প্রতীকী ছবি।
শ’তিনেক টাকা বহু ক্ষেত্রে সিনেমার টিকিট কিনতেই বেরিয়ে যায়। কারও আবার এটা এক কাপ কফি খাওয়ার খরচ। টেনেটুনে চললে একাংশের সাপ্তাহিক মুদি বাজারের বাজেট। সম্প্রতি তথ্য জানার অধিকার আইনে এক প্রশ্নের জবাবে জানা গিয়েছে, এ সবের পাশাপাশি দেশের বিরাট সংখ্যক গরিব মানুষের মাসিক পেনশনের অঙ্কও ওই ৩০০ টাকাই। সরকার সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্প হিসেবে তা দেয় দরিদ্র প্রবীণ নাগরিক, স্বামীহারা মহিলা এবং বিশেষ ভাবে সক্ষম নাগরিকদের।
গ্রামীণ মন্ত্রকের ন্যাশনাল সোশ্যাল অ্যাসিসট্যান্স প্রোগ্রাম (এনএসএপি) চলে সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্প হিসেবে। এর আওতায় দারিদ্রসীমার নীচে থাকা পরিবারের মানুষদের বিভিন্ন ধরনের পেনশন প্রকল্পের সুবিধা দেয় সরকার। প্রবীণদের জন্য ইন্দিরা গান্ধী ন্যাশনাল ওল্ড এজ পেনশন স্কিম, বিধবাদের জন্য ইন্দিরা গান্ধী ন্যাশনাল উইডো পেনশন স্কিম এবং বিশেষ ভাবে সক্ষমদের জন্য ইন্দিরা গান্ধী ন্যাশনাল ডিজ়েবিলিটি পেনশন স্কিমে ২০১২ সালে শেষ বার ২০০ টাকা বেড়ে ৩০০ টাকা হয়েছিল। তার পর আর বাড়েনি।
সংশ্লিষ্ট মহলের বক্তব্য, জরুরি সমস্ত পণ্যের দাম যখন গরিব মানুষের নাগালের বাইরে চলে গিয়েছে, তখন তাঁদের জন্য বরাদ্দ সরকারি সুরক্ষা ব্যবস্থাতেই আর্থিক সাহায্যের এই হাল! তা হলে প্রকল্পের যৌক্তিকতা কী! পেনশনভোগীদের একাংশ বলছেন, মূল্যবৃদ্ধি সামলানোর মতো বেশি না হলেও টাকাটা একটু অন্তত বাড়ুক। যদিও তথ্যের অধিকারের প্রশ্নে জবাব মিলেছে, এনএসএপি-তে পেনশন বাড়ানোর প্রস্তাব নেই এখন। একাংশের আক্ষেপ, চড়া মূল্যবৃদ্ধির আবহে ওই টাকায় ওষুধ কেনা দূর অস্ত্, দশ দিনের খাবারও চলে না। ৭০-৭৫ বছর বয়সেও অনেকে দিন মজুরের কাজে নেমেছেন। কোভিডের সময় কিছু সাহায্য দিচ্ছিল অ-সরকারি সংস্থাগুলি। সেগুলি বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।
হেল্পএজ ইন্ডিয়ার নীতি সংক্রান্ত গবেষণা বিভাগের প্রধান অনুপমা দত্ত-সহ অনেক বিশেষজ্ঞের বক্তব্য, এনএসএপি-তে ন্যূনতম ৫০০০ টাকা পেনশনের ব্যবস্থা করা উচিত সরকারের। এই দাবির পক্ষে অনুপমার যুক্তি, অতিমারির কারণে বয়স্ক মানুষ এবং তাঁদের পরিবারের অনেকে আয় হারিয়েছেন। এঁরা মূলত অসংগঠিত ক্ষেত্রের কর্মী। যে ক্ষেত্র এখনও ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি। ফলে এই সব প্রবীণ নাগরিকদের ৯০ শতাংশকেই এখন বেঁচে থাকার জন্য কাজ করতে হচ্ছে।