— প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
বিস্কুট থেকে নুডলসের মতো দৈনন্দিন জীবনযাপনে প্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্যের বিক্রি বেড়েছে বটে। তবে দেশে সার্বিক ভাবে সেগুলির বিক্রি বৃদ্ধির হারে ব্যবসার ছন্দে না ফেরার ইঙ্গিত যে এখনও স্পষ্ট, তা-ই ধরা পড়ল সমীক্ষায়।
উপদেষ্টা সংস্থা নিয়েলসেন আইকিউ-এর রিপোর্ট বলেছে, বহু দিন ধরে চাহিদার নিরিখে পিছিয়ে থাকা গ্রাম অনেকখানি দূরত্ব ঘুচিয়েছে শহরের সঙ্গে। কারণ, সেখানকার বাসিন্দারা আগের থেকে বেশি কিনছেন রোজকার ব্যবহারের ভোগ্যপণ্যগুলি। কিন্তু তার আর একটা কারণ, শহরাঞ্চলে এমন পণ্যের বিক্রি বৃদ্ধির হার কমে যাওয়া। বিশেষত ছোট ছোট দোকানে। যার জেরে সার্বিক ভাবে ধাক্কা খেয়েছে এই ব্যবসার বৃদ্ধির গতি। সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, চড়া মূল্যবৃদ্ধির হার যে ভোগ্যপণ্য বাজারের পিছু ছাড়েনি তা ফের বোঝা গেল। অর্থনীতি দ্রুত গতিতে ঘুরে দাঁড়ালে সব রকম কেনাকাটায় তার ছাপ পড়ার কথা। কিন্তু অত্যাবশ্যক পণ্যেই যদি তা না পড়ে, তবে না হলেও চলে এমন পণ্যের চাহিদা বাড়বে কী করে!
বস্তুত এর আগেই পরিসংখ্যানে দেখা গিয়েছে, চড়া মূল্যবৃদ্ধির জেরে বিশেষত নিম্ন ও মধ্যবিত্ত ক্রেতাদের অনেকে অতিমারির পরেও কেনাকাটায় কাটছাঁট করে চলেছেন। অত্যাবশ্যক বা দৈনন্দিন জীবনে প্রয়োজনীয় নয়, এমন পণ্যকে চাহিদার তালিকা থেকে বাদ দিচ্ছেন। আর জরুরি জিনিসগুলির ক্ষেত্রে ঝুঁকছেন ছোট প্যাকেটের দিকে। কাঁচামালের মূল্যবৃদ্ধি সামলাতে ভোগ্যপণ্য সংস্থাগুলিও এক সময় দাম এক রেখে মোড়ক ছোট করার কৌশল নিয়েছিল।
নিয়েলসেন-এর সমীক্ষায় প্রকাশ, গত অক্টোবর-ডিসেম্বরে গ্রামীণ বাজারে স্বল্পমেয়াদি ভোগপণ্যগুলির বিক্রি বেড়েছে। কিন্তু দেশে সার্বিক ভাবে বিক্রি বৃদ্ধির গতি কমে হয়েছে ৬.৪%। জুলাই-সেপ্টেম্বরে ছিল ৮.৬%। কারণ শহরে বিক্রি বৃদ্ধির হার কমেছে। বড় বাজারের তুলনায় তা কম বিকিয়েছে ছোট দোকানে। মূলত সাধারণ নিম্ন ও মধ্যবিত্ত ক্রেতারা যেখান থেকে কেনেন।
রিপোর্ট বলছে, গ্রামে বিক্রি বৃদ্ধির অন্যতম কারণ বিস্কুট, নুডলস-এর মতো জিনিসের দামের গড়ে ০.৪% কমে যাওয়া। যা গত দু’বছরের মধ্যে প্রথম ঘটেছে। ম্যারিকো, ব্রিটানিয়া ইন্ডাস্ট্রিজ় ইত্যাদি সংস্থা কাঁচামাল সস্তা হওয়ায় এবং প্রতিযোগিতায় টক্কর নিতে দাম কমায় তাদের তৈরি জিনিসের। ডাবর ইন্ডিয়াও জানিয়েছে, তাদের গ্রামীণ বাজারের ব্যবসা শহরাঞ্চলকে পিছনে ফেলেছে। হিন্দুস্তান ইউনিলিভার, পেপসি ইন্ডিয়ার সহযোগী সংস্থা বরুণ বেভারেজ়েস, আদানি উইলমারের মতো সংস্থাগুলির ব্যবসা গত ত্রৈমাসিকে ছিল মিশ্র। সমীক্ষায় আশা, গ্রামীণ বাজার পুনরুজ্জীবনে সরকারের পদক্ষেপের ফলে সার্বিক ভাবে ভোগ্যপণ্যের ব্যবসা এ বছর (২০২৪) ৪.৫% থেকে ৬.৫% হারে বাড়বে।