প্রতীকী ছবি।
এ মাসের মধ্যেই বিএসএনএলের প্রায় ৭৮ হাজার কর্মী-আধিকারিক স্বেচ্ছাবসর (ভিআরএস) নিচ্ছেন। খরচ ছেঁটে ঋণের ভারে ধুঁকতে থাকা সংস্থাকে চাঙ্গা করার অন্যতম অঙ্গ যে পদক্ষেপ। এ বার সেই অবসরপ্রাপ্তদের জন্যই কাজের ব্যবস্থা করার কথা জানাল রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিকম সংস্থাটি। তবে কর্তৃপক্ষের নির্দেশ অনুসারে, শুধু ভিআরএস নেওয়া কর্মীরা নন, স্বাভাবিক নিয়মে যাঁরা অবসর নিচ্ছেন ওই বিকল্প কর্মসংস্থানের সুবিধা পাবেন তাঁরাও। সব মিলিয়ে অবসরপ্রাপ্ত কর্মীদের কমিশনের ভিত্তিতে সংস্থাটির পণ্য ও পরিষেবা বিক্রির জন্য সহযোগী ডিস্ট্রিবিউটর হিসেবে নিয়োগ করতে চায় বিএসএনএল।
সংস্থা সূত্রের খবর, এখন তাদের প্রি-পেড ও পোস্ট-পেড পরিষেবার সিম বিক্রির পাশাপাশি মোবাইলের মাধ্যমে রিচার্জের (সি-টপ-আপ) পরিষেবা দেওয়ার মূলত দু’টি মডেল রয়েছে। এক, ডিরেক্ট সেলিং এজেন্ট— যাঁরা সরাসরি সংস্থার হয়ে কমিশনের ভিত্তিতে বাইরে পণ্য ও পরিষেবা বিক্রি করেন। দুই, অনেকে সংস্থাটির ‘ফ্র্যাঞ্চাইজ়ি’ নিয়ে সেই পণ্য-পরিষেবা বেচতে নিজস্ব রিটেলার বা খুচরো বিক্রেতা নিয়োগ করেন। সংস্থার বক্তব্য, ডিরেক্ট সেলিং এজেন্ট কম। সেই ঘাটতি পূরণ করতে চায় তারা। তাই ওই অভিজ্ঞ অবসরপ্রাপ্ত কর্মীরা চাইলে তাঁদের ফ্র্যাঞ্চাইজি-রিটেলার মডেলের ধাঁচে সিম বিক্রি বা রিচার্জ পরিষেবা দেওয়ার মতো কাজে নিয়োগ করতে চায় তারা। কমিশন যথাক্রমে রিটেলার মডেলের ৯০% ও ৭০%। সম্প্রতি সংস্থার কর্পোরেট অফিসের জিএম (সেলস) কার্তিকেয় সিন্হা সব সার্কলের সিজিএমদের চিঠি দিয়ে জানিয়েছেন সেই পরিকল্পনায় ছাড়পত্র মেলার কথা।
সংশ্লিষ্ট মহলের প্রশ্ন, রিটেলারের চেয়ে কমিশন কম কেন? সংস্থার একাংশের যদিও যুক্তি, ডিরেক্ট সেলস এজেন্টের থেকে তো বেশি!
পরিকল্পনা
• অবসরপ্রাপ্ত কর্মীদের কমিশনের ভিত্তিতে সংস্থার পণ্য ও পরিষেবা বিক্রির জন্য সহযোগী ডিস্ট্রিবিউটর হিসেবে নিয়োগ করতে চায় বিএসএনএল।
• সেই পরিকল্পনায় (বিএসএনএল রিটার্য়াড এমপ্লয়ি অ্যাসোসিয়েট ডিস্ট্রিবিউটর সেলস বা ব্রেডস) ছাড়পত্র মিলেছে।
• ইতিমধ্যেই ইচ্ছুকদের তালিকা তৈরির নির্দেশ দিয়েছেন বিএসএনএল কর্তৃপক্ষ।
• ওই কর্মীরা মোবাইলের প্রি-পেড ও পোস্ট-পেড সিম বিক্রির কাজ করলে ফ্র্যাঞ্চাইজ়ি-রিটেলার মডেলে (বিএসএনএলের ফ্র্যাঞ্চাইজ়ি নিয়ে খুচরো বিক্রেতা নিয়োগ করে যিনি কাজ চালান) যে কমিশন দেওয়া হয়, তার ৯০% পাবেন।
• গ্রাহককে মোবাইল মারফত রিচার্জ (সি-টপ-আপ) করালে কমিশন মিলবে ওই মডেলের ৭০%।
এ দিকে, ভিআরএস কার্যকরের দু’দিন বাকি। কিন্তু এখনও সংস্থায় ডিসেম্বরের বেতন হয়নি। জানুয়ারির বেতনও ঠিক সময়ে মিলবে কি না, সংশয়ে কর্মী মহল। প্রশ্ন উঠছে, ভিআরএস নেওয়ার পরেও কর্মী-আধিকারিকদের বেতন বকেয়া থাকার ঘটনা কোনও রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থায় কখনও ঘটেছে কি? বুধবার বিএসএনএল এমপ্লয়িজ় ইউনিয়নের প্রেসিডেন্ট অনিমেষ মিত্র বলেন, ‘‘শুধু স্থায়ী নন, ঠিকা কর্মীদের বেতনও বাকি। ৩১ জানুয়ারির মধ্যে সকলেরই দু’মাসের বেতন না-হলে ১ ফেব্রুয়ারি সিজিএম এবং জেলাগুলির জিএমের দফতরে বিক্ষোভ দেখানো হবে।’’ সংস্থার একাংশ অবশ্য বলছেন, শুক্র ও শনিবার ব্যাঙ্ক ধর্মঘটের ডাক দেওয়ায় বেতন বণ্টন নিয়ে সংশয় রয়েছে।