কলকাতায় এক্সিস ব্যাঙ্কের একটি শাখার সামনে কর্মীদের জমায়েত। বন্ধ ব্যাঙ্ক। —নিজস্ব চিত্র
দেশ জুড়ে ব্যাঙ্ক ধর্মঘটের জেরে ব্যাহত পরিষেবা। অধিকাংশ এটিএম-ও বন্ধ। ফলে ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ গ্রাহকরা। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলির সংযুক্তিকরণের প্রতিবাদে এক দিনের ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে অল ইন্ডিয়া ব্যাঙ্ক এমপ্লয়িজ অ্যাসোসিয়েশন (এআইবিইএ) এবং ব্যাঙ্ক এমপ্লয়িজ ফেডারেশন অব ইন্ডিয়া (বিইএফআই)। তবে এই দুই সংগঠনে স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া (এসবিআই)-এর কর্মী-অফিসারদের সংখ্যা খুবই কম বলে কার্যত প্রভাব পড়েনি এই ব্যাঙ্কে। পরিষেবাও প্রায় স্বাভাবিক বলেই দাবি ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের।
১০টি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ককে জুড়ে দিয়ে চারটি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র। এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদের পাশাপাশি আরও কিছু দাবিদাওয়া নিয়ে ধর্মঘটে সামিল হয়েছে ব্যাঙ্ক কর্মী-অফিসারদের এই দুই সংগঠন। যৌথ বিবৃতিতে এআইবিইএ এবং বিইএফআই জানিয়েছে, ব্যাঙ্ক সংযুক্তিকরণ ও বেসরকারিকরণের চেষ্টা, গ্রাহকদের উপর নানা রকম চার্জ বসানো এই সবের প্রতিবাদেই ধর্মঘট। এছাড়া অনাদায়ী ঋণ আদায়, ঋণখেলাপিদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা এবং চাকরির নিশ্চয়তার দাবিও অন্যতম।
মঙ্গলবার সকাল থেকেই অধিকাংশ ব্যাঙ্কের সামনে কর্মীরা জমায়েত হয়েছেন। তবে অধিকাংশ ব্যাঙ্কের দরজা ছিল বন্ধ। ধর্মঘটে সমিল হয়েছেন এটিএম পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত কর্মীরাও। ফলে নতুন করে এটিএম-এ টাকা ভরা হয়নি। অধিকাংশ এটিএম বন্ধ। যেগুলি আগে থেকে খোলা ছিল, তার অধিকাংশেই টাকা না পাওয়ার অভিযোগ করেছেন গ্রাহকরা। ফলে ভোগান্তি বেড়েছে। সমস্যায় পড়েছেন ব্যবসায়ীরাও। তবে অনলাইন পরিষেবা চালু থাকায় কিছুটা সুরাহা হয়েছে। যদিও এসবিআই-এর অধিকাংশ শাখা খোলা ছিল।
এইবিইএ-র সভাপতি রাজেন নাগা, ‘‘ব্যাঙ্ক যেভাবে সংযুক্তিকরণ করা হচ্ছে, তাতে শুধু কর্মীরাই নয়, গ্রাহকদেরও নানা রকম সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে। এর প্রতিবাদেই ধর্মঘট ডাকা হয়েছে। এ রাজ্যে ভাল সাড়া পড়েছে। রাজ্যের প্রায় সব এটিএম বন্ধ রয়েছে। এসবিআই-এর কর্মী সংগঠনকেও আমরা আহ্বান জানিয়েছিলাম। আমাদের কাছে খবর, এ রাজ্যে অন্যান্য ব্যাঙ্ক তো বন্ধ রয়েছেই, এসবিআই-এর প্রায় ৫০ শতাংশ শাখায় কাজ হচ্ছে না। সাময়িক অসুবিধা হলেও বেসরকারিকরণের যে উদ্যোগ লক্ষ্য করা যাচ্ছে সংযুক্তিকরণের মাধ্যমে, তারই প্রতিবাদে এই ধর্মঘট।’’
ব্যাঙ্ক ধর্মঘটের পক্ষে কলকাতায় মিছিল। ছবি: পিটিআই
আরও পড়ুন: সাংসদ, বিধায়ক–সহ প্রশাসনিক কর্তারা গরহাজির, ধামাখালিতে ভেস্তে গেল রাজ্যপালের বৈঠক
আরও পড়ুন: আইএনএক্স মামলায় চিদম্বরমের জামিন, তবে থাকতে হচ্ছে ইডির হেফাজতেই
গত ৩০ অগস্ট কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী ব্যাঙ্ক সংযুক্তিকরণের ঘোষণা করেন। ১০টি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক যুক্ত করে মোট চারটি ব্যাঙ্ক গঠনের কথা জানান নির্মলা। তার পর থেকেই কর্মীদের মধ্যে ছাঁটাইয়ের আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল। সেই শঙ্কা থেকে তখনই দু’দিনের ব্যাঙ্ক ধর্মঘটের ডাক দিয়েছিল ব্যাঙ্ক কর্মীদের সংগঠন। তবে সেই সময় অর্থমন্ত্রী আশ্বাস দিয়েছিলেন, এক জনেরও চাকরি যাবে না। অন্য দাবিগুলি নিয়েও আলোচনার আশ্বাস দেন। এই প্রতিশ্রুতির পরেই ধর্মঘট প্রত্যাহার করেন কর্মীরা। কিন্তু তার পরে কেন্দ্রের তরফে কোনও সদর্থক ইঙ্গিত না মেলাতেই ফের ধর্মঘটের পথে গিয়েছিলেন ব্যাঙ্ক কর্মীরা।