—ছবি পিটিআই।
আশঙ্কার বার্তা আগেই শুনিয়েছিলেন বিশেষজ্ঞেরা। উপদেষ্টা সংস্থাগুলি প্রশ্ন তুলেছিল, সরকারের ব্যয় যে হারে বাড়ছে তাতে রাজকোষ ঘাটতির ৩.৩% লক্ষ্যমাত্রা আদপে ছোঁয়া যাবে তো? কারণ, মোদী জমানায় এর আগেও ফস্কেছে এই নিশানা। শেষমেশ সত্যি হল সেটাই। শুক্রবার ভারপ্রাপ্ত অর্থমন্ত্রী পীযূষ গয়াল জানালেন, চলতি অর্থবর্ষে রাজকোষ ঘাটতির সংশোধিত লক্ষ্য ৩.৩ শতাংশের বদলে ৩.৪%। যার অর্থ, আর্থিক শৃঙ্খলা রক্ষা করতে ফের ব্যর্থ মোদী সরকার। যদিও গয়ালের যুক্তি, চাষিদের ২০ হাজার কোটি সাহায্য দিতে না হলে ঘাটতি ৩.৩ শতাংশের অনেক কম হত।
আগামী অর্থবর্ষেও ঘাটতির লক্ষ্য ৩.৪ শতাংশে বাঁধা হয়েছে। যদিও আর্থিক শৃঙ্খলা রক্ষা সংক্রান্ত এফআরবিএম আইন অনুযায়ী ওই বছর তা ৩.১ শতাংশে নামানোর কথা। এ ক্ষেত্রেও গয়াল দেখিয়েছেন চাষিদের রোজগার খাতে সামনের বার আরও ৭৫ হাজার কোটি খরচের যুক্তি। তাঁর দাবি, না হলে ঘাটতি মাথা নামাত ৩.১ শতাংশের নীচে।
যা দেখে ফের তোপ দাগছে বিরোধীরা। বলছে, জিএসটি ও বিলগ্নিকরণ, কোনও খাতেই আয়ের লক্ষ্য পূরণ হয়নি। তাই এই অবস্থা। তাদের অভিযোগ, সরকার কৌশলে সারে ভর্তুকির খরচ আগামী বছরে ঠেলে না দিলে ঘাটতি আরও বেশি হত।
এ দিন আর্থিক বিষয়ক সচিব সুভাষচন্দ্র গর্গ জানান, রিজার্ভ ব্যাঙ্ক ও অন্যান্য ব্যাঙ্কের থেকে আরও ২৮ হাজার কোটি টাকা ডিভিডেন্ড পাওয়ার আশা কেন্দ্রের। এর আগে শীর্ষ ব্যাঙ্ক ৪০ হাজার কোটি মিটিয়েছিল ডিভিডেন্ড হিসেবে। বিরোধীদের অভিযোগ, আগে থেকেই ২৮ হাজার কোটিকে আয় হিসেবে দেখানোও আসলে একটা কৌশল। এমনকি তাদের মতে, রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা বিলগ্নিকরণ থেকে ৮০ হাজার কোটি রাজকোষে ভরার লক্ষ্য থাকলেও, উঠেছে মাত্র ৩৬ হাজার কোটি। অথচ সংশোধিত হিসেবে সেই লক্ষ্যকে ৮০ হাজার কোটিই ধরা হয়েছে। তবে বিলগ্নিকরণ সচিব অতনু চক্রবর্তীর দাবি, ‘‘প্রতি বারই অর্থবর্ষের শেষ ক’মাসে ৪০%-৫০% লক্ষ্য পূরণ হয়। আশা করা যায়, এ বারও তা হবে।’’
অর্থনীতিবিদ প্রসেনজিৎ বসুর বক্তব্য, মনরেগা, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা বা স্বচ্ছ ভারত মিশনের মতো প্রকল্পের খরচও সুকৌশলে ২০১৭-১৮ সালের বাজেট বরাদ্দের থেকে কাটা হয়েছে। যাতে বিপুল খরচ সত্ত্বেও ঘাটতি সামান্য বেশি দেখায়।
এ ভাবে খরচ যে অনেক সময় এড়ানো হয় তা অবশ্য মেনেছেন গর্গ। তবে গয়ালের দাবি, ইউপিএ সরকারের অর্থমন্ত্রী চিদম্বরমের হাত ধরে মোদী সরকারের পিঠেও ১,১৬,০০০ কোটি টাকার বোঝা চেপেছিল। এক পদ এক পেনশনের ঘোষণা করলেও, বরাদ্দ করেছিল মাত্র ৫০০ কোটি।