প্রতিদ্বন্দ্বীরা যখন নতুন গ্রাহকের খোঁজে আগ্রাসী হয়ে রাস্তায় নেমেছে, তখন বিএসএনএল অপেক্ষা করেছে কখন কেউ মোবাইলের সিম নিতে হাজির হবেন তাদের দফতরে। ফলে ক্রমাগত বাজার হারিয়েছে তারা। শেষে উপায়ন্তর না দেখে গ্রাহকের কাছে তাদের সিম পৌঁছতে পথে নামতে কার্যত বাধ্য হয় কলকাতা ও সংলগ্ন এলাকার দায়িত্বে থাকা বিএসএনএলের শাখা ক্যালকাটা টেলিফোন্স (ক্যাল-টেল)। আর তাতেই ফল মিলল হাতেনাতে। সিম বিক্রি বাড়ল পাঁচ গুণেরও বেশি।
বিএসএনএলের পরিষেবার মান নিয়ে গ্রাহকদের ক্ষোভের অন্ত নেই। সিগন্যাল সমস্যা আছে। উপরন্তু অভিযোগ, সিম সব সময় মেলে না গ্রাহক পরিষেবা কেন্দ্রে। বেসরকারি সংস্থা যেখানে দ্রুত নতুন সংযোগ চালু করে, সেখানে বিএসএনএলের সিম চালু হতে অনেক সময় লাগে। এ সব কারণে প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে গিয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাটি।
বাজার হারিয়ে দেওয়ালে প্রায় পিঠ ঠেকার পরে অবশেষে ঘুরে দাঁড়াতে গ্রাহকদের কাছে পৌঁছনোর সিদ্ধান্ত নেয় ক্যাল-টেল। বড় আবাসন, আধুনিক মল-সহ ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় সিম বিক্রি ও নয়া সংযোগ দেওয়ার অস্থায়ী শিবির চালু করে। কর্মীদের দফতরের চার দেওয়ালের বাইরে এনে সেগুলি পরিচালনার ভার দেয়। সংস্থার সিজিএম এস পি ত্রিপাঠি নিজেও ‘রোড শো’-তে অংশ নেন। ফলে বিএসএনএলের ‘ফ্র্যাঞ্চাইজি’ নেওয়া বেসরকারি সংস্থাগুলিও একই সঙ্গে ব্যবসা বাড়াতে উদ্যোগী হয়। সব মিলিয়ে জুন থেকেই ধাপে ধাপে বাড়তে থাকে বিক্রি। ২০১৬ সালের এপ্রিলে ১৫৪টি ক্যাম্প ও রোড শো করে ৯,০৬৮টি নতুন সংযোগ দেওয়া গিয়েছিল। সেখানে গত মার্চে ১৪১৬টি ক্যাম্প ও রোড শো করে সংযোগ দেওয়া হয়েছে ৪৮,৬২৭টি।
সিজিএম জানান, কোনও এলাকার ২-৩ কিলোমিটারের মধ্যে সিম পৌঁছে দেওয়াই একটি শিবিরের লক্ষ্য। ক্যাল-টেলের জিএম (বিক্রি ও বিপণন) এস এন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সিম দিতে লোকের কাছে পৌঁছতে হবে। ২০১৭-’১৮ সালে মাসে গড়ে ৫০ হাজার সিম বিক্রি ও সংযোগ দেওয়া লক্ষ্য।’’ তাঁদের দাবি, আধার নম্বরের ভিত্তিতে দ্রুত সংযোগ দিতে নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় টেলিকম দফতর ও সুপ্রিম কোর্ট। বিএসএনএল-ও তা চালু করেছে।