আরাধনা: ক্যালকাটা স্টক এক্সচেঞ্জে চলছে মুরতের পুজো। —নিজস্ব চিত্র।
বিশেষ মুরত লেনদেন দিয়ে রবিবার সম্বৎ ২০৮০ শুরু করল শেয়ার বাজার। এক ঘণ্টার ওই লেনদেনে ৩৫৫ পয়েন্ট লাফিয়ে সেনসেক্স আবার ঢুকে পড়ল ৬৫ হাজারের ঘরে। বাজার বন্ধের সময় থামল ৬৫,২৫৯.৪৫ অঙ্কে। অন্য দিকে, নিফ্টি উঠে গেল ১৯,৫২৫.৫৫-তে। উত্থান ১০০.২০। আজ, সোমবার বাজার বন্ধ। মুম্বইয়ে বাজার যখন এ ভাবে চড়ছে, তখন খুশি হাওয়া কলকাতার বাজার মহলেও। কারণ এ দিনই ইঙ্গিত মিলেছে, বন্ধ হয়ে যাওয়া ক্যালকাটা স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) ফের খুলতে চলেছে। আর সেটা হতে পারে আগামী মার্চ-এপ্রিলে। এটি দেশের তৃতীয় বৃহত্তম এক্সচেঞ্জ।
সম্বৎ হল গুজরাতিদের নববর্ষ। নতুন সম্বৎ শুরুর দিনে শেয়ার কেনাকে শুভ বলে মনে করা হয়। সংশ্লিষ্ট ব্রোকার মহলের দাবি, নতুন সম্বৎ গোটা দেশের পক্ষে তো বটেই, ক্যালকাটা স্টক এক্সচেঞ্জের সঙ্গে যুক্ত সকলের জন্যও শুভ হতে চলেছে। দীর্ঘ ১০ বছর ধরে বন্ধ হয়ে রয়েছে ১১৫ বছরের পুরনো শেয়ার বাজারটি। সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন পক্ষের দাবি, তার দরজা ফের খোলা মানে সেটা রাজ্যের পক্ষে বড় ব্যাপার। আবার সেখানে শেয়ার লেনদেন শুরু হবে। তাকে ঘিরে গড়ে উঠবে নানা আর্থিক কর্মকাণ্ড। সব মিলিয়ে ইঙ্গিত সত্যি হলে, তা রাজ্য তথা কলকাতার আর্থিক পরিবেশের উন্নতির নিরিখে তাৎপর্যপূর্ণ।
দেশের বিভিন্ন শেয়ার বাজার বা স্টক এক্সচেঞ্জে সম্বৎ শুরুর প্রথম দিনে লক্ষ্মী-গণেশের পুজো দিয়ে শুরু হয় বিশেষ মুরত লেনদেন। গোটা সম্বৎ জুড়ে সম্পদ ও সমৃদ্ধির কামনায় এই লেনদেন চালায় বাজার মহল। সিএসই-তেও হয়েছে। এক্সচেঞ্জের চিফ জেনারেল ম্যানেজার ধীরাজ চক্রবর্তী জানিয়েছেন, “২০২৪ সালের মার্চ-এপ্রিল থেকে ফের তাঁদের শেয়ার বাজারে লেনদেন শুরু হতে পারে।’’ লেনদেন সংক্রান্ত কিছু আইন সঠিক ভাবে না মানতে পারার কারণে বাজার নিয়ন্ত্রক সেবি ২০১৩ সালের ১ এপ্রিল থেকে সিএসইতে লেনদেন বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছিল। এ দিন ধীরাজবাবু বলেন, “আমাদের কাছে খবর, খুব শীঘ্রই দেশের তৃতীয় বৃহত্তম শেয়ার বাজার সিএসইতে লেনদেন শুরুর অনুমতি দেওয়া হবে বলে ইঙ্গিত দিয়েছে নিয়ন্ত্রক। তবে এর জন্য আমাদের কিছু শর্ত পালন করতে হবে, যা জানুয়ারির মধ্যেই সেরে ফেলব।’’
উল্লখ্য, সিএসইতে লেনদেন বন্ধ হওয়ার পর থেকে চুক্তির মাধ্যমে সিএসইর সদস্যরা বিএসই-তে লেনদেন করছেন।
এ দিন সামগ্রিক ভাবে দেশের শেয়ার বাজার নিয়ে ক্যালকাটা স্টক এক্সচেঞ্জের প্রাক্তন সভাপতি কমল পারেখ বলেন, ‘‘যুদ্ধ, মূল্যবৃদ্ধি, তেলের দাম বাড়ার আশঙ্কা— কোনও কিছুই ভারতে সূচকের গতি রোধ করতে পারেনি। তবে পরের বছর ভারত ও আমেরিকায় সাধারণ নির্বাচন। ফলে সার্বিক ভাবে বাজার বেশি না-ও উঠতে পারে, যদিও খুব বেশি পড়বে বলে মনে হয় না।’’ আরও বেশি আশাবাদী সিএসই-র প্রাক্তন ডিরেক্টর বিনয় আগরওয়াল। তাঁর দাবি, ‘‘বাজারের বড় ভরসা ভারতের পোক্ত অর্থনীতি। আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে সব সময়েই কিছু না কিছু সমস্যা থাকবে। আমার বিশ্বাস, দেশের মজবুত অর্থনীতির পক্ষে সেই সবের বিরূপ প্রভাব কাটিয়ে ওঠা কঠিন হবে না।’’ কোন কোন ক্ষেত্র ভাল করবে, এই প্রশ্নের উত্তরে বিনয়বাবু বলেন, “আমার বাজি আবাসন, ব্যাঙ্ক এবং পরিকাঠামো।’’