ইএসআই তহবিলও শেয়ার বাজারে লগ্নি করতে চলেছে মোদী সরকার। ফাইল চিত্র।
প্রভিডেন্ট ফান্ডের পরে এ বার কর্মীদের আর এক সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্প এমপ্লয়িজ় স্টেট ইনশিওরেন্সের (কর্মী রাজ্য বিমা বা ইএসআই) তহবিলও শেয়ার বাজারে লগ্নি করতে চলেছে মোদী সরকার। রবিবার শ্রমমন্ত্রী ভূপেন্দর যাদবের সভাপতিত্বে কর্মী রাজ্য বিমা নিগমের (ইএসআইসি) পরিচালন পর্ষদের বৈঠকে এই প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়েছে বলে এক বিবৃতিতে জানিয়েছে শ্রম মন্ত্রক। তবে এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছে ট্রেড ইউনিয়নগুলির একাংশ। তাদের দাবি, ইএসআইয়ের মতো সমাজের স্বল্প আয়ের মানুষদের সুরক্ষা প্রকল্পের টাকা ঝুঁকিপূর্ণ জায়গায় লগ্নি করার অনুমতি দিয়ে সরকার বহু মানুষের জীবন অনিশ্চিত করে দিতে চলেছে। বিশেষ করে বর্তমান অনিশ্চিত আর্থিক অবস্থার প্রেক্ষিতে।
এ দিনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, শুরুতে প্রতি বছর ইএসআইয়ের সমস্ত খরচ মিটিয়ে যে টাকা অবশিষ্ট থাকবে, তার ৫% শেয়ারে লগ্নি হবে। ছ’মাস (দু’টি ত্রৈমাসিক) অম্তর বিষয়টি পর্যালোচনা করে পর্যায়ক্রমে লগ্নির পরিমাণ নিয়ে যাওয়া হবে ১৫ শতাংশে। পুঁজি খাটানো হবে এক্সচেঞ্জ ট্রেডেড ফান্ডের (ইটিএফ) মাধ্যমে। তবে শুধুমাত্র নিফ্টি এবং সেনসেক্সের ইটিএফেই।
সিটুর সাধারণ সম্পাদক তপন সেন বলেন, “আমরা ইএসআই এবং প্রভিডেন্ট ফান্ডের টাকা শেয়ার বাজারের মতো ঝুঁকিপূর্ণ জায়গায় লগ্নির বিরুদ্ধে। ওই প্রস্তাব নিয়ে আগেই ইএসআইসি-র পর্ষদে প্রতিবাদ জানিয়েছেন বেশিরভাগ শ্রমিক প্রতিনিধি। কিন্তু সকলের বিরোধিতা অগ্রাহ্য করে কেন্দ্র সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্পের টাকা শেয়ারে খাটানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’’
যদিও ইএসআইয়ের আয় বাড়াতে এই লগ্নি জরুরি বলে মন্তব্য সংস্থার পর্ষদের শ্রমিক প্রতিনিধি সদস্য এবং টিইউসিসির সাধারণ সম্পাদক এসপি তিওয়ারির। তিনি জানান, “সুরক্ষা দেওয়ার পরিষেবা বজায় রাখতে গিয়ে ইতিমধ্যেই ঘাটতি দাঁড়িয়েছে প্রায় ২৩০০ কোটি টাকা। এমন চললে ইএসআইয়ের পরিষেবা সম্প্রসারণের যে পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে, তা বাস্তবায়িত করা কঠিন হবে। তাই আয় বাড়াতে প্রকল্পের টাকা শেয়ারে লগ্নি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যথেষ্ট সতর্ক ভাবেই তা করা হবে।’’
শ্রম মন্ত্রক দাবি করেছে, বর্তমানে ইএসআইয়ের টাকা প্রধানত বিভিন্ন রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা এবং কেন্দ্রীয় সরকারের ঋণপত্রে লগ্নি হয়। কিন্তু তা থেকে আয় কমছে। অথচ বাড়ছে প্রকল্পের সদস্য সংখ্যা। তাই তহবিলের আয় বাড়াতেই শেয়ারে লগ্নির ওই সিদ্ধান্ত।