নোট বাতিল আর জিএসটির ধাক্কা। এই দুইয়ের সাঁড়াশি আক্রমণে জেরবার আবাসন শিল্প সুরাহা চাইছিল বহু দিন ধরেই। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ভোট বছরের অন্তর্বর্তী বাজেটে হাত উপুড় করে দেওয়া সুবিধা কতটা কাজে লাগানো যাবে, সেই সংশয় নিয়েই তাকে স্বাগত জানাল এই শিল্প।
বাজেট প্রস্তাবে ভারপ্রাপ্ত অর্থমন্ত্রী পীযূষ গয়াল জানিয়েছেন, নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্তের জন্য আবাসন তৈরি করলে আয়কর ছাড়ের সুবিধা দেওয়া হবে ২০২০ সালের মার্চ পর্যন্ত অনুমোদিত প্রকল্পগুলিকে। নির্মাণ সংস্থাগুলির আর্থিক বোঝা কমাতে অবিক্রিত ফ্ল্যাটের উপর করছাড়ের সুবিধা এক বছর থেকে বাড়িয়ে দু’বছর পর্যন্ত করা হয়েছে। এই সংস্থাগুলির সংগঠন ক্রেডাই বেঙ্গলের কর্তা নন্দু বেলানির মতে, এই সুবিধায় কিছুটা স্বস্তি পাওয়া যাবে। কারণ, দেশের আটটি শহরে সব মিলিয়ে আট লক্ষেরও বেশি ফ্ল্যাট অবিক্রিত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। বিনিয়োগ উসুল না হলেও কর গুনতে নাজেহাল হচ্ছিলেন নির্মাতারা।
যদিও সংশ্লিষ্ট শিল্পের অনেকেরই প্রশ্ন, কয়েক দিন পরেই ভোটের দামামা বেজে যাবে। ফলে বাজেটে দেওয়া সেই সুবিধা নতুন অর্থবর্ষে কতটা লাগানো যাবে, তা নিয়ে সংশয় থাকছে। তার উপরে ভোট শেষ হয়ে পূর্ণাঙ্গ বাজেট হতে হতে জুলাই মাস হয়ে যাবে। ফলে সেই সময়ে বদল আসতে পারে ঘোষণায়। তাই ক্রেতারা তার আগে ফ্ল্যাট-বাড়ি কিনতে কতটা আগ্রহী হবেন, তা নিয়েও প্রশ্ন থাকছে বলে শিল্পের মত।
অন্য দিকে, সরবরাহের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ক্রেতাদের বাজারে টানতে দ্বিতীয় বাড়ির উপর ‘নোশোনাল রেন্ট’ বা ধরে নেওয়া ভাড়ার উপরে কর দিতে হবে না বলে ঘোষণা করেছেন গয়াল। একই ভাবে মূলধনী লাভকর ছাড়ের সুবিধা পেতে একটি বাড়ি বিক্রির টাকায় দু’টি বাড়ি কেনা যাবে। তবে লাভকর ২ কোটি টাকার বেশি হওয়া চলবে না। সারা জীবনে এই সুবিধা পাওয়া যাবে এক বারই।
তার সঙ্গেই বাজেটে ঘোষণা ২.৪০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত বাড়ি ভাড়ায় উৎস কর (টিডিএস) কাটাতে হবে না। এখন তা ১.৮০ লক্ষ টাকা।
সব মিলিয়ে আবাসন শিল্পের আশা, এ সব সুযোগ-সুবিধায় ভর করে ঘুরে দাঁড়ানো সহজ হতে পারে। তবে কত দিনে? তা নিয়ে প্রশ্ন থাকছে।