিছু অপরাধকে ফৌজদারি অপরাধের তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। প্রতীকী ছবি।
আবাসনের ক্রেতারা এ বার ফ্ল্যাট-বাড়ি তৈরির পরিষেবায় মেটানো জিএসটি ফেরত চাইতে পারেন। এতদিন সেই পরিষেবা এবং দীর্ঘমেয়াদি বিমার চুক্তি বাতিল হয়ে গেলেও এই টাকা ফেরত পাওয়ার কোনও সুযোগ ছিল না। আজ জিএসটি পরিষদ তার প্রক্রিয়া অনুমোদন করেছে। ফলে আবাসনের ক্রেতারা খুব শীঘ্রই জিএসটি ফেরতের দাবি জানাতে পারবেন।
আজ বৈঠকে বসেছিল জিএসটি পরিষদ। পরে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন স্পষ্ট করেন, বিমার ক্ষেত্রে বিমা সংস্থাগুলি যে ‘নো ক্লেম বোনাস’ দিয়ে থাকে, তা জিএসটি-র বাইরে থাকবে। গাড়ি বা স্বাস্থ্য বিমার ক্ষেত্রে সংস্থাগুলিকে কোনও বছরে সংশ্লিষ্ট গ্রাহকের জন্য কোনও রকম খরচ করতে না হলে, পরের বছর তাঁর নতুন করে পলিসি করার সময় ওই বোনাস দেওয়া হয়। এখন থেকে তাতে জিএসটি আদায় করা যাবে না।
আয়কর, কোম্পানি আইনের মতো জিএসটি-র ক্ষেত্রেও বেশ কিছু অপরাধকে ফৌজদারি অপরাধের তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। যেমন, ভুয়ো বিলের পরিমাণ ১ কোটি টাকা হলে, তবেই তা ফৌজদারি অপরাধের তালিকায় পড়বে। কিন্তু অন্যান্য ক্ষেত্রে এই ন্যূনতম সীমা ১ কোটি টাকা থেকে বাড়িয়ে ২ কোটি টাকা করা হয়েছে। অফিসারকে কাজে বাধা দেওয়া, ইচ্ছাকৃত নথি বিকৃত করা কিংবা ভুল তথ্য দেওয়া ফৌজদারি অপরাধের তালিকায় পড়বে না।
শনিবার কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী এবং রাজ্যের অর্থমন্ত্রীদের নিয়ে ভিডিয়ো কনফারেন্সে জিএসটি পরিষদের বৈঠক হয়। কোনও ক্ষেত্রেই কর বাড়ানো হয়নি। পেট্রলের সঙ্গে মেশানোর জন্য শোধনাগারে সরবরাহ করা ইথাইল অ্যালকোহলে জিএসটি ১৮% থেকে কমিয়ে ৫% করা হয়েছে। ঠিক হয়েছে, এসইউভি (স্পোর্টস ইউটিলিটি ভেহিক্ল) গাড়ির ক্ষেত্রে ২২% হারেই জিএসটি সেস চাপানো হবে। কোন ধরনের গাড়িকে এসইউভি বলা হবে, তা স্পষ্ট করে জানানো হয়েছে। পরিষদের বক্তব্য, সাধারণ ভাবে ১৫০০ সিসি-র বেশি ক্ষমতাসম্পন্ন ইঞ্জিন, ৪০০০ মিলিমিটারের বেশি লম্বা এবং ১৭০ মিলিমিটার বা তার বেশি ‘গ্রাউন্ড ক্লিয়ারেন্স’ সম্পন্ন গাড়িকে এসইউভি ধরা হবে।
পশ্চিমবঙ্গের অর্থ প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, পেনসিল শার্পনারের উপর জিএসটি কমিয়ে ১২% করার প্রস্তাব দিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ, পঞ্জাব। এখন তা ১৮%। নির্মলা জানান, কেন্দ্র ও রাজ্যের অর্থমন্ত্রীরা এখন জিএসটি আদায়ের পরিধি আরও বাড়াতে হবে বলে একমত। গত কয়েক মাস ধরেই গড়ে ১.৪০ লক্ষ কোটি টাকা করে আয় হচ্ছে এর থেকে। সকলেই মনে করছেন, আদায় এই জায়গায় ধরে রাখতে হলে করের পরিধি বাড়াতে হবে। যার অর্থ, আরও বেশি ব্যবসায়িক সংস্থাকে জিএসটি-র আওতায় নিয়ে আসা। সিবিআইসি-র (কেন্দ্রীয় পরোক্ষ কর পরিষদ) চেয়ারম্যান বিবেক জোহরি বলেন, জিএসটি-র বাইরে থাকা ব্যবসায়িক সংস্থাগুলিকে চিহ্নিত করার জন্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থা এবং সম্পত্তি করের তথ্য কাজে লাগানো যেতে পারে। এ নিয়ে কেন্দ্র ও রাজ্যগুলি পাইলট প্রকল্পে (পরীক্ষামূলক) কাজ করছে। এই মুহূর্তে ১.৪ কোটি ব্যবসায়িক সংস্থা দেশের অভিন্ন পরোক্ষ করটির আওতায় রয়েছে। জিএসটি তথ্য আদানপ্রদান, আপিল ট্রাইবুনাল, ক্যাসিনো-অনলাইন গেম-ঘোড়দৌড় নিয়ে পরের বৈঠকে আলোচনা হবে।