যে ভারত পেট্রলিয়াম কর্পোরেশনকে (বিপিসিএল) বেসরকারি হাতে তুলে দিতে চায় মোদী সরকার, তারাই সোমবার পাঁচ বছরে ১ লক্ষ কোটি টাকারও বেশি লগ্নি পরিকল্পনার কথা ঘোষণা করল। সংস্থার দাবি, পেট্রোপণ্যের উৎপাদন ক্ষমতা এবং গ্যাসের ব্যবসা বৃদ্ধি, দূষণমুক্ত জ্বালানি তৈরি ও বিপণন পরিকাঠামোকে ঢেলে সাজানোয় এই বিনিয়োগ তাদের ভবিষ্যতের জন্য তৈরি হতে সাহায্য করবে। তবে সংশ্লিষ্ট মহলের প্রশ্ন, যে সংস্থাকে বেচে দেওয়াই লক্ষ্য, তার এই মুহূর্তে এত পুঁজি ঢালার সত্যিই প্রয়োজনীয়তা আছে কি?
উল্লেখ্য, দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম এই জ্বালানি সংস্থায় নিজেদের ৫২.৯৮% শেয়ারের পুরোটা বিক্রির চেষ্টা করছে সরকার। ১.৭৫ লক্ষ কোটি টাকা বিলগ্নিকরণের লক্ষ্য ছুঁতে চলতি অর্থবর্ষেই সেই হাতবদল সারার ইঙ্গিত দিয়েছে। কবের মধ্যে তা হতে পারে, সেই প্রশ্নের জবাবে সংস্থার চেয়ারম্যান অরুণ কুমার সিংহও এ দিন কেন্দ্রের লক্ষ্যমাত্রার কথাই ফের জানিয়েছেন।
বিপিসিএলের দাবি, ভবিষ্যতে প্রথাগত জ্বালানি, বৈদ্যুতিন ও হাইড্রোজেন-চালিত কার্বনমুক্ত জ্বালানির গাড়ির সহাবস্থান দেখবে ভারত। এই লগ্নি তার জন্য প্রস্তুত থাকতেই। তবে হাইড্রোজেন জ্বালানির বাজার তৈরি হতে আরও অন্তত বছর তিনেক লাগবে বলে মত অরুণের।
তিনি বলেন, ‘‘১ লক্ষ কোটি টাকারও বেশি ঢালা হবে মূলত পেট্রোপণ্য উৎপাদনের ক্ষমতা ও তেল শোধনের দক্ষতা বাড়াতে (৩০,০০০ কোটি), গ্যাসের ব্যবসা বাড়াতে (২০,০০০ কোটি), তেল-গ্যাস খনন ও উৎপাদনে (১৮,০০০ কোটি) এবং জ্বালানি বিপণনে দক্ষতা আনতে পরিকাঠামো উন্নয়নে (১৮,০০০ কোটি)। বিকল্প শক্তি ও জৈব-জ্বালানি উৎপাদনে যথাক্রমে ৫০০০ কোটি ও ৭০০০ কোটি টাকা লগ্নির পরিকল্পনা।’’
তিনটি তেল সংস্থার তরফে ইথানল কারখানা গড়তে সম্প্রতি আগ্রহপত্র চেয়েছিল বিপিসিএল। সংস্থা কর্তাদের ইঙ্গিত, তাতে ভাল সাড়া মিলেছে। আশা, তিন সপ্তাহের মধ্যেই বিষয়টি চূড়ান্ত হবে। অরুণ জানান, মূলত ব্যক্তিগত গাড়িতে ভর করে গত বছরের চেয়ে এই সেপ্টেম্বরে দেশে পেট্রলের চহিদা ৮-৯% বেড়েছে। তবে ডিজ়েলে তা ৬%-৭% কম।