—প্রতীকী চিত্র।
ব্যাঙ্কে সাইবার সুরক্ষা ব্যবস্থায় ত্রুটির ফলে যে শুধু গ্রাহকই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন, তা নয়। প্রতারিত হচ্ছে ব্যাঙ্ক নিজেও। এই অভিযোগ তুলে ব্যাঙ্কিং শিল্পে স্বাধীন সাইবার সিকিয়োরিটি অডিটর নিয়োগের দাবি জানাল ব্যাঙ্ক বাঁচাও দেশ বাঁচাও নাগরিক মঞ্চ। এ নিয়ে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর শক্তিকান্ত দাসকে চিঠি দিয়েছে তারা।
সম্প্রতি আইএমপিএস ব্যবস্থার মাধ্যমে হওয়া বৈদ্যুতিন লেনদেনে ত্রুটির ফলে ইউকো ব্যাঙ্কের বেশ কয়েক জন গ্রাহকের অ্যাকাউন্টে বাড়তি টাকা ঢুকেছে। আইএমপিএসে যে সময়ে অর্থ পাঠানো হয়, ঠিক তখনই তা প্রাপকের অ্যাকাউন্টে জমা পড়ে (রিয়েল টাইম) যায়। ইউকো ব্যাঙ্কের ক্ষেত্রে টাকা প্রেরকের অ্যাকাউন্ট থেকে না কেটে ব্যাঙ্কটির নিজের ঘর থেকেই কাটা হয়েছে। তা জমা পড়েছে প্রাপকের অ্যাকাউন্টে। যার অঙ্ক প্রায় ৮২০ কোটি। অধিকাংশ টাকাই অবশ্য পরে ফেরত আসে। বিষয়টি আইনি কর্তৃপক্ষকে জানানোও হয়। তবে এই ঘটনায় সাইবার অপরাধের আশঙ্কাও পুরোপুরি উড়িয়ে দেওয়া হয়নি। তার প্রেক্ষিতে ইতিমধ্যেই ব্যাঙ্কগুলিকে অনলাইন লেনদেনের সুরক্ষা নিয়ে আরও কঠোর হতে বলেছে কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রক।
ব্যাঙ্ক বাঁচাও দেশ বাঁচাও নাগরিক মঞ্চের দুই আহ্বায়ক সৌম্য দত্ত এবং বিশ্বরঞ্জন রায়ের অভিযোগ, ‘‘আমাদের ধারণা সাইবার হানার কারণেই এই ঘটনা ঘটেছে। আশঙ্কা সত্যি হলে বলব, ব্যাঙ্কের আর্থিক নিরাপত্তা বড়সড় ঝুঁকির মুখে। এ নিয়ে আমাদের বক্তব্য আরবিআইয়ের গভর্নরকে জানিয়েছি। সাইবার নিরাপত্তা মজবুত করতে কিছু পদক্ষেপ করার জন্যও অনুরোধ করেছি।’’
ব্যাঙ্কে অনলাইনে টাকা পাঠানোর জন্য মূলত তিনটি ব্যবস্থা চালু রয়েছে। আইএমপিএস ছাড়া বাকি দু’টি হল আরটিজিএস এবং নেফ্ট। এর মধ্যে আইএমপিএসে সর্বোচ্চ ২ লক্ষ টাকা পাঠানো যায়। বাকি দু’টিতে ঊর্ধ্বসীমা নেই। সৌম্যবাবু বলেন, ‘‘ইউকোর ক্ষেত্রে আইএমপিএসে ত্রুটি হয়েছে। এতে না হয় লেনদেনের সীমা আছে। ব্যাঙ্কের সাইবার ব্যবস্থায় ফাঁক থাকলে আরটিজিএস এবং নেফ্টের মাধ্যমে প্রতারকেরা চাইলে কয়েক হাজার কোটি টাকাও সরাতে পারে!’’ তাঁদের দাবি, সাইবার নিরাপত্তায় ত্রুটি আছে কি না, তা নিয়মিত ভাবে দেখার বিষয়টি ব্যাঙ্কের বেতনভুক অফিসার নয়, স্বাধীন ইনফর্মেশন সিকিয়োরিটি অডিটরকে দিয়ে করানোর ব্যবস্থা করুক শীর্ষ ব্যাঙ্ক।