—প্রতীকী ছবি।
জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধির আশঙ্কা পিছু ছাড়েনি এখনও। রফতানি বাণিজ্যও নড়বড়ে। তবু ভারতের মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদন বা জিডিপি বৃদ্ধির রথের চাকায় গতি বহাল থাকার ইঙ্গিত দিল এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্ক (এডিবি)। গত ডিসেম্বরে তারা বলেছিল, চলতি অর্থবর্ষে এ দেশের বৃদ্ধির হার ছুঁতে পারে ৬.৭%। বৃহস্পতিবার জানাল, সেই পূর্বাভাস বাড়িয়ে করা হয়েছে ৭%। যা সম্ভব হবে দু’টি কারণে। এক সরকারি-বেসরকারি লগ্নি। দুই, ক্রেতাদের বাড়তে থাকা চাহিদা। ভারতকে এশীয় প্রশান্তমহাসাগরীয় অঞ্চলের আর্থিক বৃদ্ধির গুরুত্বপূর্ণ এঞ্জিন হিসেবেও ব্যাখ্যা করেছে এডিবি।
তবে কিছু অপ্রত্যাশিত ঝুঁকি সম্পর্কে এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট আউটলুক রিপোর্টে সাবাধানও করেছে তারা। যেমন, বিশ্ব বাজারে আচমকা জোগান ধাক্কা খেলে অশোধিত তেলের দাম বেড়ে যাবে। যার প্রভাব পড়বে দেশের জ্বালানির দরে। প্রত্যাশার বিপরীতে হেঁটে দেশ স্বাভাবিক বৃষ্টিপাত না পেলে গত বছরের মতোই ভুগতে পারে কৃষি উৎপাদন। রিপোর্টে গোটা এশীয় প্রশান্তমহাসাগরীয় অঞ্চলের নিরিখেই স্পষ্ট বলা হয়েছে, নীতি নির্ধারকদের সতর্ক থাকতে হবে। কারণ জোগান-শৃঙ্খলে সঙ্কট, সুদ কমানো বা আবহাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা, চিনে আবাসনের দুর্বল বাজার-সহ অজস্র ঝুঁকি রয়ে গিয়েছে। এই অঞ্চলের উন্নয়নশীল দেশগুলির ক্ষেত্রে ৪.৯% আর্থিক বৃদ্ধির পূর্বাভাস দিয়েছে তারা।
সম্প্রতি চলতি অর্থবর্ষে ভারতে বৃদ্ধির ৭% পূর্বাভাসই দেওয়া হয়েছে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের তরফে। তবে তারাও বলেছে, প্রত্যাশা তৈরি হয়েছে স্বাভাবিক বর্ষা, মূল্যবৃদ্ধির পড়তি হার বহাল রাখতে পারা এবং কল-কারখানায় উৎপাদন ও পরিষেবা ক্ষেত্রে ব্যবসা বৃদ্ধির ধারাবাহিক গতি বজায় থাকা সম্ভব ধরে নিয়ে। আশা করা হচ্ছে, কৃষি উৎপাদন বাড়বে, উন্নতি হবে রফতানি বাণিজ্যের, কারখানা তার উৎপাদনশীলতা বাড়াতে পারবে। কিন্তু সংশ্লিষ্ট মহলের বক্তব্য, এই প্রত্যাশার পুরোটাই অনেকগুলি ‘যদি’-র উপর নির্ভর করছে। আর সেটাই বাড়াচ্ছে আশঙ্কা।
রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক চলতি অর্থবর্ষের ত্রৈমাসিকগুলিতে মূল্যবৃদ্ধির পূর্বাভাস কমিয়েছে। মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে আশার বার্তা দিয়েছে এডিবি-ও। বলেছে, বিশ্ব অর্থনীতির প্রবণতার সঙ্গে তাল মিলিয়েই দামের চাপ কমতে থাকবে এ দেশে। তবে এই অর্থবর্ষে রফতানি বাণিজ্য তুলনায় ঝিমিয়ে থাকতে পারে। কারণ, উন্নত দেশগুলির অর্থনীতি শ্লথ হয়েছে। ঠিক যে কারণে প্রত্যক্ষ বিদেশি লগ্নির স্বল্প মেয়াদে ধাক্কা খাওয়ার আশঙ্কা। এডিবি-র ধারণা, দেশীয় চাহিদা মাথা তোলায় রফতানিকে ছাপিয়ে যেতে পারে আমদানি। আগামী অর্থবর্ষে পরিস্থিতির উন্নতি হবে। তাদের অনুমান, ২০২৫-২৬ আর্থিক বছরে ভারতের বৃদ্ধি ৭.২% ছোঁবে
ভারতে এডিবি-র কান্ট্রি ডিরেক্টর মিয়ো ওকা বলছেন, বিশ্ব বাজারে সঙ্কট সত্ত্বেও ভারত দ্রুততম বৃদ্ধির অন্যতম অর্থনীতি হওয়ার শিরোপা ধরে রেখেছে মজবুত চাহিদা এবং সহায়ক নীতির দরুন।