— ছবি সংগৃহীত
ব্যাঙ্ক বেসরকারিকরণ আটকাতে তারা যে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে দেশ জুড়ে বড় মাপের আন্দোলনে নামবে, সেই হুঁশিয়ারি আগেই দিয়েছিল কর্মী ইউনিয়নগুলি। স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছিল, তা হবে দিল্লি সীমানায় চলা কৃষক আন্দোলনের ধাঁচে এবং তেমনই দীর্ঘমেয়াদি। সেই পরিকল্পনার নীল নকশাই তৈরি হয়ে গেল সোমবার, কলকাতায় ব্যাঙ্ক শিল্পের সংগঠনগুলির যৌথ মঞ্চ ইউনাইটেড ফোরাম অব ব্যাঙ্ক ইউনিয়নসের (ইউএফবিইউ) বৈঠকে। এরএসএস প্রভাবিত ভারতীয় মজদুর সঙ্ঘ (বিএমএস) অনুমোদিত ইউনিয়ন বাদে বাকি সবক’টির কেন্দ্রীয় নেতারা তাতে যোগ দেন। বৈঠকের পরেই সরকারের উদ্দেশে তাঁদের হুমকি, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের কর্মী-অফিসারেরা প্রয়োজনে লাগাতার ধর্মঘটের পথে যাবেন বলেই ঠিক হয়েছে। তবে সাধারণ মানুষ এবং শিল্পের কথা মাথায় রেখে সেই চূড়ান্ত পদক্ষেপ করার আগে অন্য নানা উপায় প্রতিবাদ জানানো হবে। কেন্দ্র বেসরকারি হাতে জাতীয় সম্পদকে তুলে দেওয়ার পথ থেকে সরে এলে ভাল, নয়তো টানা ব্যাঙ্ক বন্ধ করা ছাড়া উপায় থাকবে না।
অল ইন্ডিয়া ব্যাঙ্ক অফিসার্স কনফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক সৌম্য দত্ত এবং এআইবিইএ-র সভাপতি রাজেন নাগর বলেন, ‘‘আমরা চাই না ব্যাঙ্ক শিল্পে কোনও রকম সমস্যা সৃষ্টি করতে। তাই টানা ধর্মঘটে যাওয়ার আগে প্রতিবাদের একাধিক পদক্ষেপ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বৈঠকে। যে দিনই কেন্দ্র বেসরকারিকরণের সিদ্ধান্ত কার্যকর করার কথা ঘোষণা করবে কিংবা এ ব্যাপারে সংসদে বিল আনবে, সে দিনই শুরু হবে ধর্মঘট।’’
তবে শেষ পর্যন্ত যদি কেন্দ্র দাবি না-মানে? দুই নেতার জবাব, ‘‘প্রথমে একাধিক দিন ধর্মঘট করব। যেমন হয়তো টানা চার দিন। তার পরে দেখব ওরা সিদ্ধান্ত বদলায় কি না। না-বদলালে পরবর্তী ধাপে ধর্মঘটের মেয়াদ বাড়বে। প্রয়োজনে লাগাতার।’’ তবে তার আগে এখন দেশ জুড়ে প্রতিদিন বিক্ষোভ সমাবেশ চালানো হবে, জানান ইউএফবিইউ-র আহ্বায়ক গৌতম নিয়োগী।
ব্যাঙ্ক বেসরকারিকরণ রোখার আন্দোলনে আমজনতা থেকে অন্যান্য শিল্পের ইউনিয়ন এবং বিরোধী রাজনৈতিক দল, সকলকে পাশে টানার চেষ্টা করা হবে বলেও জানিয়েছেন ইউনিয়নের নেতারা। আইবকের রাজ্য সম্পাদক সঞ্জয় দাস এবং ব্যাঙ্ক এমপ্লয়িজ় ফেডারেশন অব ইন্ডিয়ার সাধারণ সম্পাদক দেবাশিস বসু চৌধুরী জানান, ‘‘পাঁচ কোটি মানুষের সই করা স্মারকলিপি জমা দেব কেন্দ্রের কাছে। এত মানুষের বিরোধিতাকে উপেক্ষা করা সহজ নয়।’’
ইউএফবিইউ-র শরিক বিএমএস অনুমোদিত কর্মী এবং অফিসারদের দু’টি ইউনিয়ন বৈঠকে যোগ দেয়নি। তারই একটি এনওবিডব্লিউ-র সাধারণ সম্পাদক উপেন্দ্র কুমারের দাবি, ‘‘এই আন্দোলনের মধ্যে রাজনীতি রয়েছে। আমরা কেন্দ্রের রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা বেসরকারিকরণ নীতির বিরুদ্ধে। কিন্তু এই যুক্তিতে অনেকে প্রধানমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রীকে ব্যক্তিগত আক্রমণ করছেন। এটাকে আমরা সমর্থন করি না।’’