প্রতীকী ছবি।
প্রায় দেড় বছর ধরে চাহিদায় মন্দা। তার উপরে লেগেছে করোনার ধাক্কা। এই অবস্থায় চাহিদা বাড়াতে ও লগ্নি টানতে কেন্দ্রের কাছে বারবার জিএসটি কমানোর আর্জি জানিয়েছে গাড়ি শিল্প। কিন্তু তাতে কেন্দ্র আদৌ কতটা কান দেবে, তা নিয়ে সংশয় বাড়ছে।
সম্প্রতি টয়োটা কির্লোস্করের এক শীর্ষ কর্তা গাড়িতে চড়া করের অভিযোগ তোলেন। কিন্তু অর্থ মন্ত্রক সূত্রের দাবি, গাড়ির কর জিএসটির আগের জমানার চেয়ে কম। ফলে তার হার বেশি বা তা চাহিদাকে ধাক্কা দিচ্ছে, এমন দাবি বিস্ময়কর। বরং খরচ কমাতে বহুজাতিক সংস্থাগুলি তাদের মূল সংস্থার রয়্যালটি কাটছাঁট করুক। যে পরামর্শ আগেই দিয়েছিলেন বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গয়াল।
চাহিদা কমতে শুরু করার পরে প্রায় প্রতি মাসে জিএসটি হ্রাসের আর্জি জানায় গাড়ি শিল্প। সম্প্রতি গাড়ি সংস্থাগুলির সংগঠন সিয়ামের বার্ষিক সভায় ভারী শিল্পমন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকর আশ্বাস দেন, তিনি প্রধানমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে শিল্পের দাবি নিয়ে কথা বলবেন। কিন্তু টয়োটার অন্যতম শীর্ষ কর্তা শেখর বিশ্বনাথন চড়া করের অভিযোগ তুলে এ দেশে তাঁদের লগ্নি পরিকল্পনা স্থগিত রাখার কথা বলায় শোরগোল পড়ে যায়। পরে মন্ত্রী দাবি করেন, লগ্নি স্থগিতের খবর ঠিক নয়। তাঁকে সমর্থন করে ও কার্যত শেখরের উল্টো পথে হেঁটে সংস্থার আর এক কর্তা বিক্রম কির্লোস্কার এক বছরে দেশে ২০০০ কোটি টাকারও বেশি লগ্নির কথা জানান। বৃহস্পতিবার ফের একই আশ্বাস দেন সংস্থার এমডি মাসাকাজু ইয়োশিমুরা।
শিল্পের বক্তব্য
• দেশের গাড়ি বাজারে মন্দা আগে থেকেই। করোনা তা তীব্র করেছে।
• উৎসবে চাহিদা বাড়াতে কর হ্রাস, পুরনো গাড়ি বাতিলের নীতি জরুরি।
অর্থ মন্ত্রক সূত্রের দাবি
• জিএসটির আগের তুলনায় এখন কর কম।
• ব্যবসার সহজ পরিবেশের জন্য আসছে নতুন সংস্থা।
• খরচ কমাতে রয়্যালটি ছাঁটুক বহুজাতিক সংস্থা।
কর নিয়ে হঠাৎই এত চর্চায় অর্থ মন্ত্রক ক্ষুব্ধ বলেই ইঙ্গিত। মন্ত্রক সূত্রের দাবি, বিদেশি লগ্নিকে সুযোগ দিতে তিন দশক ধরে গাড়ি শিল্পে করের হারে ধারাবাহিকতা রাখা হয়েছে। দেশে গাড়ি তৈরিতে আর্থিক সুবিধাও মিলছে। এই কর কাঠামোতেই যে বিশ্বের অগ্রণী সংস্থাগুলির উন্নতি হয়েছে, তা তাদের মূল সংস্থাকে বিপুল রয়্যালটি (লভ্যাংশ) দেওয়া থেকেই স্পষ্ট। সূত্রের কথায়, ‘‘বরং জিএসটি কমানোর কথা না-বলে সংস্থাগুলি রয়্যালটি কমিয়ে খরচ ছাঁটুক। আর যদি ব্যবসার পরিবেশ সহজ না-হত তা হলে কিয়া মোটর, এমজি মোটরের মতো সংস্থা লগ্নি করতে আসত না।’’ সূত্রের দাবি, জাপান, ব্রিটেন-সহ বিশ্বের সর্বত্র গাড়িতে চড়া করই বসে।