•প্রদর্শন: কলকাতায় হর্ষ বর্ধন। বুধবার। নিজস্ব চিত্র
দেশের বহু এলাকায় এখনও ব্যাঙ্ক অথবা এটিএম নেই। থাকলেও বিদ্যুতের অভাবে অনেক সময়ে পরিষেবা ব্যাহত হয়। উপরন্তু নিরক্ষর ব্যক্তির পক্ষে এটিএমের নির্দেশ পড়ে টাকা তোলাও সম্ভব নয়। রফাসূত্র খুঁজতে পরীক্ষামূলক ভাবে নতুন প্রযুক্তি নির্ভর এটিএম তৈরি করেছে কলকাতার অর্ক রিনিউয়েবল এনার্জি কলেজ। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির দাবি, কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রক তাদের এই প্রকল্পটি নীতিগত ভাবে অনুমোদন করেছে।
অর্ক রিনিউয়েবল এনার্জি কলেজের চেয়ারম্যান তথা সৌর বিজ্ঞানী শান্তিপদ গণচৌধুরির বক্তব্য, দেশে এখনও নিরক্ষরের সংখ্যা প্রায় ৩০ কোটি। কাছাকাছি এটিএম থাকলেও তার সুযোগ নিতে তাঁরা অক্ষম। তাঁদের তৈরি সৌর বিদ্যুৎচালিত এটিএম-এ (বায়ো সোলার এটিএম) আঙুলের ছাপ (বায়োমেট্রিক পদ্ধতি) দিয়ে নিরক্ষর ব্যক্তিও সহজে টাকা তুলতে পারবেন। এবং সার্বিক ভাবে এতগুলি বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন এটিএম দেশে এই প্রথম বলেও তাঁর দাবি।
বুধবার কলকাতায় এক অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী হর্ষবর্ধনের উপস্থিতিতে সেটি আনুষ্ঠানিক ভাবে প্রদর্শন করেন তাঁরা। শান্তিপদবাবু জানান, গ্রামীণ এলাকায় হিন্দি ও বাংলায় নির্দেশ দিতে সক্ষম এমন দু’টি এটিএম পরীক্ষামূলক ভাবে চালানোর জন্য আর্থিক সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী।
কী ভাবে কাজ করবে এটি?
শান্তিপদবাবু জানান, গ্রাহকের আধার তথ্য তাঁর ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্টের সঙ্গে যুক্ত থাকবে। টাকা তোলার পদ্ধতির নির্দেশ শোনার জন্য এটিএম যন্ত্রের সঙ্গে থাকবে একটি হেডফোন। গ্রাহক সেটি কানে লাগিয়ে নির্দেশ মেনে নির্দিষ্ট জায়গায় তাঁর আঙুলের টিপ-ছাপ দেবেন। তা সঠিক হলে যন্ত্রের পর্দায় তাঁর ছবি ফুটে উঠবে। গ্রাহকের অ্যাকাউন্টে কত টাকা আছে, তা তিনি শুনতে পাবেন। এরপর ২০০০, ৫০০ ও ১০০ টাকার নোটের কোনটি বা কোনগুলি যন্ত্রে রয়েছে তার ছবিও পর্দায় ভেসে উঠবে। নিরক্ষর ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে এটা বাড়তি সুবিধা। গ্রাহক কত টাকা এবং কোন নোট কত নিতে চান, তা স্পর্শের মাধ্যমে জানাবেন। এরপর ফের লেনদেন সম্পূর্ণ করার জন্য তাঁকে আঙুলের ছাপ দিতে হবে। এটি কার্যত তাঁর এটিএম ‘পিন’ হিসেবে কাজ করবে। তারপরেই সেই টাকা বেরোবে।
তবে একবারে একই অঙ্কের নোট (২০০০ বা ৫০০ বা ১০০) একটির বেশি মিলবে না। তার বেশি টাকা নিতে হলে ফের নতুন করে সবটা করতে হবে। শান্তিপদবাবু জানান, বাণিজ্যিক ভাবে এই যন্ত্র নির্মাণের জন্য ইতিমধ্যেই পুণের একটি সংস্থা প্রাথমিক ভাবে আগ্রহ দেখিয়েছে।