স্বেচ্ছাবসর প্রকল্প বিএসএনএলে, বাড়ছে বহু পদ উধাও হওয়ার আশঙ্কা

এ দিন সংস্থার ডিজিএম এস এস প্রসাদ (এস্টাবলিশমেন্ট ১) দেশে সংস্থার সব সার্কলের শীর্ষ কর্তাদের এই নির্দেশিকা পাঠিয়েছেন। সূত্রের খবর, কর্মী-আধিকারিকদের জন্য সংস্থার নিজস্ব পোর্টালেও তা দেওয়া হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৫ নভেম্বর ২০১৯ ০৪:০২
Share:

—ফাইল ছবি

কথা ছিল। অনুমোদনও মিলেছে। সেই অনুযায়ী সোমবার রাতে আনুষ্ঠানিক ভাবে স্বেচ্ছাবসর প্রকল্প (ভিআরএস) ঘোষণা করে দিল বিএসএনএল। জানাল, কারা কী ভাবে তাতে শামিল হতে পারেন, কত দিনের মধ্যে। পুনরুজ্জীবন প্রকল্পের অঙ্গ হিসেবে পরে বিএসএনএলের সঙ্গে মিশবে যে সংস্থা, সেই এমটিএনএল-ও ভিআরএস এনেছে এ দিন। তবে সংশ্লিষ্ট মহলের একাংশের অভিযোগ, ভিআরএস মারফত কেন্দ্র আসলে রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিকম সংস্থা দু’টিতে বিপুল সংখ্যক পদের অবলুপ্তি ঘটাতে চলেছে। যা দেশের কর্মসংস্থানের বাজারে বিরূপ প্রভাব ফেলবে।

Advertisement

এ দিন সংস্থার ডিজিএম এস এস প্রসাদ (এস্টাবলিশমেন্ট ১) দেশে সংস্থার সব সার্কলের শীর্ষ কর্তাদের এই নির্দেশিকা পাঠিয়েছেন। সূত্রের খবর, কর্মী-আধিকারিকদের জন্য সংস্থার নিজস্ব পোর্টালেও তা দেওয়া হয়। সংস্থা দু’টিকে চাঙ্গা করতে গত ২৩ অক্টোবর ৬৯,০০০ কোটি টাকার পুনরুজ্জীবন পরিকল্পনায় সায় দিয়েছিল মন্ত্রিসভা। যার অন্যতম অঙ্গ ছিল ভিআরএস।

বিএসএনএল, এমটিএনএল কর্তাদের সম্প্রতি দ্রুত ভিআরএস-সহ পুনরুজ্জীবন পরিকল্পনা কার্যকর করার নির্দেশ দেন টেলিকমমন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ। সেই সূত্রে এ দিন তাঁর সঙ্গে বৈঠক করে দুই সংস্থার কর্মী ও আধিকারিকদের সংগঠন। তাদের দাবি, মন্ত্রী বার্তা স্পষ্ট— এটাই ঘুরে দাঁড়ানোর শেষ সুযোগ। বাজারে প্রতিযোগিতা বজায় রাখতে অন্তত একটি রাষ্ট্রায়ত্ত টেলি সংস্থার উপস্থিতি জরুরি বলেও দাবি করেন তিনি।

Advertisement

সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, ভিআরএসের ব্যবস্থা চূড়ান্ত হলেও প্রসাদের সঙ্গে সংগঠনগুলির বৈঠকের অপেক্ষায় ছিল সংস্থা দু’টি। কিছু বিষয়ে টেলিকম দফতরের ছাড়পত্র আসতেও বিকাল গড়ায়। সব শেষে রাতে আলাদা ভাবে প্রকল্প ঘোষণা করে তারা। অক্টোবরের বেতন অবশ্য পাননি বিএসএনএলের স্থায়ী কর্মীরা। সেপ্টেম্বরের বেতন মিলেছে দীপাবলির আগে। আর অস্থায়ীদের বেতন বকেয়া বহু দিন।

বিএসএনএল এমপ্লয়িজ় ইউনিয়ন (বিএসএনএলইইউ), অল ইন্ডিয়া বিএসএনএল এগ্‌জ়িকিউটিভস অ্যাসোসিয়েশনের (এআইবিএসএনএলইএ) মতো সংগঠন জানিয়েছে, প্রসাদ এ দিন সংস্থার দ্রুত ঘুরে দাঁড়ানো নিশ্চিত করতে বলেছেন। সেই সঙ্গে বার্তা, প্রায় দেড় লক্ষ মানবসম্পদ নিয়ে সংস্থা চলতে পারবে না। তাই ভিআরএস সফল করা জরুরি। সংগঠন দু’টির দাবি, জবাবে তারা বলেছে স্বেচ্ছাবসর বাধ্যতামূলক নয়। তাই তা যেন জোর করে চাপানো না হয়। যদিও সংগঠনগুলি সত্যিই কতটা এর বিরোধিতা করেছে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে সংশ্লিষ্ট মহলেরই একাংশ।

বস্তুত, ভিআরএসের বিজ্ঞপ্তিতে বিএসএনএল-ও প্রকল্পটির প্রচারে যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়েছে। জোর দিয়েছে কর্মী-আধিকারিকদের তা বিশদে জানানোয়। সব অফিসে কম্পিউটার ও ইএসএস ব্যবস্থা-সহ ‘হেল্প-ডেস্ক’ গড়তে বলা হয়েছে। ভিআরএসের গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্টগুলি তুলে ধরতে প্রয়োজনে সার্কল অফিস, জোনাল অফিস, জেলা অফিস বা অন্য কোনও গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় ‘বিল বোর্ড’ রাখারও নির্দেশ দিয়েছে সদর দফতর। সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি, অবসরের বয়স ৬০ থেকে কমে ৫৮ বছর হবে বলে জল্পনা চলছে। কতটা সাড়া মিলছে তার উপর নির্ভর করবে বিষয়টি।

সংবাদ সংস্থার খবর, দুই সংস্থার কাছে যন্ত্রাংশ সংস্থাগুলি পায় প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা। হুমকি, এ মাসে তা না-পেলে এনসিএলটিতে যাবে তারা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement