ছবি: সংগৃহীত।
দেশের বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কগুলির কাঁধে অনুৎপাদক সম্পদের (এনপিএ) বোঝা বিপুল। করোনাকালে সংস্থাগুলিকে যে সমস্ত আর্থিক রক্ষাকবচ দেওয়া হয়েছিল, সেগুলি উঠে যাওয়ার পরে এনপিএ-র সমস্যা আরও প্রকট হতে পারে বলে মনে করছে ব্যাঙ্কিং মহল। অনেকের বক্তব্য, দেউলিয়া বিধি প্রয়োগ করেও বকেয়া উদ্ধারে প্রত্যাশিত গতি আসেনি। এই অবস্থায় এনপিএ কমাতে সরকার পরিচালিত একটি ‘ব্যাড ব্যাঙ্ক’-এর পক্ষে দীর্ঘ দিন ধরে সওয়াল করে আসছিল শিল্প-বাণিজ্য থেকে শুরু করে বিভিন্ন মহল। রবিবার ইন্ডিয়ান ব্যাঙ্কস অ্যাসোসিয়েশনের সিইও সুনীল মেহতা জানান, জুনেই কাজ শুরু করতে পারে ওই সংস্থা।
বিভিন্ন প্রথম সারির বণিকসভার পাশাপাশি, কেন্দ্রের মুখ্য আর্থিক উপদেষ্টা কৃষ্ণমূর্তি সুব্রহ্মণ্যন, রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর শক্তিকান্ত দাস, প্রাক্তন গভর্নর রঘুরাম রাজন ব্যাড ব্যাঙ্কের প্রয়োজনীয়তার কথা বলেছিলেন। সমস্ত পক্ষের দাবিকে মর্যাদা দিয়ে ২০২১-২২ অর্থবর্ষের বাজেটে এই ধরনের একটি সংস্থা তৈরির প্রস্তাব করেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। তবে এ দিন মেহতা জানান, প্রস্তাবিত সংস্থাটি রাষ্ট্রায়ত্ত এবং বেসরকারি ব্যাঙ্কগুলির যৌথ উদ্যোগে গড়ে উঠছে। তার প্রাথমিক কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘এনপিএ সমস্যার সমাধানের আগে প্রাথমিক কাজ শুরু হয়েছে। আগামী মাসে সংস্থাটি পুরো দমে কাজ শুরু করতে পারে।’’
ব্যাড ব্যাঙ্ক আদতে একটি সম্পদ পুনর্গঠন সংস্থা (এআরসি)। যা বিভিন্ন ব্যাঙ্কের এনপিএ কিনে নিয়ে সেই ঋণ উদ্ধারের চেষ্টা করবে কিংবা সেগুলি বিক্রির চেষ্টা করবে। তাতে ব্যাঙ্কগুলির হিসেবের খাতা পরিষ্কার হবে এবং উদ্ধার হবে অনাদায়ি ঋণের বড় অংশ। ২০১৭ সালের আর্থিক সমীক্ষায় প্রথমবার এই ধরনের প্রতিষ্ঠানের কথা উল্লেখ করা হয়েছিল।
তবে সংশ্লিষ্ট মহলের অনেকে মনে করিয়ে দিচ্ছেন, ব্যাড ব্যাঙ্ক বা এআরসি-র ধারণা নতুন নয়। এ দেশেই এখন ২৮টি এআরসি কাজ করছে। কিন্তু তাদের সাফল্য উল্লেখযোগ্য কিছু নয়। প্রশ্ন উঠছে, এই অবস্থায় বিধি এবং কাঠামোয় প্রয়োজনীয় সংশোধনী এনে এই সংস্থাগুলিকেই কাজে লাগানো যেত না? আবার ইউনিয়নগুলির বক্তব্য, এই প্রক্রিয়ায় যেন তেন প্রকারে ব্যাঙ্কের খাতা পরিষ্কারের আসল উদ্দেশ্য রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের বেসরকারিকরণ। তবে মেহতা বলছেন, ‘‘ব্যাঙ্কগুলি নিজেদের উদ্যোগেই সংস্থাটি তৈরি করছে। ফলে তারা অনেক বেশি দক্ষতার সঙ্গে কাজ করবে বলে আশা।’’