রোশনাই: গ্রেটার নয়ডায় গাড়িমেলা। ছবি: এপি
বিক্রিবাটা কমা ও খরচ বৃদ্ধির চাপে পুরনো কিছু সংস্থা অংশ নিতে না-পারায় এ বার আড়েবহরে কিছুটা কমেছে গাড়িমেলা। তবে নতুন সংস্থাগুলির উপরে নির্ভর করে সেই ঘাটতি পুষিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন উদ্যোক্তারা। প্যাভিলিয়নে আলোর ছটা।
শুক্রবার থেকে মেলার দরজা খুলে দেওয়া হয়েছে সাধারণ দর্শকদের জন্য। উৎসাহীর অভাবও নেই। কিন্তু তাতে কি হাওয়া লাগবে গাড়ি বিক্রির পালে? সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, অন্তত আগামী উৎসবের মরসুম পর্যন্ত অপেক্ষা করতেই হবে। কারণ, গ্রামীণ অর্থনীতি ও পরিকাঠামো— মূলত যে দু’টি ক্ষেত্রের উপরে নির্ভর করে দু’চাকা বা চার চাকা ও বাণিজ্যিক গাড়ির বিক্রি বাড়ে, সেগুলি চাঙ্গা হতে আরও সময় লাগবে।
বৃদ্ধির হার কমা, হাতে টাকার অভাব, ঋণের সমস্যা, বিমার খরচ বৃদ্ধির জন্য ক্রেতারা আপাতত গাড়ি কেনায় বিরতি দিয়েছেন। মারুতি সুজুকির এগ্জ়িকিউটিভ ডিরেক্টর (সেলস অ্যান্ড মার্কেটিং) শশাঙ্ক শ্রীবাস্তবের মতে, ‘‘জিএসটি নিয়ে অনিশ্চয়তা, বিএস-৬ গাড়ির জন্য অপেক্ষা, নির্বাচন-সহ বিভিন্ন কারণও রয়েছে বিক্রি কমার পিছনে।’’ নিসান ইন্ডিয়ার প্রাক্তন এমডি অরুণ মলহোত্র জানালেন, ২০১৭-১৮ সালে দিল্লি, মুম্বই, বেঙ্গালুরুতে গাড়ি বিক্রি কমলেও গ্রামীণ এলাকার ব্যবসা এতটাই বেড়েছিল যে, সব মিলিয়ে দেশে গাড়ি বিক্রি বাড়ে ১০%। এ বার গ্রামীণ বাজারই আঁধারে ডুবে। মারুতি-সুজুকির এমডি কেনিচি আয়ুকায়ার ইঙ্গিত, চাহিদা না-বাড়লে গাড়ি তৈরির খরচ বৃদ্ধির কিছুটা ক্রেতার উপরে চাপতে পারে।
আরও পড়ুন: বাজেট স্তুতি অর্থমন্ত্রীর, সচিব পঞ্চমুখ কর নিয়ে
বাজার এখন
• এক বছরের বেশি সময় গাড়ির বিক্রি নিম্নমুখী।
• ২০১৮ সালের তুলনায় ২০১৯ সালে দেশে সব ধরনের গাড়ির পাইকারি বিক্রি কমেছে ১৩.৭৭%।
• সিয়ামের তথ্য, দেশে গাড়ির বাজারে ২০১৯ সালের মতো মন্দা গত ২২ বছরে দেখা যায়নি।
মেলায়
• শুক্রবার প্রায় ৭০ হাজার দর্শক এসেছিলেন।
• উদ্যোক্তাদের আশা শনি ও রবিবার এক লক্ষ ছাড়াবে।
• নতুন গাড়ি ও ভবিষ্যতের গাড়ি ভাবনা (কনসেপ্ট কার) মিলিয়ে ৭০টি গাড়ি প্রদর্শন করেছে বিভিন্ন সংস্থা।
• পেট্রল-ডিজেলের পাশাপাশি, বৈদ্যুতিক গাড়ি নিয়েও তুলে ধরেছে ভাবনা।
চাকা ঘুরবে কি?
• সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, আগামী উৎসবের মরসুমের আগে সম্ভাবনা কম।
• কারণ, গ্রামীণ অর্থনীতি ও পরিকাঠামো চাঙ্গা
হতে এখনও সময় লাগবে। যার উপরে বেশি নির্ভর করে দু’চাকা, চার চাকা ও বাণিজ্যিক গাড়ির বিক্রি।
টাটা মোটরসের যাত্রী গাড়ির বিপণন বিভাগের শীর্ষ কর্তা বিবেক শ্রীবৎসের আবার দাবি, গ্রামীণ এলাকার উন্নতি হচ্ছে। যাত্রী গাড়ির পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতির কথা বললেন সিয়ামের ডিজি রাজেশ মেনন ও শশাঙ্ক। কিন্তু কারও কাছ থেকে এখনই চাকা ঘোরার জোরালো আশ্বাস মেলেনি। রাজেশ বলছেন, ‘‘২০২০-২১ সালের দ্বিতীয় ত্রৈমাসিক অথবা তৃতীয় ত্রৈমাসিকের গোড়ায় পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে।’’