স্রেফ একটা মোবাইল ফোন মুঠোয় থাকলেই ২৪ ঘণ্টা চোখের সামনে হাট করে খোলা গোটা দুনিয়ার দরজা। আর কথা বলার চৌকাঠ পেরিয়ে এখন সেই দরজা খোলা নিয়েই হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে সামিল টেলিকম শিল্প। সম্প্রতি কম খরচে নেটে তথ্য আদান-প্রদানের সুবিধা এনে মুকেশ অম্বানীর রিলায়্যান্স-জিও সেই যুদ্ধে নতুন ইন্ধন জুগিয়েছে। এ বার সেই প্রতিযোগিতার বাজারে পাল্লা দিতে নিজেদের মোবাইল ব্রডব্যান্ড পরিষেবার ক্ষমতা প্রায় দ্বিগুণ বাড়ানোর পথে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা বিএসএনএল।
গত মাসে জিও-র পরিষেবার আনুষ্ঠানিক অভিষেকের দিন মুকেশ নেট মারফত তথ্য (ডেটা) আদান-প্রদানের বিপুল বাজারে ‘ডেটাগিরি’ কায়েমের কথা বলেছিলেন। রবিবার তাঁর সংস্থার দাবি, গত এক মাসেই জিও-র গ্রাহক ১.৬ কোটি ছাড়িয়েছে। টেলিকম দুনিয়ায় যা এর আগে কখনও হয়নি। এমনকী এ ক্ষেত্রে ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ ও স্কাইপকে-ও পিছনে ফেলে দেওয়ার দাবি করেছে তারা। যে কারণে এ দিনও মুকেশ বলেন, ‘ডেটা’র হাত ধরে দেশের নাগরিকদের ক্ষমতা বাড়ানোই জিও-র লক্ষ্য। টেলিকম শিল্পে জিও-র প্রবেশ অন্য সংস্থাগুলিকে ইন্টারনেট পরিষেবার মাসুল হার নিয়ে নতুন করে ভাবতে বাধ্য করেছে। ইতিমধ্যে তা ছেঁটেছে প্রায় সকলেই। বিএসএনএলের সিএমডি অনুপম শ্রীবাস্তবও জানিয়েছিলেন, প্রতিযোগিতার বাজারে টিকে থাকতে হলে জিও-র মতো আগ্রাসী হওয়া ছাড়া উপায় নেই।
সেই আগ্রাসী হওয়ার পথে এগোতেই এ বার গ্রাহকদের আরও বেশি নেট ব্যবহারের সুযোগ দিতে চাইছে বিএসএনএল। তার জন্য পরিষেবা দেওয়ার ক্ষমতা বাড়াচ্ছে তারা। শ্রীবাস্তব বলেন, ‘‘আমাদের পরিষেবায় নেটের ব্যবহার দ্রুত বাড়ছে। তাই উন্নত থ্রিজি পরিষেবা দিতে দক্ষিণাঞ্চলে ক্ষমতা দ্বিগুণ বাড়িয়ে মাসে ৬০০ টেরাবাইট করব। দেশের অন্যান্য জায়গায় তা বেড়ে হবে ৪৫০ টেরাবাইট। নভেম্বরের মধ্যে পরিকল্পনা কার্যকর হবে।’’ উল্লেখ্য, এক টেরাবাইট ১০০০ গিগাবাইটের (জিবি) সমান।
সম্প্রতি বিএসএনএল ১,০৯৯ টাকায় যত খুশি নেট ব্যবহারের থ্রিজি প্রকল্প এনেছে। এটি চালুর পর তাঁদের গ্রাহকরা বেশি নেট ব্যবহার করছেন বলে দাবি শ্রীবাস্তবের। তিনি জানান, ২০১২ সালে মাসে যেখানে সার্বিক ভাবে বিএসএনএল গ্রাহকদের নেটের ব্যবহার ছিল ৮০ টেরাবাইট, গত জুলাইতে তা হয়েছিল ২৭৯ টেরাবাইট। এখন আরও বেড়ে ৩৫৩ টেরাবাইট।