প্রতীকী ছবি।
ঝিমিয়ে পড়া গাড়ি শিল্পের চাকা ঘোরাতে সম্প্রতি একগুচ্ছ সুবিধার কথা জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। তাতে প্রাথমিক ভাবে সন্তোষপ্রকাশ করেছে গাড়ি শিল্প। কিন্তু চাহিদায় ভাটার বাজারে তা কি যথেষ্ট? সংশ্লিষ্ট মহলে এই প্রশ্ন ছিলই। মূল্যায়ন সংস্থা ফিচ সলিউশনস বৃহস্পতিবার স্পষ্টই জানাল, ওই সব সুবিধা প্রয়োজনের তুলনায় কম। দেওয়াও হয়েছে যথেষ্ট দেরিতেও। আরও এক মূল্যায়ন সংস্থা ইক্রা জানিয়েছে, গাড়ি শিল্পের কঠিন সময়ের সূত্রপাত ২০১৮-১৯ সালের দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে। সেই ধাক্কাই কাটিয়ে ওঠা যায়নি। রেনো ইন্ডিয়ার এমডি-সিইও বেঙ্কটরাম মামিল্লাপাল্লে এ দিন কলকাতায় জানান, সরকারকে ঘোষণাগুলি দ্রুত কার্যকর করতে হবে।
গাড়ি, সহযোগী যন্ত্রাংশ শিল্প এবং ডিলারদের বিপণি মিলিয়ে কাজ হারিয়েছেন বহু মানুষ। শুধু বিপণিতেই কাজ গিয়েছে আড়াই লক্ষের। বিক্রি না বাড়লে যে আরও ছাঁটাই হতে পারে, সেই আশঙ্কার কথাও শোনা গিয়েছে শিল্পের তরফে। তাদের অনেকের অভিযোগ, গোড়ায় কেন্দ্র বিষয়টিতে কানই দেয়নি। ফিচ সলিউশনস ম্যাক্রো রিসার্চের বক্তব্য, সরকার ঘোষিত প্রকল্প ব্যবসা সঙ্কোচনের মাত্রাকে সামাল দেওয়ার পক্ষে যথেষ্ট নয়। শেষ পর্যন্ত বর্ষা, শিল্পোৎপাদন এবং অর্থনীতির পরিস্থিতির উপরেই নির্ভর করবে গাড়ি বিক্রির ভবিষ্যৎ।
বিভিন্ন সুবিধার মধ্যে নির্মলা জানিয়েছেন, সরকার পুরনো গাড়ি বাতিল করে নতুন গাড়ি কিনবে। কিন্তু ফিচের মতে, মোট গাড়ি বিক্রির তুলনায় সরকারের গাড়ি কেনার বরাত সাধারণত খুব কম হয়। ফলে সুবিধাও মিলবে সামান্য। শুধুমাত্র ব্যাঙ্ক এবং ব্যাঙ্ক নয় এমন আর্থিক প্রতিষ্ঠানে (এনবিএফসি) নগদের জোগান বাড়ানোই এই ত্রাণ প্রকল্পের একমাত্র বড় হাতিয়ার বলে মনে করছে তারা। তবে মূল্যায়ন সংস্থাগুলি এ-ও মনে করছে, শেষ পর্যন্ত ত্রাণ প্রকল্প ঘোষণা করে সরকার মানল যে তারা এ বার এই সমস্যায় হস্তক্ষেপ করতে আগ্রহী।
পর্যবেক্ষণ
গাড়ি শিল্পকে চাঙ্গা করতে সম্প্রতি কয়েকটি পদক্ষেপ ঘোষণা করেছে কেন্দ্র। যদিও এর ফলে এখনই চাহিদা খুব বেশি বাড়ার আশা করছে না মূল্যায়ন সংস্থাগুলি।
তাদের বক্তব্য:
• ত্রাণ প্রকল্প সামান্য ও বিলম্বিত।
• সরকারের গাড়ি কেনা, রেজিস্ট্রেশন ফি বৃদ্ধি পিছিয়ে দেওয়াতেও বিক্রি বিশেষ বাড়বে না এখনই।
• কর কমানো, পুরনো গাড়ি বাতিলের প্রকল্প চাই।
• কৃষি, শিল্প-সহ অর্থনীতির চাকা কতটা ঘোরে তা-ও গুরুত্বপূর্ণ।
• ফিচের মতে, চলতি অর্থবর্ষে বিক্রি কমতে পারে ১১.৮%।
• ইক্রা জানাচ্ছে, যাত্রী গাড়ির বিক্রি কমতে পারে ৪-৭%। বাণিজ্যিক গাড়ির ৫% পর্যন্ত।