ছবি: সংগৃহীত।
বছর দুয়েক আগে ভারতে ১০,০০০ কোটি ডলার (প্রায় ৭৫ হাজার কোটি টাকা) বিনিয়োগের কথা জানিয়েছিল গুগ্ল। সিইও সুন্দর পিচাই ঘোষণা করেছিলেন, ৫ থেকে ৭ বছরে ওই টাকা এ দেশের ডিজিটাল পরিষেবায় ঢালবেন তাঁরা। সেই লক্ষ্য পূরণে আমেরিকার ইন্টারনেট সংস্থাটি রিলায়্যান্স জিয়োর পরে ভারতীয় টেলিকম ক্ষেত্রে তাদের অন্যতম প্রতিদ্বন্দ্বী এয়ারটেলেকেও সঙ্গী করল।
এ দিনের ঘোষণা অনুযায়ী, এয়ারটেলে পাঁচ বছর ধরে ১০০ কোটি ডলার (প্রায় ৭৪৫০ কোটি টাকা) লগ্নি করবে গুগ্ল। ৭০ কোটি ডলার, অর্থাৎ প্রায় ৫২১৫ কোটি টাকা ঢালবে সংস্থার ১.২৮% অংশীদারি হাতে নিতে। প্রতিটি শেয়ার ৭৩৪ টাকা দিয়ে কিনবে। বাকি ৩০ কোটি ডলার বা প্রায় ২২৩৫ কোটি টাকা দিয়ে এয়ারটেলকে ক্রেতাদের জন্য নানা রকম সস্তার প্রকল্প আনা, পরিষেবা সম্প্রসারণ, ৫জি (ভারতীয় ডোমেন তৈরি) চালুর পুঁজি জোগাবে। এ ছাড়া সম্ভাবনাময় বাণিজ্যিক চুক্তির জন্য ক্লাউড বা পেমেন্ট পরিষেবার মতো আধুনিক প্রযুক্তির আরও নানা ক্ষেত্র চিহ্নিত হতে পারে। ইতিমধ্যেই মুকেশ অম্বানীর জিয়োয় ৩৩,৭৩৭ কোটি টাকা দিয়ে ৭.৭% অংশীদারি কিনেছে গুগ্ল। তাদের জোট দেশে সস্তার স্মার্ট ফোন এনেছে। এখন অ্যান্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেম তৈরি করছে।
এক ঝলকে
দুই প্রতিদ্বন্দ্বী সংস্থায় একই সঙ্গে গুগ্লের লগ্নি নিয়ে এ দিন স্বার্থের সংঘাতের প্রশ্ন উঠেছে। তবে এয়ারটেল কর্তা ভিত্তলের জবাব, তাঁরাও অনেক সংস্থার সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধে কাজ করছে গুগ্লের মতো। আর ভারতের মতো বিরাট বাজারকে ডিজিটালে বদলাতে বহুমুখী কৌশলই পথ। সে ক্ষেত্রে কোনও বিরোধ নেই কারণ, এয়ারটেল-গুগ্ল পারস্পরিক সম্মতির ভিত্তিতে এগোবে। সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, নেট পরিষেবা হোক বা স্মার্ট ফোন, ভারতের মতো সম্ভাবনাময় এবং বিশাল বাজার গুগ্লের মতো নেট বহুজাতিকের কাছে সোনার খনি। আর সস্তার স্মার্ট ফোন বা পরিষেবা প্রকল্প সেখানে দখল বাড়ানোর হাতিয়ার। যদিও জিয়ো-গুগ্লের সস্তার স্মার্ট ফোনকে সত্যিই সস্তা বলা যায় কিনা, তা নিয়েও বিতর্ক রয়েছে।
পিচাইয়ের বার্তা, ভারতকে গুগ্লের ডিজিটাল তহবিল জোগানোর প্রকল্পেরই অঙ্গ এই লগ্নি। যাতে আরও বেশি মানুষ স্মার্ট ফোন ব্যবহার করতে পারেন, উন্নত সংযোগ এবং পরিষেবা পান। ভারতী এয়ারটেলের চেয়ারম্যান সুনীল ভারতী মিত্তলের দাবি, উদ্ভাবনী পণ্য এনে দেশের ডিজিটাল-যাত্রায় অগ্রগতির রূপরেখা তৈরি করতেই এয়ারটেল-গুগ্লের এই জোট।