—ফাইল চিত্র
শিল্পকে ‘সবক’ শেখাতে গিয়ে পাল্টা আক্রমণ ফেরত পেলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী!
সম্প্রতি কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নিতিন গডকড়ী অভিযোগ করেন, বড় সিমেন্ট ও ইস্পাত সংস্থাগুলি যোগসাজসে দাম বাড়িয়ে রেখেছে। এমন চলতে থাকলে পরিকাঠামো প্রকল্পগুলির খরচ বাড়বে। যেগুলির উপরে নির্ভর করে রয়েছে দেশের লগ্নির ভবিষ্যৎ এবং অর্থনীতির ঘুরে দাঁড়ানো। এ ব্যাপারে হস্তক্ষেপের জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছে আর্জি জানিয়েছেন তিনি। কিন্তু এই অবস্থায় সমাধান তো দূরের কথা, বরং পাল্টা আক্রমণ ধেয়ে এল সিমেন্ট শিল্পের দিক থেকে। তাদের বক্তব্য, যোগসাজসের মাধ্যমে তারা দাম বাড়ায়নি। বরং অর্থনীতির খারাপ সময়ে দাম চড়িয়ে রেখেছে নির্মাণ ও আবাসন সংস্থাগুলি। যার ফলে সমস্যায় পড়ছে সিমেন্ট-সহ বহু শিল্প। এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর কাছে অভিযোগ করেছে তারাও। একগুচ্ছ অভিযোগে কোথাও মন্ত্রীর বক্তব্যের কথা উল্লেখ্য না-করলেও, গড়কড়ীর মন্তব্যের প্রেক্ষিতেই যে সিমেন্ট শিল্প ফুঁসে উঠেছে, তা পরিষ্কার বলে ব্যাখ্যা সংশ্লিষ্ট মহলের।
সিমেন্ট সংস্থাগুলির হয়ে মুখ খুলেছেন ইন্ডিয়া সিমেন্টসের ভাইস চেয়ারম্যান-এমডি এন শ্রীনিবাসন। তিনি জানান, সরকারের সঙ্গে দক্ষিণ ভারতের সিমেন্ট শিল্পের যোগাযোগ রক্ষার জন্য গত বছরের ডিসেম্বরে তাঁরা সাউথ ইন্ডিয়া সিমেন্ট ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন নামের সংগঠন তৈরি করেছেন। নির্মাণ সংস্থাগুলির কার্যকলাপ নিয়ন্ত্রণের দাবি তুলে প্রধানমন্ত্রীর কাছে দাবিপত্র জমা দিয়েছে সেই সংগঠনটিই। শ্রীনিবাসনের বক্তব্য, সিমেন্ট উৎপাদনের ক্ষেত্রে ভারত বিশ্বে দ্বিতীয়। হাতে গোনা কয়েকটি যন্ত্র বাদে এই শিল্পের সমস্ত কাঁচামালই দেশে তৈরি হয়। ফলে প্রধানমন্ত্রীর ‘আত্মনির্ভর ভারত’ কর্মসূচির আদর্শ উদাহরণ হতে পারে এই ক্ষেত্রটি। এত সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও আবাসন শিল্পের জন্য কোণঠাসা হয়েছে রয়েছে সিমেন্ট সংস্থাগুলি। শ্রীনিবাসনের হিসেব, আবাসন সংস্থাগুলি ৫০% দাম কমাতেই পারে। তা হলেই জমে থাকা বাড়িগুলি বিক্রি হয়ে যাবে।
অভিযোগ ছিল
• বড় সিমেন্ট ও ইস্পাত সংস্থাগুলি যোগসাজসে দাম বাড়াচ্ছে।
• কেন্দ্র হস্তক্ষেপ না-করলে ধাক্কা খাবে মোদীর আত্মনির্ভর ভারতের স্বপ্ন।
সিমেন্টের পাল্টা
• তারা নয়, যোগসাজসে দাম বাড়াচ্ছে আবাসন নির্মাতারাই। সেই জন্যই প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা সফল হতে পারছে না।
• নির্মাতারা দাম না কমানোয় বহু আবাসন বিক্রি হচ্ছে না। ধাক্কা খাচ্ছে সিমেন্ট-সহ
অন্যান্য শিল্প।
• আবাসন শিল্পকে ঠেকানোর মতো কোনও প্রশাসন নেই।
• কেন্দ্র বিষয়টিতে হস্তক্ষেপ না-করলে আখেরে ভুগবে অর্থনীতিই।