বিএসএনএল। ফাইল চিত্র।
দীর্ঘ দিন ধরে বিএসএনএলের পরিকাঠামো উন্নয়নে লগ্নি থমকে ছিল। সাম্প্রতিক কালে ব্যাটারি, অপটিক্যাল ফাইবার কেব্ল, সংবহনের যন্ত্রাংশ-সহ টেলিকম পরিষেবার আনুষঙ্গিক বিভিন্ন পণ্যের বরাত দেওয়ার পরে পর্যায়ক্রমে সে সবের জোগান শুরু হয়েছে বিভিন্ন শাখায় (সার্কল)। এই পরিস্থিতিতে নীচের স্তরে সংস্থার সার্বিক অবস্থা পর্যালোচনা করতে সম্প্রতি কলকাতায় দু’দিনের ঝটিকা সফরে এসেছিলেন রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিকম সংস্থাটির সিএমডি পি কে পুরওয়ার। তাঁর স্পষ্ট বার্তা, এ বার পরিকাঠামো উন্নতির পরে পরিষেবা পুরোদমে চালু রাখতে আগাম সক্রিয় থাকতে হবে। যান্ত্রিক ত্রুটি বা কেব্লের কারণে তা বিঘ্নিত হলে শহরে চার ঘণ্টায় এবং গ্রামীণ এলাকায় ছ’ঘণ্টায় চালু করতে হবে। রাজ্যের মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদীর সঙ্গে বৈঠকে কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত মতো বিশেষ তহবিলের অর্থে গ্রামে ৪জির পরিকাঠামো গড়ার জন্য জায়গা দেওয়ার আর্জিও জানান তিনি।
সংস্থার শীর্ষ কর্তা হিসেবে পুরওয়ার বিভিন্ন রাজ্য সফরে যান। সূত্রের খবর, গত মঙ্গল ও বুধবার কলকাতায় এসে ক্যালকাটা টেলিফোন্স, ওয়েস্ট বেঙ্গল সার্কল এবং ট্রান্সমিশন বা সংবহনের দায়িত্বে থাকা শাখার সিজিএম এবং পদস্থ কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি। দেখা করেন কর্মী সংগঠনের সঙ্গেও।
সংস্থা সূত্র বলছে, পরিকাঠামো উন্নয়নে দীর্ঘ দিন টাকা না মেলায় শাখাগুলি পরিষেবা বিঘ্নিত হওয়ার দায় বিএসএনএলের সদর দফতরের উপরে চাপাত। সম্প্রতি উন্নয়নের লক্ষ্যে বরাত দেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে। মাস তিন-চারেকের মধ্যে যন্ত্রের জোগান সম্পূর্ণ হওয়ার আশা। পুরওয়ার বলেছেন, সেগুলি হাতে এলে শাখাগুলিকে দ্রুত কার্যকর করতে হবে। তার পরে অর্জন করতেই হবে পরিষেবার মাপকাঠি ৯৯.৫% পূরণের লক্ষ্যমাত্রা। কারণ পরিকাঠামোয় ঘাটতির কথা বলার সুযোগ থাকছে না। শাখাগুলির আর কী প্রয়োজন, তা-ও জেনে নেন তিনি।
বৃহত্তর কলকাতা বাদে রাজ্যের বাকি জেলার দায়িত্বে থাকা ওয়েস্ট বেঙ্গল সার্কলেই শুধু চুক্তির ভিত্তিতে ঠিকাদার নিয়োগের নতুন নিয়ম চালু হয়নি কর্মী ইউনিয়নের একাংশের আপত্তিতে। সূত্রের খবর, ১ এপ্রিল থেকে তা কার্যকর হবে জানিয়ে পুরওয়ারের যুক্তি, এটি জাতীয় নীতি। একটি শাখার জন্য আলাদা নিয়ম হয় না। তা ছাড়া, সংস্থার সাধারণ ফোনের (ল্যান্ড লাইন) গ্রাহক বিপুল কমেছে। রাজ্যও কোনও কাজের জন্য সংস্থাকে মনোনীত করে না। বিএসএনএলকে বাজারের নিয়ম মেনে দরপত্র প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে হয়। তবে তাঁর আশ্বাস, নতুন নিয়ম চালু হলে এবং চুক্তির ভিত্তিতে এত দিন নিযুক্ত কর্মীদের বকেয়া বেতনের বিল সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার দিলে তার সবটাই মেটানো হবে।
রাজ্য সার্কলের সিজিএম মধু অরোরা জানান, শাখার পরিষেবার মানোন্নয়ন খতিয়ে দেখেন তিনি। আয় বৃদ্ধিতে জোর দেন। তাঁরও বক্তব্য, রাজ্যের সরকারি দফতরে পরিষেবার দরপত্রে অংশ নিতে হওয়ায় সেই খাতে শাখার আয় ৬০-৭০% কমেছে।
৪জি নিয়ে পুরওয়ারের আশা, পঞ্জাবে ২০০টি বিটিএসে (টাওয়ার-সহ আনুষঙ্গিক পরিকাঠামো) দেশীয় প্রযুক্তি নির্ভর এই পরিষেবা ১৫ এপ্রিলের মধ্যে চালু হবে। আরও এক লক্ষ বিটিএসের জন্য ওই প্রযুক্তির যন্ত্রের বরাতের ছাড়পত্র কেন্দ্রের তরফে এপ্রিল বা মে-র শেষে মিলবে।