ঘোষণা হয়েছিল আগেই। মঙ্গলবার সরকারি সিলমোহর পড়ল বরিষ্ঠ পেনশন বিমা যোজনা, ২০১৭-তে।
নোট বাতিলের ধাক্কা সামলাতে ২০১৬ সালের শেষ বেলায় একগুচ্ছ প্রকল্পের কথা ঘোষণা করেন নরেন্দ্র মোদী। এর অন্যতম ছিল, ষাট ও তার বেশি বয়সের মানুষের জন্য এই পেনশন যোজনা। প্রবীণ নাগরিকদের মাথায় আর্থিক নিশ্চয়তার ছাতা ধরতে যা আনা হচ্ছে বলে জানিয়েছিলেন তিনি। এ দিন প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে সেই প্রকল্পই চালুর অনুমতি মিলল। সামাজিক সুরক্ষা ও সকলের দরজায় আর্থিক সুবিধা পৌঁছে দেওয়ার যে-দায় সরকারের উপর বর্তায়, তার অঙ্গ হিসেবে বাস্তবায়িত হবে এটি।
বরিষ্ঠ পেনশন বিমা যোজনায় ১০ বছর ৮% হারে নিশ্চিত আয়ের ব্যবস্থা করবে রাষ্ট্রায়ত্ত এলআইসি। কমতে থাকা সুদের জমানায় যাকে বয়স্কদের আর্থিক সুরক্ষার গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার হিসেবে তুলে ধরছে সরকারি মহল।
এ দিন সরকারি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, প্রকল্পটিতে ১০ বছর ধরে বার্ষিক ৮% নিশ্চিত আয়ের উপর ভিত্তি করে পেনশন দেওয়া হবে। টাকা মাসে মাসে বা তিন মাস অন্তর নিতে পারবেন গ্রাহক। আবার চাইলে ছ’মাসে বা বছরেও নেওয়া যাবে। পেনশনভোগী সুবিধা মতো সেই সময় বাছতে পারবেন। তবে পেনশনের পুরো টাকা এলআইসি দেবে না। তহবিলটি লগ্নি করে বছরে সংস্থার আয় ৮ শতাংশের কম হলে সেই ফারাক ভর্তুকি দিয়ে পূরণ করবে কেন্দ্র।
সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি, ব্যাঙ্ক-ডাকঘরের সুদ কমতে শুরু করেছে। আগামী দিনে আরও নামবে। তাই অনিশ্চিত বাজারে প্রবীণ নাগরিকদের আর্থিক ও সামাজিক সুরক্ষা জোগাতে এলআইসি-র মাধ্যমে বরিষ্ঠ পেনশন বিমা যোজনা আনা হল, যা কার্যকর হবে চলতি অর্থবর্ষেই। প্রকল্প চালুর দিন থেকে এক বছর তাতে লগ্নি করা যাবে।
প্রসঙ্গত, গত ৮ নভেম্বর নোট নাকচের কথা জানানোর সময়ে মোদী কথা দিয়েছিলেন, ৩০ ডিসেম্বরের মধ্যে আমজনতার দুর্ভোগ মিটবে। নইলে চার মাথার মোড়ে দাঁড়িয়ে তাঁদের সাজা মাথা পেতে নেবেন তিনি। কিন্তু ৫০ দিন কাটার পরেও দুর্ভোগ ঘোচেনি। তাই ৩১ ডিসেম্বরই সাধারণ মানুষের ক্ষোভ আর আসন্ন নির্বাচনী লড়াইয়ের কথা মাথায় রেখে তড়িঘড়ি একগুচ্ছ জনমোহিনী প্রকল্প ঘোষণা করেন তিনি। যা সাধারণত বাজেটের জন্য তোলা থাকে! এরই অন্যতম একটি ছিল এই পেনশন প্রকল্প।
এ বার দেখার আগামী দিনে প্রকল্পটি প্রবীণ নাগরিকদের মাথায় আর্থিক সুরক্ষার ছাতা ধরতে পারে কি না।