Online Gambling

গেমিংয়ে আগ্রহ বেশি রাজ্যে

অনলাইন গেমিং সংস্থাগুলির সংগঠন স্কিল অনলাইন গেমস ইনস্টিটিউট-এর (সোগি) তথ্য বলছে, দেশে এক জন খেলোয়াড় গড়ে যত ঘণ্টা এই গেম খেলেন, পশ্চিমবঙ্গে তা ২৫% বেশি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ জুন ২০২৪ ০৬:৪৬
Share:

—প্রতীকী চিত্র।

বাজি ধরে অনলাইনে গেম খেলার প্রবণতা বাড়ছে দেশে সর্বত্র। এ রাজ্যে তার বৃদ্ধির হার ছাপিয়ে গিয়েছে জাতীয় গড়কেও। অনলাইন গেমিং সংস্থাগুলির সংগঠন স্কিল অনলাইন গেমস ইনস্টিটিউট-এর (সোগি) তথ্য বলছে, দেশে এক জন খেলোয়াড় গড়ে যত ঘণ্টা এই গেম খেলেন, পশ্চিমবঙ্গে তা ২৫% বেশি। এই খেলার বাড়বাড়ন্তের কথা মানলেও, দেশে এতে যে হারে জিএসটি চাপানো হয় এবং পুরো বাজির উপরে কর বসে, তা নিয়ে আপত্তি তুলে কেন্দ্রের কাছে দরবার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সংগঠনটি।

Advertisement

প্রসঙ্গত, নেটে বাজি রেখে তাস, দাবা-সহ আরও কিছু খেলা হয়। তাসের মধ্যে আবার রামি, পোকার, ব্রিজ উল্লেখযোগ্য। কেন্দ্র ইতিমধ্যেই এই ধরনের খেলার উপরে সর্বোচ্চ হারে জিএসটি চাপিয়েছে। পাশাপাশি, বাজির পুরো টাকার উপরেই করের হিসাব করা হচ্ছে। জিএসটি পরিষদের আসন্ন বৈঠকেও বিষয়টি নিয়ে আলোচনার সম্ভাবনা রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে সোগির সভাপতি অমৃত কিরণ সিংহ জানান, “সম্প্রতি অনলাইন খেলায় জিএসটি ১৮% থেকে বাড়িয়ে ২৮% করা হয়েছে। আগে খেলা থেকে সংস্থাগুলির যে আয় হত, তার উপরেই জিএসটি বসত। নতুন ব্যবস্থায় বাজির মোট টাকার ভিত্তিতে কর হিসাব হচ্ছে। অথচ বাস্তব ঘটনা হল, বাজির টাকা সংস্থার আয় নয়। খেলার পরিকাঠামো ব্যবহারের জন্য খেলোয়াড়েরা আয়োজক সংস্থাকে যে টাকা দেন, সেটাই তার আয়ের উৎস। তাই এ নিয়ে কেন্দ্রের সঙ্গে শীঘ্রই আলোচনায় বসব।’’

বস্তুত, অনলাইনের খেলাগুলি কার্যত এক ধরনের জুয়া। তবে তা আইনসিদ্ধ। ওই খেলার সাধারণ মানুষের আগ্রহ কমাতে করের হার এবং তা হিসাবের নীতি বদলেছে সরকার। তবে সোগির বক্তব্য, করের হার বাড়িয়ে মানুষকে বিরত করা যাবে না। যেহেতু অনলাইনে গেমিং তথ্যপ্রযুক্তি ভিত্তিক, তাই ভারতে খেলার সুযোগ না থাকলেও, খেলোয়াড়েরা এখানে বসে অন্য যে কোনও দেশেই তা খেলতে পারেন।

Advertisement

সিংহ জানান, “বিশ্বে অনলাইন গেমিংয়ের ২৫% রয়েছে চিনের দখলে এবং ২৩% আমেরিকার। মোট বাজির অঙ্ক বছরে ১৫,০০০ কোটি ডলার (প্রায় ১২.৫৩ লক্ষ কোটি টাকা)। ভারতে এই খেলা শুরু হয় বছর পাঁচেক আগে। বর্তমানে এই বাজারের মাত্র ১% রয়েছে এ দেশের দখলে। কিন্তু তাতেই এখানে খোলোয়ারের সংখ্যা ছুঁয়েছে ৫০ কোটি। বাজির পরিমাণ বছরে ৩৫০ কোটি ডলার (প্রায় ৩০,০০০ কোটি টাকা)। কর্মসংস্থান হয়েছে ২ লক্ষ।’’ তাঁর দাবি, অতিরিক্ত কর এবং অতি-নিয়ন্ত্রণের যাঁতাকলে না পড়লে বিশ্বে নেট গেমিংয়ের ৫% আসবে ভারতের দখলে।

আর এ ক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গের ভূমিকা রয়েছে বলে মত সোগির। দেশে ৪০০ অনলাইন গেমিং সংস্থা রয়েছে। রাজ্যে খেলায় অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা ৪ কোটিতে ঠেকেছে বলে জানিয়ে সিংহের দাবি, ‘‘এতে অংশগ্রহণ করে যাতে কারও লোকসান মাত্রা না ছাড়ায়, করের হার বাড়িয়ে সেই ব্যবস্থার কথা ভাবা অবাস্তব। বরং তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমেই খেলার সময় বেঁধে দেওয়া-সহ আরও কিছু ব্যবস্থা চালু করা যেতে পারে।’’ সেই সঙ্গে খুব শীঘ্রই অনলাইন গেমিং সংস্থাগুলির সমস্যা ও সম্ভাবনাগুলি নিয়ে তাঁরা কেন্দ্রের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন বলেও জানিয়েছেন সিংহ। দেশে এই ক্ষেত্রের নানা দিক নিয়ে সমীক্ষার পরিকল্পনা করেছে সোগি। এতে তারা সাহায্য নেবে আইআইটি, আইআইএম এবং ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিটি অব জুরিডিক্যাল সায়েন্সেসের মতো প্রতিষ্ঠানগুলির।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement