ঋণনীতি কমিটি বৈঠকে বসছে সোমবার থেকে। ফাইল চিত্র।
রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের ঋণনীতি কমিটি বৈঠকে বসছে আজ থেকে। বুধবার জানা যাবে সুদ বাড়ল কি না কিংবা কতটা বাড়ল। এই অবস্থায় সম্প্রতি তার হার বেশি না বাড়ানোর আর্জি জানিয়ে আরবিআইকে চিঠি দিয়েছে বণিকসভা অ্যাসোচ্যাম। বলেছে, মূল্যবৃদ্ধি কিছুটা মাথা নামানোয় এ বার অর্থনীতিকে রক্ষা করতে সুদ বৃদ্ধির গতি কমানো হোক। তা যেন ২৫-৩৫ বেসিস পয়েন্টের বেশি না বাড়ে। সংবাদ সংস্থা রয়টার্স সমীক্ষায় অর্থনীতিবিদদের অবশ্য আশা, ৩৫ বেসিস পয়েন্টের বেশি বাড়ানো হবে না। ব্যাঙ্ক অব বরোদার মুখ্য অর্থনীতিবিদ মদন সবনভিসও বলছেন, শ্লথ হতে থাকা জিডিপি বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে সিদ্ধান্ত হবে। সুদ সম্ভবত ২৫-৩৫ বেসিস পয়েন্টই বাড়বে। একাংশের অবশ্য দাবি, ১০ মাস ধরে ৬% সহনসীমার উপরে খুচরো মূল্যবৃদ্ধি। ফলে আরবিআই কতটা ঝুঁকি নেবে বলা কঠিন।
সম্প্রতি আমেরিকার কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক বলেছে, মূল্যবৃদ্ধি চড়া হলেও অর্থনীতির স্বার্থে বেশি হারে সুদ বাড়ানো ঠিক হবে না। ভারতে আরবিআই চার দফায় ১৯০ বেসিস পয়েন্ট সুদ (রেপো রেট, যে হারে তারা ব্যাঙ্কগুলিকে ধার দেয়) বাড়িয়েছে। গত তিন দফায় ৫০ বেসিস পয়েন্ট করে।
রফতানিকারীরাও চাইছেন, ব্যবসায়ীদের সমস্যা, আর্থিক বৃদ্ধি-সহ সমস্ত দিকগুলি ভেবে যেন সুদ নিয়ে সিদ্ধান্ত হয়। ইঞ্জিনিয়ারিং এক্সপোর্টস প্রোমোশন কাউন্সিল ইন্ডিয়ার চেয়ারম্যান অরুণ গারোদিয়া বলেন, “সুদ বাড়ায় রফতানি পণ্যের দাম বেড়েছে। প্রতিযোগিতায় পিছোচ্ছে ভারত। সমস্যায় ছোট সংস্থাগুলি। আশা করি ভেবেচিন্তে এগোবে আরবিআই।’’
অর্থনীতিবিদ অভিরূপ সরকারের দাবি, ‘‘বর্ধিত সুদ চাহিদা কমিয়ে পণ্যের দাম কমায় ঠিকই। কিন্তু ভারতে মূল্যবৃদ্ধির কারণ জোগানের অভাবে। সেই ব্যবস্থা না করে সুদ বাড়ালে ধাক্কা খাবে আর্থিক বৃদ্ধি। তা ঘটছেও।’’ তবে পটনা আইআইটির অর্থনীতির অধ্যাপক রাজেন্দ্র পরামানিকের বক্তব্য, “মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে দুশ্চিন্তা কাটেনি। ভারতের মতো উন্নয়নশীল দেশে তা মাথা তুললে চট করে নামায় না। কারণ, ঋণনীতির পদক্ষেপের সুফল পেতে সমস্যার মুখে পড়তে হয়। তাই এখনই আরবিআইয়ের পক্ষে সুদের হার বৃদ্ধিতে রাশ টানা কতটা সম্ভব সন্দেহ আছে।’’