চলতি অর্থবর্ষে আরও ২৫,৫০০ কোটি টাকা খরচের জন্য সংসদের সায় চাইল কেন্দ্র। যার প্রায় অর্ধেকটাই (১২,১১০ কোটি) ঢালা হবে অনুৎপাদক সম্পদের বোঝায় জেরবার রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলিকে মূলধন জুগিয়ে সাহায্য করার জন্য। তহবিলের বাকি অংশ যে সব খাতে খরচ করার কথা, তার মধ্যে রয়েছে, নগদের অভাবে ধুঁকতে থাকা রাষ্ট্রায়ত্ত বিমান সংস্থা এয়ার ইন্ডিয়া চাঙ্গা করা (৮০০ কোটি), কেন্দ্রের মহিলা ও শিশু সুরক্ষার বিভিন্ন প্রকল্প রূপায়ণ (৪,০০০ কোটি), মুদ্রা ব্যাঙ্ক তৈরি (১০০ কোটি), স্বচ্ছ ভারত প্রকল্প-সহ পানীয় জল ও শৌচালয় সংক্রান্ত বিভিন্ন প্রকল্প চালানো (২,৬৮৫ কোটি) ইত্যাদি।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ব্যাঙ্কগুলিতে অনুৎপাদক সম্পদ লাফিয়ে বাড়তে থাকায় বহু পরিকল্পনা সত্ত্বেও দেশের লগ্নি পরিবেশ চাঙ্গা করা সম্ভব হচ্ছে না কেন্দ্রের পক্ষে। ফলে বৃদ্ধির চাকায় গতি ফেরানোও ক্রমশ কঠিন হয়ে পড়ছে। তার উপর রয়েছে বাসেল থ্রি বিধি মেনে নির্দিষ্ট মূলধন হাতে রাখার বাধ্যবাধকতা। এই পরিস্থিতিতে শুক্রবার অর্থ মন্ত্রক বিবৃতিতে জানিয়েছে, এখনও পর্যন্ত ব্যাঙ্কগুলির হাতে যথেষ্ট মূলধন থাকলেও বিশেষত বাসেল থ্রি-র বিধি মানতে চার বছরে আরও ১.৮০ লক্ষ কোটি টাকার প্রয়োজন পড়বে। এর মধ্যে ৭০ হাজার কোটি বাজেট বরাদ্দের মাধ্যমে দেবে কেন্দ্র। বাকিটা ব্যাঙ্কগুলিকে সংগ্রহ করতে হবে বাজার থেকে।
তবে ওই ৭০ হাজার কোটি সরকার ধাপে ধাপে ঢালবে বলে জানিয়েছে মন্ত্রক। চলতি ও পরের অর্থবর্ষে ২৫ হাজার কোটি করে। তার পরের দু’বছরে আরও ১০ হাজার কোটি করে।
শুক্রবার কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি ব্যাঙ্কগুলির হাতে বাড়তি ১২,১১০ কোটি টাকা দেওয়ার যে প্রস্তাবে সংসদের সায় চেয়েছেন, তা চলতি (২০১৫-’১৬) অর্থবর্ষের জন্য বরাদ্দ ওই ২৫ হাজার কোটিরই একটা অংশ। এর আগে তিনি বাজেটে ৭,৯৪০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছিলেন এই খাতে। কেন্দ্রীয় আর্থিক পরিষেবা সচিব হাসমুখ আধিয়া বলেন, ‘‘সংসদের অনুমোদন পেলে সেপ্টেম্বরের মধ্যেই এই ২০ হাজার কোটি মূলধন জোগানের প্রক্রিয়া চালু হয়ে যাবে।’’ অর্থ মন্ত্রকের দাবি, বাকি ৫,০০০ কোটি বরাদ্দ হবে বছরের শেষের দিকে।
বাড়তি মূলধন ঢালার উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর রঘুরাম রাজন। তিনি বলেন, প্রথম অর্থবর্ষে ২৫ হাজার কোটি মূলধনের জোগান যথেষ্ট।