প্রতীকী ছবি।
তেলের আমদানি খরচ ও দূষণ কমানোর যুক্তি দেখিয়ে নীতি আয়োগ দেশের রাস্তায় বছর চার-পাঁচেকের মধ্যে বৈদ্যুতিক গাড়ির চাকা গড়ানোর পক্ষে সওয়াল করেছে আগেই। কেন্দ্রীয় নেতা-মন্ত্রীরা পুরোপুরি সেই জমানায় পা রাখার জন্য মাঝেমধ্যেই সময়সীমা বাঁধার কথা বলছেন। শুক্রবারের বাজেটে কার্যত সেই রাস্তা তৈরিরই ইঙ্গিত দিলেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। বৈদ্যুতিক গাড়ির জন্য নেওয়া ঋণের সুদে আয়কর ছাড়ের কথা ঘোষণা করে। শিল্প সেই প্রস্তাবে খুশি হলেও, তাদের পাল্টা প্রশ্ন, সার্বিক ভাবে গাড়ি শিল্পের ‘অসুখ’ সারানোর দাওয়াই কোথায়? কারণ বেশ কয়েক মাস ধরে নাগাড়ে বিক্রি কমছে তার।
বৈদ্যুতিক গাড়ি কিনলে ঋণের সুদে অতিরিক্ত দেড় লক্ষ টাকা ছাড়ের প্রস্তাব দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। বলেছেন সেগুলির কিছু যন্ত্রাংশে আমদানি শুল্ক কমানো ও দেশে লিথিয়াম ব্যাটারি তৈরিতে উৎসাহ দিতে শুল্ক পুরো তোলার কথাও। বৈদ্যুতিক গাড়ির কর কমিয়ে ৫% করার প্রস্তাবও জিএসটি পরিষদে গিয়েছে বলে জানান তিনি।
গাড়ি শিল্পের সংগঠন সিয়াম ও বৈদ্যুতিক গাড়ি শিল্পের সংগঠন এসএমইভি বাজেট প্রস্তাবে খুশি। সিয়ামের প্রেসিডেন্ট রাজন ওয়াধেরার দাবি, তাঁরাই এ সব প্রস্তাব দিয়েছিলেন। তা মানা হয়েছে। এসএমএইভি-র ডিজি সোহিন্দর গিলের আশা, এর ফলে দেশে এ ধরনের গাড়ির তৈরির উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি হবে। টাটা মোটরসের কর্তা শৈলেশ চন্দ্রের পাশাপাশি বৈদ্যুতিক গাড়ি নির্মাতা সংস্থাগুলির কর্তাদেরও একই মত।
তবে এই নতুন স্বপ্নের মধ্যেও সংশয়ের মেঘ না কাটায় হতাশা লুকিয়ে রাখেনি গাড়ি শিল্প। কারণ প্রায় বছর ঘুরতে চলল দেশে বিক্রি তলানিতে। বহু কর্মী কাজ হারিয়েছেন। সেই আঁধার থেকে বেরোতে বার বার ত্রাণের আর্জি জানাচ্ছে সংস্থাগুলি। কিন্তু তা না মেলায় রাজন বলেছেন, ‘‘এই দুর্দশাকে মান্যতা দিয়ে অর্থমন্ত্রীর পদক্ষেপ না করা হতাশাজনক।’’
এ ছাড়া, পুরনো গাড়ি বাতিলের জন্য কেন্দ্র কোনও প্রকল্প আনবে বলে আশায় ছিল গাড়ি শিল্প। তাদের মতে, সেটা হলেও নতুনগুলির বিক্রি বাড়ত। উল্টে গাড়ির কিছু যন্ত্রাংশে ও পেট্রোল-ডিজেলে শুল্ক ও সেস বৃদ্ধির জেরে গাড়ির খরচ আরও বাড়তে পারে। তাই ধাক্কা খেতে থাকা বিক্রি আরও কমে যাওয়ার আশঙ্কাতেই কাঁটা শিল্প।