ফাইল চিত্র।
আর্থিক সঙ্কটে ধুঁকতে থাকা রাষ্ট্রায়ত্ত টেলি সংস্থা বিএসএনএলকে ঘুরিয়ে দাঁড় করানোর জন্য পুনরুজ্জীবন প্রকল্প এনেছিল কেন্দ্র। সেই প্রকল্প অনুসারেই সংস্থা তার পড়ে থাকা জমি-বাড়ির মতো সম্পত্তি থেকে বিকল্প আয়ের পথ খুলে টিকে থাকার চেষ্টা চালাচ্ছে। এমন অবস্থায় টেলিকম দফতর (ডট) সেই সব সম্পত্তির বেশ কয়েকটি ফেরানোর সিদ্ধান্ত নিতেই দানা বেঁধেছে ক্ষোভ।
সংস্থার কর্মী-অফিসারদের সংগঠনগুলির যৌথ মঞ্চ এইউএবি-র অভিযোগ, বিএসএনএল তৈরির সময় এই সম্পত্তি হস্তান্তর করেছিল কেন্দ্রীয় সরকার। এত দিন ধরে দায়িত্ব সামলানোর পরে এ বার যখন পায়ের নীচের জমি পোক্ত করতে সেগুলিকে কাজে লাগাচ্ছে সংস্থা, তখন তার একাংশ ইচ্ছেমতো এবং অনৈতিক ভাবে ফিরিয়ে নিচ্ছে ডট। এর প্রতিবাদে আন্দোলন শুরু করেছে তারা।
বেসরকারি ক্ষেত্র মোবাইল পরিষেবা চালুর দীর্ঘ দিন পরে সেই ব্যবসায় পা রাখে বিএসএনএল। ফলে প্রতিযোগিতার বাজারে গোড়া থেকেই পিছিয়ে ছিল তারা। ৪জি প্রযুক্তি ক্ষেত্রেও ফের পিছনে পড়ে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাটি। প্রতিদ্বন্দ্বীরা যখন ৫জি নিয়ে ভাবছে, তখন আগের ধাপটাতেই ঠিক মতো উঠতে পারেনি তারা। যে কারণে এর আগে বিএসএনএলের প্রতি অবহেলার অভিযোগ তুলে সরকারকে দুষেছে কর্মীদের একাংশ। আর্থিক সঙ্কটের জন্যও দায়ী করেছে তাদের। কেন্দ্রের অবশ্য দাবি, টিসিএসের সঙ্গে যৌথ ভাবে দেশীয় ৪জি প্রযুক্তি আনার প্রায় দোরগোড়ায় বিএসএনএল।
এমন পরিস্থিতিতে আড়াই বছর আগে কেন্দ্রের পুনরুজ্জীবন প্রকল্প অনুসারেই উদ্বৃত্ত জমি-বাড়ির মতো সম্পত্তির একাংশ বেচে বা ভাড়া দিয়ে বিকল্প আয়ের প্রক্রিয়া শুরু করেছে বিএসএনএল। কিন্তু এইউএবি-র অভিযোগ, ডট সংস্থার বিভিন্ন সার্কলের সম্পত্তি ইচ্ছে মতো নিয়ে নিচ্ছে।
যেগুলি কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত মতো ২০০০ সালে সংস্থা গঠনের সময় তাদের হস্তান্তর করা হয়েছিল। এইউএবি-র আহ্বায়ক পি অভিমন্যু জানান, এ ভাবে সম্পত্তি নেওয়ার তীব্র বিরোধিতা করছেন তাঁরা। উত্তরপ্রদেশের গাজিয়াবাদে সংস্থার প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের বিপুল সম্পত্তি সম্প্রতি ফেরানোর নির্দেশ দেয় ডট। এইউএবি আন্দোলন শুরু করায় সেই প্রক্রিয়া এখন স্থগিত। কিন্তু রাষ্ট্রপতি সায় দেওয়া নির্দেশ বাতিল হয়নি। তাই আন্দোলন চালিয়ে যাবেন তাঁরা।
সংস্থার বিভিন্ন সূত্রের বক্তব্য, গোড়া থেকেই সেই সব সম্পত্তির দায় নিতে হয়েছে বিএসএনএল-কে। বেশ কিছু সম্পত্তি হস্তান্তরের ক্ষেত্রে বকেয়া দায়ও মেটাতে হবে তাদেরই। প্রশ্ন উঠেছে, নতুন করে যখন ঘুরে দাঁড়ানোর পথে হাঁটছে সংস্থা, তখন কেন তারা নিজের সম্পত্তিকে ঠিক মতো কাজে লাগানোর সুযোগ পাবে না? তা হলে কেন্দ্রের আর্থিক ত্রাণ প্রকল্প-সহ পুনরুজ্জীবন পরিকল্পনার সদিচ্ছা নিয়েও প্রশ্ন ওঠে না কি?