অর্থ প্রতিমন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর। ফাইল চিত্র।
গত অর্থবর্ষে ভারতের অর্থনীতি ৭.৩% সঙ্কুচিত হয়েছে। মঙ্গলবার যাকে গত চার দশকের ‘অন্ধকারতম বছর’ বলে দাবি করে মোদী সরকারের সমালোচনা করেছেন প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী তথা কংগ্রেস নেতা পি চিদম্বরম। আর বুধবারই পাল্টা আক্রমণ ধেয়ে এল কেন্দ্র তথা বিজেপির তরফে। বিবৃতিতে অর্থ প্রতিমন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুরের তোপ, মূল প্রসঙ্গের বাইরে গিয়ে কেন্দ্রকে আক্রমণ করছেন চিদম্বরম। কেন্দ্রের সংস্কারমূলক পদক্ষেপের জেরে দ্রুত ঘুরে দাঁড়াচ্ছে অর্থনীতি। গত বছর ফ্রান্স, আমেরিকা, জার্মানি, ব্রিটেন, ইটালির মতো অর্থনীতিও যে সঙ্কুচিত হয়েছে, তা কি প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী জানেন না?
এই দাবিতে অবশ্য চিঁড়ে ভেজেনি। বরং উঠে এসেছে নতুন একাধিক প্রশ্ন ও সমালোচনা। কেন্দ্রকে বিঁধে প্রাক্তন মুখ্য আর্থিক উপদেষ্টা কৌশিক বসু টুইটে লিখেছেন, ‘‘২০২০-২১ অর্থবর্ষের বৃদ্ধির নিরিখে ভারত (৭.৩% সঙ্কোচন) ১৯৪টি দেশের মধ্যে ১৪২তম।... যদি কেউ বলেন কোভিডের জন্য এমন অবস্থা সব দেশেরই হয়েছে, তবে তাঁদেরকে আমার পরামর্শ, নতুন করে স্কুল-নোট পড়ে ক্রমতালিকার অর্থ জানুন।’’
সোমবার জিডিপির পরিসংখ্যান প্রকাশের পর থেকেই সরকারের উদ্দেশে আক্রমণ শানাচ্ছে বিরোধীরা। চিদম্বরমের বক্তব্য, কেন্দ্রের ভুল নীতির জন্য অধিকাংশ ভারতীয়ই দু’বছর আগের চেয়ে দরিদ্র হয়েছেন। ঠাকুরের অবশ্য দাবি, কেন্দ্রের বিভিন্ন পদক্ষেপে ভর করে প্রথম ত্রৈমাসিকে ২৪.৪% সঙ্কোচনের থেকে উন্নতি করে চতুর্থ ত্রৈমাসিকে ১.৬% বৃদ্ধিতে পৌঁছেছে দেশ। তিনি বলেন, ‘‘আপনি (চিদম্বরম) যখন ভারতীয় উদ্যোগপতি, ছোট-মাঝারি সংস্থার ক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন, তখনই বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মূল্যায়ন সংস্থা চলতি অর্থবর্ষে ১২.৫% বৃদ্ধির পূর্বাভাস করেছে।’’
এই প্রসঙ্গেই অনেকেই বলছেন, করোনার দ্বিতীয় ঢেউ আসার পরে বিভিন্ন মূল্যায়ন সংস্থা আদতে বৃদ্ধির পূর্বাভাস ছাঁটাই করেছে। আর অনুরাগ পড়ে রয়েছেন পুরনো পূর্বাভাসে। অনেকে আবার মনে করাচ্ছেন, নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়, রঘুরাম রাজন, কৌশিক বসুর মতো বিশেষজ্ঞেরা মানুষের হাতে নগদ দিয়ে ক্রয়ক্ষমতা বাড়ানোর পরামর্শ দিলেও কেন্দ্র তোয়াক্কা করেনি। সেটা করলে হয়তো সঙ্কোচন এতটা গভীর হত না।