প্রতীকী ছবি।
পানিট্যাঙ্কি দিয়ে নেপালে, চ্যাংরাবান্ধা দিয়ে বাংলাদেশে এবং জয়গাঁ দিয়ে ভুটানে পণ্যবাহী ট্রাক ঢোকায় রাজ্য প্রশাসন উদ্বিগ্ন। বিশেষ করে গত রবিবার থেকে পানিট্যাঙ্কি সীমান্তে নিয়ন্ত্রণ চালু হওয়ায় ট্রাকগুলিতে দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। তাতে উদ্বেগ বেড়েছে। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, ফেরার সময়ে যাতে ট্রাকচালকরা বিহার দিয়ে ফেরেন, তাঁদের সেই প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, ট্রাক চলে গেলে গোটা এলাকা স্যানিটাইজড করা হবে।
এর মধ্যে পানিট্যাঙ্কিতে আটকে পড়া নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের ট্রাকগুলি নিয়ে জটিলতা কিছুটা কেটেছে। গত রবিবার বিকেল থেকে নেপালগামী শতাধিক ট্রাক আটকে পড়েছিল। আবার ও-পার থেকে মালপত্র দিয়ে ফেরত আসার ট্রাকগুলিও নেপালের কাঁকরভিটার দিকে দাঁড়িয়ে ছিল। ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, প্রশাসন, পুলিশের একাংশের অসহযোগিতার জন্য এমন পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে। সংক্রমণ রুখতে জীবাণুনাশ, পরিচ্ছন্নতার কথা বলা হচ্ছে। কিন্তু ট্রাক আটকানোর কোনও সরকারি নথি দেওয়া হচ্ছে না।
মঙ্গলবার সমস্যা নিয়ে পুলিশ-প্রশাসন, সীমান্তে মোতায়েন এসএসবি, ট্রাকমালিক এবং ব্যবসায়ীদের বৈঠক হয়। দার্জিলিং জেলা পুলিশের ডিএসপি (গ্রামীণ) অচিন্ত্য গুপ্ত বৈঠকে ছিলেন। সকাল থেকে পরিস্থিতির উপর নজর রাখেন শিলিগুড়ির মহকুমাশাসক সুমন্ত সহায়ও। সন্ধ্যায় ঠিক হয়, মঙ্গলবার রাতে দুই পারের মধ্যে ট্রাক যাতায়াত করবে। এ-পারের ট্রাক মাল নিয়ে রাতের মধ্যে নেপালে ঢুকে যাবে। ওপারে ৪৮ ঘণ্টা ধরে আটকে থাকা ট্রাকগুলি রাতে ভারতে চলে আসবে। তাতে সীমান্তের দু’পাশে আর ট্রাক চালকদের সারি দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে হবে না। মহকুমাশাসকও বলেন, ‘‘কোনও সমস্যা হওয়ার কথা নয়।’’
সরকারি সূত্রের খবর, নেপালে নিত্য পণ্যের রফতানি চালু থাকলেও তা এ ক’দিনে অনেক কমেছে। আগে রোজ শয়ে শয়ে ট্রাক গেলেও এখন সংখ্যাটা হাতে গোনা হয়েছে। সরকারি অফিসারেরা চাইছেন, সীমান্ত বাণিজ্য যত কম হয় ততই ভাল। কারণ, সীমান্ত খোলা থাকা মানেই ট্রাকচালক, খালাসি যাতায়াত করছেন। সীমান্তের দরজা স্যানিটাইজড করা হলেও রোগ সংক্রমণের আশঙ্কা থাকেই। ট্রাকের গতিবিধি বন্ধ করা না হলেও নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। রবিবার থেকে এই অলিখিত নিয়মে ট্রাকের যাতায়াত বন্ধ হয়ে যায়। যা নিয়ে ব্যবসায়ীদের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়।
ওই ব্যবসায়ীদের সংগঠনের তরফে বাবলু দে জনান, ‘‘আমাদের ব্যবসা বন্ধ সরকার করতেই পারে। সে ক্ষেত্রে সরকারি বিজ্ঞপ্তি জারি করে দিক। তা না করে গাড়ি যেতে না দেওয়াটা ঠিক হচ্ছে না। জটিলতা কাটাতে প্রশাসনের তরফে খোঁজখবর শুরু হয়, তা ভাল। কিন্তু যে ট্রাকগুলি রাতে ওপারে নেপালে গেল, সেগুলি ফেরা নিয়ে ফের সমস্যা তৈরি হবে। এটা প্রশাসনের দেখতে হবে। নইলে তো ট্রাক নিয়ে চালক, খালাসিরা পথে পড়ে থেকে বিপদে পড়বেন।’’