গৌতম আদানি। —ফাইল চিত্র।
অন্ধ্রপ্রদেশের বিদ্যুৎ নিয়ন্ত্রক ২০১৯ সালে রাজ্য সরকারকে জানিয়ে দিয়েছিল যে, আপাতত সৌর বিদ্যুতের কোনও প্রয়োজন নেই। এর দু’বছর পরে ২০২১ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর সোলার এনার্জি কর্পোরেশন অব ইন্ডিয়া (এসইসিআই) অন্ধ্রপ্রদেশ সরকারের কাছে তাদের থেকে বিদ্যুৎ কেনার জন্য আবেদন জানায়। নিয়ন্ত্রকের পরামর্শ অমান্য করে সেই আর্জি মেনেও নেয় তৎকালীন জগন্মোহন রেড্ডি সরকার। ঘটনাচক্রে চুক্তি অনুযায়ী, আদানি গ্রিন এনার্জির থেকে কেনা বিদ্যুৎই রাজ্যকে সরবরাহ করার কথা এসইসিআই-এর। এক রিপোর্টে এমনই দাবি করেছে সংবাদ সংস্থা রয়টার্স।
আমেরিকার আদালতে শিল্পপতি গৌতম আদানি এবং আরও সাত জনের বিরুদ্ধে যে মামলা চলছে, এটি তার অন্যতম। অভিযোগ, এই ধরনের সমস্ত প্রকল্পের জন্য তাদের দেশ থেকে পুঁজি সংগ্রহ করেছে আদানি গোষ্ঠী। একই সঙ্গে ২২০০ কোটি টাকা ঘুষ দিয়েছে বিভিন্ন রাজ্যের সরকারি আধিকারিকদের। আদানিরা বরাবরই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। আজ কংগ্রেসের কে সি বেণুগোপালের দাবি, আদানি কাণ্ডে কেন সেবি চেয়ারপার্সন মাধবী পুরী বুচকে দায়বদ্ধ করা হচ্ছে না, এ ব্যাপারে সংসদে নির্দিষ্ট প্রশ্ন করেছিলেন তাঁরা। কিন্তু অর্থমন্ত্রীর এই প্রশ্ন এড়িয়ে যাওয়ায় স্পষ্ট যে, সরকার আদানিকে বাঁচাতে চাইছে।
রয়টার্সের দাবি, ২০২১ সালের আর্জিতে এসইসিআই মূল বিদ্যুৎ সরবরাহকারী সংস্থার উল্লেখ করেনি। কিন্তু সৌর বিদ্যুৎ কেনার জন্য তাদের যে মাত্র দু’টি সংস্থার সঙ্গে চুক্তি রয়েছে এবং সে দু’টির মধ্যে আদানি গ্রিন বৃহৎ, তা আগে থেকেই জানা ছিল।
রিপোর্টে দাবি, এসইসিআই-এর আর্জির মাত্র এক দিনের মধ্যে নীতিগত সম্মতি জানায় অন্ধ্রপ্রদেশ মন্ত্রিসভা। ২০২১ সালের ১ ডিসেম্বর রাজ্য ও এসইসিআই-এর মধ্যে ৩৯০০ কোটি টাকার চুক্তি হয়। নথি অনুযায়ী সেই বিদ্যুতের ৯৭% সরবরাহ করার কথা আদানি গ্রিন। সংবাদ সংস্থার বক্তব্য, বিদ্যুৎ বিক্রির আবেদন থেকে শুরু করে চুক্তি— গোটা ঘটনাক্রম মাত্র ৫৭ দিনের। প্রাক্তন রাজ্য বিদ্যুৎ নিয়ন্ত্রক এবং বিদ্যুৎ ক্ষেত্রের এক জন আইনি বিশেষজ্ঞের বক্তব্য, ৭০০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ চুক্তি চূড়ান্ত করার ক্ষেত্রে এই মেয়াদ ‘অস্বাভাবিক’ রকম কম। অর্থ দফতরের একটি রিপোর্টে রাজ্য সরকারকে পরামর্শ দিয়ে বলা হয়েছিল, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সৌর বিদ্যুতের দাম কমতে পারে। ফলে চুক্তির জন্য আরও কিছুটা অপেক্ষা করা উচিত রাজ্যের।