— প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
ছোট শিল্পকে সুরাহা দিতে তাদের পণ্য-পরিষেবা বাবদ বকেয়া দ্রুত মেটানোয় জোর দিচ্ছে কেন্দ্র। সেই লক্ষ্যে কর সংক্রান্ত নতুন নিয়ম চালু করেছে তারা। যা সোমবার, ১ এপ্রিল থেকে কার্যকর হবে। নিয়ম অনুসারে, কোনও বড় সংস্থা যদি ছোট সংস্থার সঙ্গে পণ্য-পরিষেবা কিনতে চুক্তি করে, তা নির্দিষ্ট করে দেওয়া ৪৫ দিনের মধ্যে টাকা দিতে হবে। চুক্তি না থাকলে তা দিতে হবে ১৫ দিনের মধ্যে। নিয়ম না মানলে ওই পণ্য-পরিষেবার খরচের উপরে আয়কর ছাড়ের সুবিধা নিতে পারবে না বড় সংস্থাগুলি। ফলে বেশি টাকা কর গুনতে হবে তাদের।
২০২৩ সালের অর্থবিল অনুসারে আয়কর আইনের ৪৩ (এইচ) ধারার অধীনে আনা এই নিয়ম নিয়ে বিভিন্ন মহলের মধ্যে শুরু হয়েছে বিতর্কও। একাংশের আশঙ্কা, এই নিয়ম এড়াতে গিয়ে কেন্দ্রের উদ্যোম পোর্টালে নথিভুক্ত নয়, এমন ছোট সংস্থাগুলিকে বরাত দিতে পারে বড় সংস্থাগুলি। বাছতে পারে ছোট শিল্প নয়, এমন সংস্থাকেও। অন্য মহলের অবশ্য মত, এতে শক্ত হবে ছোট সংস্থাগুলির হাত, বাড়বে দরাদরির ক্ষমতা।
ইতিমধ্যেই এই নিয়ম চালুর সময়সীমা পিছোতে অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের কাছে আর্জি জানিয়েছিল ব্যবসায়ীদের সংগঠন সিএআইটি। তাদের দাবি, কার্যকর করা নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে। ফলে তা এ বছরের বদলে ২০২৫ সালের এপ্রিলে চালু করা হোক। রফতানিকারীদেরও দাবি, ৪৫ দিনের মধ্যে টাকা মেটানোর নিয়ম থেকে ছাড় দেওয়া হোক তাদের। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠিতে ফিয়ো-সহ বিভিন্ন সংগঠনের বক্তব্য, সাধারণত রফতানির ক্ষেত্রে পণ্য-পরিষেবার দাম ়পেতে প্রায় ১২০ দিনে লাগে। ফলে সমস্যায় পড়বে তারা। তাই দেশীয় বরাতের সঙ্গে বিদেশে রফতানিকে আলাদা করে দেখা এবং প্রয়োজনে ৪৫ দিনের সময়সীমা বাড়ানোর আর্জি জানিয়েছে এই ক্ষেত্র।
যদিও আশঙ্কায় কান দিতে নারাজ ছোট শিল্পের সংগঠন ফিসমে। তাদের বক্তব্য, এই নিয়ম আদতে ছোট-মাঝারি শিল্পের ভোল পাল্টে দিতে পারে। তারা সময়ে টাকা পাবে, যা ছোট সংস্থার জন্য খুব জরুরি। এতে আইনি ঝামেলা কমতে পারে। স্বচ্ছতা আসবে। সংগঠনের মতে, শুধুমাত্র সময়ে টাকা দিতে চায় না বলে ভরসাযোগ্য সরবরাহকারী ছেড়ে বড় সংস্থাগুলি অন্য সংস্থার দিকে ঝুঁকবে বলে মনে হয় না। বরং এই নিয়মে নিয়মানুবর্তিতা আসবে। যাতে আদতে উপকৃত হবে অর্থনীতিই।