বাজেটের নথি নিয়ে সংসদের বাইরে নির্মলা সীতারামন। —ফাইল চিত্র
সকলেই যখন ঝিমিয়ে থাকা অর্থনীতি নিয়ে চিন্তিত, তখন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের প্রায় তিন ঘণ্টার বাজেটে এক বারও বৃদ্ধির শ্লথ গতির প্রসঙ্গ ওঠেনি দেখে বিস্মিত অসীমা গয়াল। যিনি প্রধানমন্ত্রীর আর্থিক উপদেষ্টা পরিষদের আংশিক সময়ের সদস্য। সেই সঙ্গে মোদী সরকারের দ্বিতীয় দফার প্রথম পূর্ণাঙ্গ বাজেটে সে ভাবে অর্থনীতি নিয়ে কোনও দিশা নেই বলেও তোপ দেগেছেন তিনি। তবে প্রশংসা করেছেন রাজকোষ ঘাটতির লক্ষ্যমাত্রা শিথিল করা এবং আয়করের হার সরল করার। আজ নির্মলা নিজেও জানিয়েছেন যে, ঘাটতির লক্ষ্য শিথিল করা হলেও, বাজেট তৈরির সময়ে আর্থিক দায় ও বাজেট সংক্রান্ত আইনের (এফআরবিএম) কথা মাথায় রেখেছিলেন তাঁরা।
শনিবারই প্রাক্তন অর্থসচিব সুভাষচন্দ্র গর্গের দাবি ছিল, বাজেটে সে ভাবে অর্থনীতিকে ঘুরিয়ে দাঁড় করানোর দিশা নেই। কিছুটা একই সুরে এক অনুষ্ঠানে অসীমা বলেন, ‘‘এটা অবাক করার মতো যে, প্রায় সকলেই যখন বৃদ্ধির শ্লথ গতি নিয়ে কথা বলছেন, তখন সেই শব্দটাই তিন ঘণ্টার বাজেটে এক বারও উচ্চারণ হয়নি। বলা হয়নি যে কী ভাবে সেই শ্লথ গতিকে ঠোকানো যায়।’’
যদিও একই সঙ্গে ঘাটতির লক্ষ্যকে আলগা করে আগামী দিনে বৃদ্ধিকে মাথা তোলার কিছুটা সুযোগ করে দেওয়ার চেষ্টা বাজেটে রয়েছে বলেই মত অসীমার। তিনি বলেন, ভারতের অর্থনীতির মাপ প্রায় ৩ লক্ষ কোটি ডলার। ফলে সেই তুলনায় আর্থিক দায় ও বাজেট সংক্রান্ত আইনের সুযোগ নিয়ে রাজকোষ ঘাটতির লক্ষ্য ৫০ বেসিস পয়েন্ট শিথিলের সিদ্ধান্ত কেন্দ্রের সামনে আরও বেশি ব্যয়ের রাস্তা খুলবে। তবে ২০০৮ সালের
বিশ্ব মন্দা পরবর্তী সময়ের মতো ঘাটতিকে ৪ শতাংশে পৌঁছতে দেওয়ার মতো সিদ্ধান্ত যে এ বার নেওয়া হয়নি, তারও প্রশংসা করেছেন তিনি।
আজ বাণিজ্য প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকে নির্মলাও জানিয়েছেন, কেন্দ্র ঘাটতিকে লক্ষ্যে বেঁধে রাখতে বদ্ধপরিকর। সে জন্য আর্থিক দায় ও বাজেট সংক্রান্ত আইন মেনে চলতে সব সময়েই তৈরি তাঁরা। আর সেই কারণে বাজেটে ঘাটতির লক্ষ্য শিথিল করা হলেও, ওই আইন ভাঙা হয়নি বলেও দাবি তাঁর। পাশাপাশি তিনি বলেন, অনেকেই তাঁকে বলেছেন যে বাজেট বক্তৃতা লম্বা হয়েছে। কিন্তু মানুষ তাঁকে দীর্ঘ বাজেট বক্তৃতা নয়, বরং জুলাই থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত দীর্ঘ বাজেট প্রস্তুতির জন্য মনে রাখবেন।